দুর্লভ টিয়া পাখির সন্ধান
৮ জুলাই ২০১৩হলুদাভ সবুজ বর্ণের এই টিয়াকে গত বছরই সবচেয়ে রহস্যজনক পাঁচটি পাখির তালিকার শীর্ষে রেখেছে ‘স্মিথসোনিয়ান’ ম্যাগাজিন৷ ১৯১২ থেকে ১৯৭৯ – এই ৬৭ বছরের মধ্যে বিশ্বের কোথাও এ পাখি দেখা যায়নি৷ গত একশ বছরে সর্বশেষ দেখা পাওয়া পাঁচটির মধ্যে দুটি ছিল মৃত৷ তবে একেবারে দেখা না পেলেও পাখিবিজ্ঞানীরা ধারণা করছিলেন সবমিলিয়ে ৫০ থেকে ২৫০টি পাখি এখনো থাকতে পারে৷ কিন্তু সে তো অনুমান৷ অবশ্য সে অনুমান ঠিক হলেও পাখিগুলো যে দিনে দিনে বিলুপ্ত হয়ে যাবে, তাতে আর বিস্ময়ের কী আছে!
সে কারণেই অস্ট্রেলিয়ার প্রকৃতিপ্রেমী ফটোগ্রাফার জন ইয়ং যখন নিজে গিয়ে ভারি সুন্দর জীবন্ত কিছু টিয়া পাখির ছবি এবং ভিডিও দেখালেন, কুইন্সল্যান্ড মিউজিয়ামের সবাই খুব অবাক হয়েছিলেন৷ ছবি আর ভিডিও দেখে পাখিবিশেষজ্ঞরা মানছেন, টিয়াগুলো যে এখনো অস্ট্রেলিয়াতেই দিব্যি বেঁচে আছে, তা সত্যি৷ কিন্তু জন ইয়ং সন্ধান পেলে আর পাখিবিশেষজ্ঞরা জানলেই তো হবে না৷ অস্ট্রেলিয়ার বন্য প্রাণী সংরক্ষণ সংস্থা সিএসআইআরও-কেও জানাতে হবে সব তথ্য৷ কিন্তু জন ইয়ং তা কাউকে জানাতে চান না!
কেন জানাবেন না? প্রকৃতিপ্রেমী ফটোগ্রাফার জানিয়েছেন, পাখিগুলো খুঁজে বের করতে গিয়ে তাঁর অনেক মূল্যবান সময় ব্যয় হয়েছে৷ সুতরাং সময় এবং শ্রমের অপচয় তিনি করবেন না৷ জন ইয়ং চান বেসরকারি অনুদান, যা দিয়ে তিনি নিজেই পাখিগুলোকে বাঁচিয়ে রাখার চেষ্টা করতে পারবেন৷ সাংবাদিকরা জানতে চেয়েছিলেন, এ দায়িত্ব সিএসআইআরও-কে দিতে সমস্যা কোথায়? প্রশ্ন শুনে জন ইয়ং ভীষণ বিরক্ত, জবাবে জানিয়েছেন, সিএসআইআরও জানলে সে খবর দেশ-বিদেশের অনেক মানুষই জেনে যাবে, দুর্লভ পাখি দেখতে রাতের আঁধারেও সেখানে ছুটে যাবে শত শত মানুষ এবং পাখিগুলোকে তাহলে আর রক্ষা করা যাবেনা৷
কিন্তু রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান চাইলে তথ্য গোপন রাখবেন কী করে তিনি? জন ইয়ং দৃঢ়প্রতিজ্ঞ৷ টিয়া পাখি রক্ষায় মরিয়া মানুষটি শুধু একটা কথাই বললেন, ‘‘পাখিগুলোকে বাঁচাতে দরকার হলে আমি জেলে যাবো৷''
দুর্লভ পাখিকে বাঁচাতে জেলে যেতেও প্রস্তুত এমন মানুষ ক'জন আছে, বলুন? এমন মানুষও কি ‘দুর্লভ' নয়?
এসিবি/ডিজি (এএফপি)