বাংলাদেশে ভয়ের সংস্কৃতি
২২ সেপ্টেম্বর ২০১৫ক্রসফায়ার নিয়ে ডয়চে ভেলের সঙ্গে সাক্ষাৎকারের এক পর্যায়ে তাঁকে গত বছর ঘটে যাওয়া একটি ঘটনার কথা স্মরণ করিয়ে দেয়ায় এই মন্তব্য করেন নূর খান৷
২০১৪ সালের ১৫ মে তাঁকে অপহরণের চেষ্টা হয়েছিল বলে সে সময় অভিযোগ করেছিলেন নূর খান ও তাঁর মানবাধিকার সংগঠন আইন ও সালিশ কেন্দ্র৷ অপহরণ চেষ্টার সপ্তাহখানেক আগে থেকে গুম-অপহরণ নিয়ে গণমাধ্যমে কথা না বলতে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পরিচয়ে অজ্ঞাতনামা এক ব্যক্তি তাঁকে সতর্ক করে আসছিল বলেও জানিয়েছিলেন নূর খান৷
ডিডাব্লিউর সঙ্গে সাক্ষাৎকারের শুরুতে ক্রসফায়ারের সমালোচনা করে মন্তব্য করার পর গত বছরের ঘটনার প্রসঙ্গ তুললে তিনি বলেন, ‘‘ঐ ঘটনার পর এখনও বলার ক্ষেত্রে যথেষ্ট সতর্ক থাকতে হচ্ছে আমাকে৷ যেমন যে কথাগুলো বললাম এটা আরও কঠিনভাবে, আরও শক্তভাবে বলার সুযোগ আমার ছিল৷ কারণ প্রতিটি কথার পেছনে যে দালিলিক প্রমাণ থাকার দরকার সেগুলো আমার কাছে থাকার পরেও আমি কিন্তু অনেক ক্ষেত্রেই অনেক সাবধানতার সঙ্গে কথা বলতে চাই৷ একটা প্রচ্ছন্ন ভয়ের সংস্কৃতি কিন্তু বহমান৷ সেটা শুধু আমার ক্ষেত্রে নয়, সারাদেশের ক্ষেত্রেই৷''
২০০৪ সাল থেকে ক্রসফায়ারের ঘটনা শুরু হওয়ার পর এখন পর্যন্ত দুই হাজার দুশো জনেরও বেশি মানুষের প্রাণ গেছে বলে জানান নূর খান৷ এছাড়া চলতি বছরের শুরু থেকে পহেলা সেপ্টেম্বর পর্যন্ত নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে নিহতের সংখ্যা ১৩৫৷
নূর খান মনে করেন, সহজে ও অল্প সময়ে জনপ্রিয়তা পেতে এবং বিরোধী রাজনৈতিক নেতাকর্মী ও বিরোধী মতের ব্যক্তিদের দমাতে সরকারগুলো ক্রসফায়ারের সহায়তা নিয়ে থাকে৷
তিনি বলেন, অতীতে এরশাদ শিকদার ও মুকিম গাজীর মতো আসামিদের পুলিশ গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় এনে তাদের শাস্তির ব্যবস্থা করেছে৷ ফলে আইনি প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করা, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নিশ্চিত করা এবং আইন-শৃঙ্খলারক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার না করে তাঁদের পেশাদারিত্ব বাড়ানো গেলে ক্রসফায়ার ছাড়াই সন্ত্রাসীদের দমন করা সম্ভব, বলে মনে করেন বাংলাদেশের অন্যতম শীর্ষস্থানীয় এই মানবাধিকার কর্মী৷
সাক্ষাৎকার: জাহিদুল হক
সম্পাদনা: সঞ্জীব বর্মন
আপনার মধ্যেও কি এ ধরনের ভয় কাজ করে? জানাতে পারেন নীচে মন্তব্যের ঘরে৷