অনুপস্থিতিতেই বিচার
২৮ মে ২০১৩বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার বড় ছেলে এবং বিএনপি-র সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান প্রবাসে আছেন ২০০৮ সাল থেকে৷ সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় গ্রেপ্তার হওয়ার পর, আদালতের নির্দেশে প্যারোলে মুক্তি নিয়ে চিকিত্সার জন্য দেশের বাইরে যান তিনি৷ এই মুহূর্তে তিনি লন্ডনে আছেন৷ আদালত অর্থ পাচার মামলায় তাঁর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরওয়ানা জারি করে ইন্টারপোলের মাধ্যমে তাঁকে দেশে ফেরত আনার উদ্যোগ নিয়েছে৷
বিএনপি-র চেয়াপার্সনের উপদেষ্টা শামসুজ্জামান দুদু ডয়চে ভেলেকে জানান, যত বাধাই থাকুক খুব শিগগিরই তারেক রহমান দেশে ফিরবেন৷ আর তাঁর বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ আনা হয়েছে, তা তিনি দেশে ফিরে আইনগতভাবেই মোকাবেলা করবেন৷ এছাড়া দেশে ফিরে তিনি দলের দায়িত্ব নেবেন, দলকে এগিয়ে নিয়ে যাবেন৷ তিনি বলেন, লন্ডনে তারেক রহমানের এক বক্তব্যেই সরকার আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়েছে৷ তিনি দেশে এলে বোঝা যাবে সরকার কতটা সামলাতে পারে৷ তিনি দাবি করেন, আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণ করেই তারেক রহমান দেশের বাইরে গেছেন এবং বৈধভাবেই লন্ডনে অবস্থান করছেন৷
এদিকে বিএনপি-র ভাইস চেয়ারম্যান ও তারেকের আইনজীবী ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন ডয়চে ভেলেক বলেন, তারেক রহমানের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরওয়ানা জারিতে যথাযথ আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হয়নি৷ তাঁকে গ্রেপ্তারে ইন্টারপোলে যে আবেদন করা হয়েছে তারও কোনো আইনগত ভিত্তি নেই৷ তিনি বলেন, তারেক রহমান দেশে ফিরে আইনি লড়াই চালাবেন৷ তাঁর বিরুদ্ধে যেসব মামলা রয়েছে তা সবই জামিনযোগ্য৷ তিনি ২০০৮ সালে দেশের সর্বোচ্চ আদালতের অনুমতি নিয়ে বিদেশে গেছেন৷ সেখানে তিনি অবশ্যই দেশের কথা ভাবেন৷ তারই প্রতিফলন হলো লন্ডনে ২০শে মে তারেক রহমানের দেয়া বক্তব্য৷
বিএনপি-র চেয়ারপার্সনের আরেকজন উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট আহমেদ আজম খান ডয়চে ভেলেকে জানান, তিনি নিয়মিত তারেক রহমানের চিকিত্সার খোঁজ খবর রাখছেন৷ তাঁর চিকিত্সা এখনো অব্যাহত আছে৷ তাঁকে সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময়ে আটক করে যে নির্যাতন চালান হয়েছে, তাতে তিনি কখনোই শতভাগ সুস্থ হতে পারেন কিনা সন্দেহ৷ এখনো তাঁর সোজা হয়ে হাঁটতে সমস্যা হয়৷ তবে স্বাভাবিক জীবনযাপনের মতো সুস্থ হলেই তিনি দেশে ফিরবেন৷ কারণ দেশের জন্য দলের জন্য তাঁর মন পড়ে আছে৷
আওয়ামী লীগ নেতা সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত বলেছেন, আদালত তারেক রহমান দেশে ফিরিয়ে আনতে চায়৷ তাঁর দেশে ফিরতে কোনো বাধা নেই৷ তিনি দেশে ফিরে আইনগতভাবে তাঁর মামলা মোকাবিলা করতে পারেন৷ আর ফিরে না আসলে আইনগতভাবেই তাঁকে ফিরিয়ে আনা হবে৷ তিনি বলেন, তারেক রহমান কোনো ইস্যু নয়৷ তবে হাওয়া ভবনের দুর্নীতির খবর মানুষ জানে৷ দেশের মানুষ আর হাওয়া ভবন দেখতে চায় না৷
দুদকের আইনজীবী মোশাররফ হোসেন কাজল ডয়চে ভেলেক জানান, তারেক রহমান নিজে থেকে ফিরে আসলে ভালো৷ তাঁকে ফেরত আনা না গেলে আইন অনুযায়ী তাঁর অনুপস্থিতিইে অর্থ পাচার মামলার বিচার হবে৷