দেশে গণতন্ত্র নাই, কূটনীতি নতজানু: জিএম কাদের
১৫ জুলাই ২০২২‘ডয়চে ভেলে খালেদ মুহিউদ্দীন জানতে চায়’ ইউটিউব টকশোতে এবারের আলোচনার বিষয় ছিল ‘জাতীয় পার্টি ও আগামী নির্বাচন'৷ এবারের আলোচনায় অংশ নিয়েছিলেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের৷
তিনি মনে করেন, ২০১৮ সালের নির্বাচনে কারো করার কিছু ছিলো না৷ সরকার এবং প্রশাসনের প্রভাব ছিলো সেই নির্বাচনে৷ ২০২৩ সালেও অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অসম্ভব বলে মনে করেন তিনি৷
তার মতে, সবাই মিলে বসে একটা সমাধানে আসা প্রয়োজন৷ জিএম কাদের জানান, ২০১৮ সালের নির্বাচনে যেহেতু বিএনপিও অংশ নিয়েছিলো তাই তাদের আশা ছিলো নির্বাচন কিছুটা হলেও সুষ্ঠু হবে৷ কিন্তু ওই নির্বাচন নিয়ে কেউ সন্তুষ্ট হয়নি বলে জানান তিনি৷ বলেন, ‘‘নির্বাচনে সরকার ও প্রশাসন প্রভাব বিস্তার করেছিলো৷''
জিএম কাদেরের কাছে বিএনপি এবং আওয়ামী লীগ একই রকম দল৷ তার মতে, ‘‘কার্যক্রমের দিক দিয়ে তাদের কোন পার্থক্য নেই৷ দুর্নীতি, বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ড দুই দলই করেছে৷ জাতীয় পার্টি টিকে থাকার সংগ্রাম করছে৷''
তিনি বলেন, ‘‘টিকে থাকতে হলে শক্তি সঞ্চয় করতে হবে৷’’
তিনি মনে করেন, জাতীয় পার্টির আমলে সবচেয়ে কম দুর্নীতি হয়েছে এবং সবচেয়ে বেশি দুর্নীতি এবং দলীয়করণ হয়েছে বর্তমান সরকারের আমলে৷ বিচার বিভাগও সরকারের অধীনে বলে উল্লেখ করেন তিনি৷
২০২৩ সালে আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে নির্বাচনে যাবেন কিনা এ প্রসঙ্গে জিএম কাদের বলেন, তার দলের শীর্ষ নীতি নির্ধারকদের সাথে কথা বলে নির্বাচনের আগে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে তার দল৷
জিএম কাদের বলেন, ‘‘বর্তমানে সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন করা কঠিন৷ কারণ মানুষের মধ্যে ভয়-ভীতি সৃষ্টি করা হয়েছে৷ বিরোধী দলকে হিংসাত্মকভাবে মোকাবেলা করা হচ্ছে৷ স্পেস না দিলে লক্ষ লক্ষ মানুষ আন্দোলনে এলেও লাভ হবে না৷ ২০১৪ র পর সেই পরিস্থিতি ধ্বংস হয়ে গেছে৷’’
২০২৩ এর পর এই রাজনীতি থাকবে কিনা সেটা নিয়েও সন্দেহ থেকে যায় বলে জানান তিনি৷
দেশে গণতন্ত্র নেই, এমনকি রাজনীতি নেই বলেও উল্লেখ করেন তিনি৷ বলেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতেই সব ক্ষমতা কেন্দ্রীভূত৷’’
দেশে এখন এককেন্দ্রিক শাসন চলছে বলে মনে করেন জিএম কাদের৷
তিনি মনে করেন, ‘‘কেবল ভারত বা যুক্তরাষ্ট্র নয়, বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতি হল নতজানুমূলক৷ যে দেশ যেটা যেভাবে চাচ্ছে সেটা মেনে নিচ্ছে সরকার৷ কথা বলার সময় একটা বললে কাজের ক্ষেত্রে সেটা করছে না৷''
তিনি বলেন, ‘‘আমরা এবারের বাজেটে ১৬ লাখ কোটি টাকা ঋণের উল্লেখ আছে৷ যারা ঋণ দিচ্ছে, তাদের শর্ত মেনে কাজ করা হচ্ছে৷’’
জিএম কাদের বলেন, ‘‘সুশাসনের অভাবে দিক থেকে শীর্ষ বাংলাদেশ৷’’
তিনি মনে করেন, ‘‘আগামী নির্বাচনের পর দু একটি দল থাকবে না বা হয়ত নাম থাকবে, কিছু নেতা থাকবে, শেকড় থাকবে না৷ যে হেরে যাবে তারা রাজনীতিতে আর টিকবে না৷’’
হেরে যাওয়া দলের সাথে জাতীয় পার্টি থাকলে তারাও বিলীন হয়ে যাবে বলে মনে করেন জিএম কাদের৷ সরকার যেকোনভাবে জেতার চেষ্টা করবে বলেও উল্লেখ করেন তিনি৷
আলোচনার সবশেষে তিনি বলেন, বর্তমান কাঠামোতে সুষ্ঠু নির্বাচন করা কঠিন৷
এপিবি/এআই