দুর্নীতির কারণে গণতন্ত্রে সংকট তৈরি হচ্ছে: টিআই
২৯ জানুয়ারি ২০১৯দুর্নীতি নিয়ন্ত্রণে বিশ্বের ব্যর্থতা গণতন্ত্রে সংকট তৈরিতে ভূমিকা রাখছে বলে মন্তব্য করেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বা টিআই৷ ২০১৮ সালের‘দুর্নীতির ধারণা সূচক'প্রতিবেদনে এই মন্তব্য করে বার্লিনভিত্তিক এই সংগঠন৷
‘‘সারা বিশ্বের অনেক গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান হুমকির মুখে থাকায় নেতাদের স্বৈরাচারী কিংবা পপুলিস্ট মনোভাবের কারণে - নাগরিকদের অধিকার রক্ষা ও ‘চেক অ্যান্ড ব্যালেন্স' বাড়াতে আমাদের আরো কাজ করতে হবে,'' বলেন টিআই-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্যাট্রিসিয়া মোরেইরা৷
‘দুর্নীতির ধারণা সূচক'-এ সরকারি খাতে দুর্নীতির ধারণার বিষয় তুলে ধরে টিআই৷ সূচক তৈরিতে বিশ্বব্যাংক, ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরাম, ইকোনমিস্ট ইন্টেলিজেন্স ইউনিটসহ ১৩টি প্রতিষ্ঠানের তথ্য ব্যবহার করা হয়৷
২০১৮ সালের প্রতিবেদনে ১৮০টি দেশের সূচক তৈরি করা হয়েছে৷ এতে দেখা যাচ্ছে, বিশ্বের সবচেয়ে কম দুর্নীতিগ্রস্ত দেশ ডেনমার্ক৷ এই তালিকায় ক্রমান্বয়ে পরের এগারটিদেশ হচ্ছে: নিউজিল্যান্ড, ফিনল্যান্ড, সিঙ্গাপুর, সুইডেন, সুইজারল্যান্ড, নরওয়ে, নেদারল্যান্ডস, ক্যানাডা, লুক্সেমবার্গ, জার্মানি ও ব্রিটেন৷
টিআই-এর হিসেবে বিশ্বের সবচেয়ে দুর্নীতিগ্রস্ত দেশ হচ্ছে সোমালিয়া৷ তার চেয়ে একধাপ এগিয়ে আছে সিরিয়া ও দক্ষিণ সুদান৷
এবারের সূচকে বাংলাদেশের অবনতি হয়েছে৷ গতবার যেখানে বাংলাদেশ ১৪৩ নম্বরে ছিল, এবার সেটা হয়েছে ১৪৯৷
একটি দেশের গণতন্ত্রের মাত্রা ও দুর্নীতির মধ্যে কোনো সংযোগ আছে কিনা, তা খতিয়ে দেখেছে টিআই৷ এক্ষেত্রে যে দেশগুলো ১০০-র মধ্যে গড়ে ৭৫ স্কোর করেছে সেগুলোতে পূর্ণ গণতন্ত্র আছে বলে ধরে নেয়া হয়েছে৷ আর যে দেশগুলো গড় ৪৯ স্কোর করেছে সেগুলোর গণতন্ত্র ত্রুটিপূর্ণ বলে মনে করছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল৷
এছাড়া যেসব দেশের সরকারে গণতন্ত্রের সঙ্গে স্বৈরাচারের মিশ্রন ঘটেছে, তাদের স্কোর হচ্ছে গড়ে ৩৫৷ আর স্বৈরাচারী দেশ হচ্ছে সেগুলো, যাদের গড় স্কোর ৩০৷
টিআই বলছে, দুর্নীতি ও গণতন্ত্র বিবেচনায় তুরস্ক ও হাঙ্গেরির স্কোর অনেক কমে গেছে৷ ঐ দুই দেশের প্রেসিডেন্ট রেচেপ তাইয়্যিপ এর্দোয়ান ও ভিক্টর অর্বানের স্বৈরাচারী মনোভাবের কারণে এমন হয়েছে বলে মনে করছে সংস্থাটি৷
এছাড়া ব্রাজিল ও যুক্তরাষ্ট্রকে ‘যাদের নজরে রাখতে হবে' - এই ক্যাটাগরিতে রেখেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল৷ মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিভিন্ন নীতি ও ব্রাজিলের নতুন প্রেসিডেন্ট হিসেবে কট্টর ডানপন্থি নেতা জাইয়া বলসোনারোর শপথ গ্রহণের কারণে দেশ দুটি এই অবস্থায় পৌঁছেছে বলে মনে করছে টিআই৷
আর্থার সুলিভান/জেডএইচ