‘ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত নয়’
৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৫ডয়চে ভেলের বাংলা বিভাগের ফেসবুক পাতায় পাঠকদের কাছে প্রশ্ন করা হয়, নাস্তিক শব্দটি শুনলে আপনার কী মনে হয়? এর উত্তরেই ওপরের মন্তব্যটি করেছেন ফেসবুকবন্ধু মেহের আলী৷ আর পাঠক জিল্লুর রহমান এর উত্তরে ডয়চে ভেলের কাছে পাল্টা প্রশ্ন রেখেছেন, ‘‘আগে একটা কথার জবাব দেন, একজন আপনার টাকায় খায়, আপনার টাকায় পরে, আপনার টাকায় চলে; কিন্তু আপনার কথা শোনে না৷ তার প্রতি আপনার মনোভাব কী?
আমাদের পাঠক তৌহিদুর রহমান বেশ পরিষ্কারভাবে তাঁর মতামত তুলে ধরেছেন৷ তাঁর মতে, ‘‘ধর্মনিরপেক্ষতার অর্থ রাষ্ট্র নিরপেক্ষ হবে, ব্যক্তি না৷ মুসলিম তার ধর্ম পালন করবে, হিন্দু তারটা, কেউ যদি ধর্মে অবিশ্বাস করে – এটাও তার একান্ত ব্যক্তিগত ব্যাপার৷ রাষ্ট্র বা পৃথিবী তো কারও পৈত্রিক সম্পত্তি না যে, সংখ্যাগরিষ্ঠতার জোরে একটা ধর্ম চাপিয়ে দেয়া হবে৷ কেউ ভুল ধর্ম অনুসরণ করলে বা না করলে তার শাস্তি সৃষ্টিকর্তাই দিবেন, মানুষের এত দুশ্চিন্তা কেন?''
জামিল আহমেদ বলছেন, ‘‘প্রকৃত অর্থে নাস্তিক বলে কোনো কিছু নেই, অন্তত বাংলাদেশে তো নেই-ই৷ যে বা যারাই আজকাল নাস্তিকতার দাবি করে, মূলত এরা ইসলাম বিদ্বেষী৷ নাস্তিকতার আঁড়ালে এরা ইসলাম বিরোধীতায় লিপ্ত৷''
‘‘কে নাস্তিক হবে আর কে অনাস্তিক হবে এটা তার নিজের ব্যাপার৷ কারণ আমরা আস্তিক হয়ে নাস্তিকের আনুভূতিতে কোনো দিন আঘাত করি না, কারণ ওটা তার নিজের ‘পার্সোনাল' বিষয়৷ কিন্ত কিছু নাস্তিক যেভাবে, বিশেষ করে অন্য ধর্ম বাদ দিয়ে ইসলাম নিয়ে এমন ভাষায় গালাগাল ও উসকানিমূলক কথা বলে, তাদের আপনি কোন ধরের নাস্তিক বলবেন ?'' নাস্তিক শব্দটি শুনলে বন্ধু আলমগীর কবিরের এই কথাটাই মনে হয়৷
ডয়চে ভেলের পাঠক রকিবুল ইসলাম নাস্তিক শব্দটি সম্পর্কে শুধু নিজের মতামত জানাননি, বাংলাদেশের জনগণ এ বিষয়ে কী ভাবেন – সে সম্পর্কে তাঁর নিজের ধারণার কথাও লিখেছেন আমাদের ফেসবুকে৷ তাঁর মন্তব্য, ‘‘নাস্তিক বলতে তাকে বোঝায় যে কিনা সৃষ্টিকর্তায় বিশ্বাস করে না৷ কিন্তু বাংলাদেশের নাস্তিকরা বিশেষভাবে পারদর্শী অন্য কারো বিশ্বাসকে আক্রমণ করায়, বিশেষ করে ইসলামকে আক্রমণ করায়৷ তাদের বোকামি ভাবনা অন্যদের মাঝে ছড়িয়ে দিতে চায়, অথচ তারা নিজেদেরকে খুব জানেওয়ালা মনে করে৷''
নাস্তিক শব্দটা শুনলে মো. রাকিবের শুধু মনে হয়, ‘‘নাস্তিকমুক্ত বাংলাদেশ চাই৷''
অমিক কুমার মনে করেন, নাস্তিকতা মানুষের নিজস্ব স্বকীয়তা৷ কেউ ঈশ্বরকে বিশ্বাস করুক আর না করুক এটা তার নিজস্ব ব্যাপার৷ তবে একজন নাস্তিক ব্যক্তি যদি ঈশ্বরে বিশ্বাসী লোকদের মধ্যে তা প্রচার করে, তাহলে তা এক ধরণের অপরাধের সামিল বলে অমিত কুমার মনে করেন৷ তাছাড়া একজন নাস্তিক ব্যক্তি কেন ঢালাওভাবে সলককে বলে বেড়াবে যে নাস্তিক, এর কারণও অমিত খুঁজে পান না৷
এছাড়া আরো অনেক পাঠক জানিয়েছেন তাঁদের মন্তব্য৷ তাঁদের সেসব মন্তব্য পড়তে ক্লিক করুন এখানে৷
সংকলন: নুরুননাহার সাত্তার
সম্পাদনা: দেবারতি গুহ