প্রতিবাদ কলা
৭ মার্চ ২০১২বাংলায় বলা চলতে পারে, প্রতিবাদ কলা৷ চীনা শিল্পী আই ওয়েওয়ে'র একটি ইনস্টলেশন হল সূর্যমুখী ফুলের দশ কোটি বীজ দিয়ে তৈরি৷ বীজগুলো আসল নয়, চীনেমাটির৷ লন্ডনের টেটে গ্যালারি এবার আশি লাখ বীজের একটি ইনস্টলেশন কিনেছে৷
৫৪ বছর বয়সী আই ওয়েওয়ে চীনের খ্যাততম ভিন্নমতাবলম্বীদের মধ্যে গণ্য৷ ইউরোপ-অ্যামেরিকায় তার শিল্পকর্মের বহু প্রদর্শনী হয়েছে৷ ২০০৮ সালে বেইজিং অলিম্পিকের প্রখ্যাত পাখির বাসা স্টেডিয়ামের ডিজাইনেও তার অবদান ছিল৷ অপরদিকে বিভিন্ন সামাজিক আন্দোলনে তার সক্রিয় অংশগ্রহণের কারণে আই ওয়েওয়ে কর্তৃপক্ষের কুনজরে পড়েন এবং গতবছর তাকে প্রায় তিনমাসের জন্য আটক রাখা হয়৷
২০১০ সালে আই ওয়েওয়ে তার সূর্যমুখীর বীজ ইনস্টলেশনটি নিয়ে লন্ডনে আসেন৷ চীনা শিল্পীদের হাতে গড়া এই বীজগুলি টেট মডার্ন সংগ্রহশালায় প্রায় এক হাজার বর্গমিটার জায়গা জুড়ে মেঝেতে ছড়িয়ে রাখা হয়৷ গোড়ায় দর্শকদের তার ওপর দিয়ে হেঁটে যাওয়া, এমনকি শোয়া-বসারও কথা ছিল৷ এবার টেট গ্যালারি সেই দশ কোটি বীজের আশি লাখ কিনেছে – তবে কোন মূল্যে, সেটা জানায়নি৷ এ'টুকু বলা যায় যে, গতবছর সথবি'র নিলামে ১০০ কিলো সূর্যমুখীর বীজ বিক্রি হয়েছিল সাড়ে পাঁচ লাখ ডলারে৷
কিন্তু আই ওয়েওয়ে'র বীজগুলোর এই উচ্চমূল্য কেন? টেট বলছে, সূর্যমুখীর বীজ হল চীনাদের প্রিয় খাবার, তারা স্ন্যাক হিসেবে রাস্তায় কিনে খায়৷ চীনেবাদামের মতো এ'ও বন্ধুত্ব, ভালোবাসার প্রতীক৷ অপরদিকে এই বীজগুলোকে দেখলে প্রশ্ন ওঠে, এগুলো কি শুধু সমষ্টি, না এককও বটে? চীনের সাংস্কৃতিক বিপ্লব তো সকলকে সমান করে দিতে চেয়েছিল৷ তখন চেয়ারম্যান মাওকে বলা হত সূর্য৷ আর চীনের জনগণকে দেখানো হত সূর্যমুখী ফুল হিসেব৷ ফুলগুলো যেন সূর্যের দিকে তাকিয়ে রয়েছে৷
প্রতিবেদক: অরুণ শঙ্কর চৌধুরী
সম্পাদনা: সঞ্জীব বর্মন