ধর্মীয় সম্প্রীতি বাড়াতে কতিপয় উদ্যোগ
বিভিন্ন ধর্মের অনুসারীদের মধ্যে সম্প্রীতি বাড়ানোর লক্ষ্যে নানা উদ্যোগ নেয়া হয়ে থাকে৷ ছবিঘরে থাকছে বিস্তারিত৷
জাতিসংঘের উদ্যোগ
প্রতিবছর ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহে ‘বিশ্ব আন্তঃধর্মীয় সম্প্রীতি সপ্তাহ’ উদযাপন করে জাতিসংঘ৷ ধর্ম যা-ই হোক, সব মানুষের মধ্যে সম্প্রীতি বজায় রাখা এর উদ্দেশ্য৷ এই সময় রাষ্ট্রগুলোকে গির্জা, মসজিদ, সিনাগগ, মন্দির ও অন্যান্য উপাসনালয়ে আন্তঃধর্মীয় সম্প্রীতি ও শুভেচ্ছার বার্তা প্রচারে উৎসাহিত করে জাতিসংঘ৷ জর্ডানের রাজা দ্বিতীয় আব্দুল্লাহ ২০১০ সালে এমন সপ্তাহ পালনের প্রস্তাব দিয়েছিলেন৷
পোপ ও আল-আজহারের ইমামের উদ্যোগ
মিশরের আল-আজহারের গ্র্যান্ড ইমাম শেখ আহমেদ আল-তায়েব ও পোপ ফ্রান্সিস ২০১৯ সালে ‘বিশ্ব শান্তি ও একসাথে বসবাসের জন্য মানব ভ্রাতৃত্বের নথি’তে সই করেন৷ এই নথির উপর ভিত্তি করে ২০২০ সালে জাতিসংঘ ৪ ফেব্রুয়ারিকে ‘আন্তর্জাতিক মানব ভ্রাতৃত্ব দিবস’ ঘোষণা করে৷ এদিন মানব ভ্রাতৃত্ব স্থাপনে গুরুত্বপূর্ণ অবদানের জন্য বিশ্বের যে কোনো ব্যক্তি ও গোষ্ঠীকে ‘জায়েদ অ্যাওয়ার্ড ফর হিউম্যান ফ্র্যাটার্নিটি’ দেয়া হয়৷
সৌদি বাদশাহর উদ্যোগ
২০০৮ সালে সৌদি বাদশাহ আব্দুল্লাহর উদ্যোগে স্পেনের মাদ্রিদে একটি আন্তঃধর্মীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছিল৷ মুসলিম, ইহুদি ও খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীদের মধ্যে সম্প্রীতি বাড়ানোর লক্ষ্যে এই সম্মেলন আয়োজন করা হয়েছিল৷ বৌদ্ধ, হিন্দু ও শিখদেরও সম্মেলনে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন সৌদি বাদশাহ৷
পোপ ও সৌদি বাদশাহর উদ্যোগ
২০১২ সালে ভিয়েনায় ‘কিং আব্দুল্লাহ বিন আব্দুলআজিজ ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফর ইন্টাররিলিজিয়াস অ্যান্ড ইন্টারকালচারাল ডায়ালগ’ বা কেএআইসিআইআইডি প্রতিষ্ঠিত হয়৷ এটি একটি আন্তঃসরকারি সংস্থা, যা সংঘাত প্রতিরোধ ও সমাধানের জন্য আন্তঃধর্মীয় ও আন্তঃসাংস্কৃতিক সংলাপকে উৎসাহিত করে৷ ২০০৭ সালে পোপ ষোড়শ বেনেডিক্ট ও সৌদি বাদশাহ আব্দুল্লাহর বৈঠকের পর এই সংগঠন তৈরি করা হয়৷
বাংলাদেশের ধর্ম মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগ
‘ধর্মীয় সম্প্রীতি ও সচেতনতা বৃদ্ধিকরণ’ নামে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের একটি প্রকল্প আছে৷ এর আওতায় বিভিন্ন জেলায় আন্তঃধর্মীয় সংলাপের আয়োজন করা হয়৷ এছাড়া গতবছর জুলাইতে বছরব্যাপী একটি কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়৷ এর আওতায় ওয়েব ড্রামা সিরিজ, টিভি কমার্শিয়াল, নাটক, টক শো, মিউজিক ভিডিও ও ডকুমেন্টারি তৈরির পরিকল্পনা করা হয়৷ এছাড়া সম্প্রীতি ও সচেতনতামূলক বার্তা-সমৃদ্ধ লিফলেট, পোস্টার, বিজ্ঞাপন তৈরিরও পরিকল্পনা করা হয়৷
বাংলাদেশের ধর্ম মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগ
‘ধর্মীয় সম্প্রীতি ও সচেতনতা বৃদ্ধিকরণ’ নামে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের একটি প্রকল্প আছে৷ এর আওতায় বিভিন্ন জেলায় আন্তঃধর্মীয় সংলাপের আয়োজন করা হয়৷ এছাড়া গতবছর জুলাইতে বছরব্যাপী একটি কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়৷ এর আওতায় ওয়েব ড্রামা সিরিজ, টিভি কমার্শিয়াল, নাটক, টক শো, মিউজিক ভিডিও ও ডকুমেন্টারি তৈরির পরিকল্পনা করা হয়৷ এছাড়া সম্প্রীতি ও সচেতনতামূলক বার্তা-সমৃদ্ধ লিফলেট, পোস্টার, বিজ্ঞাপন তৈরিরও পরিকল্পনা করা হয়৷
আন্তর্জাতিক সংস্থার আয়োজন
বিভিন্ন ধর্মের মধ্যে শান্তি ছড়িয়ে দিতে ১৯৭০ সালে ‘রিলিজিয়নস ফর পিস’ আরএফপি সংগঠন যাত্রা শুরু করে৷ এর সদরদপ্তর নিউইয়র্কে৷ সংগঠনটি নিজেদের বিশ্বের সবচেয়ে বড় আন্তঃধর্মীয় বেসরকারি সংস্থা মনে করে৷ জার্মান সরকারের আর্থিক সহায়তায় ২০১৯ সাল থেকে জার্মানির লিন্ডাও শহরে একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলন আয়োজন করছে আরএফপি৷
জার্মানিতে আন্তঃধর্মীয় সম্মেলন
প্রতি দুই বছরে একবার জার্মানির লাইপসিশে বিভিন্ন ধর্মের শীর্ষ নেতৃবৃন্দদের নিয়ে একটি সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়৷ এতে প্রোটেস্ট্যান্ট, ক্যাথলিক, রাশিয়ান অর্থোডক্স চার্চ, ইহুদি, মুসলিম, বৌদ্ধ ইত্যাদি ধর্মের প্রতিনিধিরা অংশ নেন৷
বিভিন্ন ধর্মের শিক্ষার্থীদের মধ্যে কথার আদান-প্রদান
২০০২ সালে ইহুদি বন্ধু ও খ্রিস্টান এক কর্মীকে সঙ্গে নিয়ে ‘ইন্টারফেইথ ইয়ুথ কোর’ গঠন করেছিলেন এবু প্যাটেল নামের এক মুসলিম যুবক৷ লক্ষ্য ছিল, বিভিন্ন ধর্মের শিক্ষার্থীর মধ্যে কথা আদান-প্রদান করা৷ এছাড়া ক্ষুধার্তদের খাওয়ানো ও শিশুদের পড়াশোনা করানোর কাজগুলোও একসঙ্গে করতেন তারা৷ সংগঠনটি ‘ইন্টারফেইথ অ্যামেরিকা’ নাম ধারণ করে এখনও সক্রিয় আছে৷ তাদের লক্ষ্য, আন্তঃধর্মীয় সহযোগিতাকে স্বাভাবিক নিয়মে পরিণত করা৷