নূরদের গ্রেপ্তারের দাবিতে সেই নারীর অনশন
৯ অক্টোবর ২০২০ডয়চে ভেলের কন্টেন্ট পার্টনার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম জানায়, ধর্ষণের মামলা দায়েরের দুই সপ্তাহ পরেও কোনো আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়নি বলে বৃহস্পতিবার রাত ৮টার দিকে টিএসসির রাজু ভাস্কর্যের সামনে তিনি অনশন শুরু করেন৷ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ওই ছাত্রীর দাবির প্রতি সংহতি জানিয়ে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক বেনজির হোসেন নিশি, উপ-সাংস্কৃতিক সম্পাদক তিলোত্তমা শিকদার, উপ-গ্রন্থনা ও প্রকাশনা সম্পাদক এবং বাংলাদেশ-কুয়েত মৈত্রী হল সংসদের সভাপতি ফরিদা পারভিন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি ফারজানা নিপা, ইডেন কলেজ শাখা ছাত্রলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক জেরিন তাসনিম পূর্ণি এবং ছাত্রলীগ নেত্রী মহসুনা খাতুন মাইশা, মিতালী মণ্ডলও সেখানে অবস্থান নেন৷
গত ২১ ও ২৩ সেপ্টেম্বর রাজধানীর লালবাগ ও কোতোয়ালি থানায় ধর্ষণ, অপহরণ ও সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে চরিত্রহননের অভিযোগে নুরুল হক নুর ও তার পাঁচ সহযোগীর বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন এবং ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে দুটি মামলা করেন ওই ছাত্রী৷
এতদিনেও আসামিরা গ্রেপ্তার না হওয়ায় হতাশা ও ক্ষোভ প্রকাশ করে বৃহস্পতিবার রাতে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘‘আমি আজ খুবই অসহায়৷ শেষ পর্যন্ত ন্যায়বিচারের জন্য আমাকে অনশন কর্মসূচিতেও যেতে হলো৷’’
তিনি আরো বলেন, ‘‘ধর্ষকরা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়ালেও তাদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে না৷ মামলা তদন্তের স্বার্থে আমি একাধিকবার থানায় যোগাযোগ করেছি৷ তারা বলেছেন, আসামি ধরার চেষ্টা করা হচ্ছে৷’’
তার মতে, ‘‘পুলিশ চাইলে যে কোনো সময় আসামিদের গ্রেপ্তার করতে পারে৷’’ কিন্তু এতদিনেও কাউকে গ্রেপ্তার না করায় তার ধারণা, ‘‘পুলিশ প্রভাবিত৷ আসামিরা তো প্রভাবশালী বটেই৷ কোনো এক অজ্ঞাত কারণে বা কোনো অদৃশ্য শক্তির বলে আসামিরা গ্রেপ্তার হচ্ছে না৷’’
তার করা দুটি মামলার প্রথমটির প্রধান আসামি ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের স্নাতকোত্তর উত্তীর্ণ হাসান আল মামুন৷ মামলার পর তাকে ছাত্র অধিকার পরিষদের আহ্বায়কের দায়িত্বে থেকে সরিয়ে দেয়া হয়৷
ওই ছাত্রীর অভিযোগ, একই বিভাগে পড়া এবং ছাত্র অধিকার পরিষদের কাজে জড়িত থাকার কারণে হাসান আল মামুনের সঙ্গে তার ‘প্রেমের সম্পর্ক’ গড়ে ওঠে৷ এর সুযোগ নিয়ে মামুন চলতি বছরের ৩ জানুয়ারি লালবাগের বাসায় নিয়ে তাকে ‘ধর্ষণ' করেন৷
দ্বিতীয় মামলায় প্রধান আসামি ছাত্র অধিকার পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক নাজমুল হাসান সোহাগ৷
এছাড়া নুরুল হক নূরসহ সংগঠনটির যুগ্ম আহ্বায়ক সাইফুল ইসলাম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সহ-সভাপতি নাজমুল হুদা ও কর্মী আবদুল্লাহ হিল বাকিকে আসামি করা হয়৷
কোতোয়ালি থানার মামলার এজাহারে বলা হয়, ধর্ষণের ওই ঘটনার পর অসুস্থ হয়ে পড়লে নাজমুল হাসান সোহাগ ওই ছাত্রীকে হাসপাতালে ভর্তি করান৷ সুস্থ হওয়ার পর মামুনকে বিয়ের জন্য চাপ দেন ওই তরুণী৷ কিন্তু মামুন তাকে এড়িয়ে চলেন৷ ‘সহযোগিতার আশ্বাস’ দিয়ে এগিয়ে আসেন সোহাগ৷ মামুনের সঙ্গে দেখা করানোর কথা বলে তরুণীকে সদরঘাট হয়ে লঞ্চে করে চাঁদপুরে নিয়ে যান৷ কিন্তু চাঁদপুরে মামুনকে না পেয়ে ফেরার পথে সোহাগও লঞ্চে তরুণীকে ধর্ষণ করেন৷
নূরের বিরুদ্ধে অভিযোগ, ওই তরুণী প্রতিকারের আশায় তার সঙ্গে দেখা করলে প্রথমে ‘মীমাংসা’ করে দেওয়ার কথা দিলেও পরে ‘বাড়াবাড়ি করতে নিষেধ করে’ বাড়াবাড়ি করলে ‘অপপ্রচার চালিয়ে সম্মানহানি করার’ হুমকি দেন৷
বাকি তিন আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ, তারা নানাভাবে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে ওই তরুণীর বিরুদ্ধে কুৎসা রটিয়েছেন৷
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী মামলা করার পর মামলাকে ‘ষড়যন্ত্র’ দাবি করে বিক্ষোভ করে নুর-রাশেদদের নেতৃত্বাধীন ছাত্র অধিকার পরিষদ৷
এসিবি/জেডএইচ (বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম)