ধর্ষণের শিকারের চরিত্র নিয়ে প্রশ্ন করা যাবে না
৪ নভেম্বর ২০২২এছাড়া বিচার কাজে বিভিন্ন ডিজিটাল তথ্যকেও সাক্ষ্য হিসেবে উপস্থাপনের সুযোগ, এই আইনে যোগ করা হয়েছে৷
এসব বিধান যুক্ত করে বৃহস্পতিবার ‘এভিডেন্স অ্যাক্ট ১৮৭২ (অ্যামেন্ডমেন্ট) বিল, ২০২২' জাতীয় সংসদে পাস হয়৷
আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বিলটি পাসের জন্য সংসদে তোলেন৷ বিলের উপর দেওয়া জনমত যাচাই, বাছাই কমিটিতে প্রেরণ ও সংশোধনী প্রস্তাবগুলো নিষ্পত্তি করেন স্পিকার৷
নারী আন্দোলনের কর্মী এবং অধিকারকর্মীরা দীর্ঘদিন ধরে সাক্ষ্য আইন সংস্কারের দাবি জানিয়ে আসছিল৷ তারা বলছিল, এই আইনের কিছু ধারা নারীর প্রতি অবমাননাকর৷
সংসদে বিরোধী দলের বেশিরভাগ সদস্যই আইন পাসের আলোচনায় অংশ নিয়ে আইনটি সংশোধনের উদ্যোগ নেওয়ার প্রশংসা করেন৷ তবে ডিজিটাল তথ্যকে সাক্ষ্য হিসেবে গ্রহণের ধারা রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করতে ব্যবহার করা হতে পারে বলে আশঙ্কা করেন বিএনপির সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য রুমিন ফারহানা, যিনি নিজেও একজন আইনজীবী৷
এই সংশোধনী পাস হওয়ার ফলে বিদ্যমান সাক্ষ্য আইনের ১৫৫(৪) ধারা বাতিল হবে৷ এ ধারায় বলা হয়েছে, কোনো ব্যক্তি যখন ধর্ষণ কিংবা শ্লীলতাহানির চেষ্টার অভিযোগে অভিযুক্ত হন, তখন দেখানো যেতে পারে যে অভিযোগকারী সাধারণভাবে দুশ্চরিত্রা৷
বিলে ক্রস এক্সামিনেশন বা জেরার সময় প্রশ্ন করার ক্ষেত্রে নতুন বিধান যুক্ত করা হয়েছে৷ তাতে বলা হয়েছে, ধর্ষণ বা ধর্ষণচেষ্টা মামলার ভিকটিমকে তার নৈতিক চরিত্র বা অতীত যৌন আচরণ নিয়ে প্রশ্ন করা যাবে না৷ ন্যায়বিচারের স্বার্থে যদি আদালত মনে করে এই ধরনের প্রশ্ন করা প্রয়োজন, তাহলে আদালতের অনুমতি নিয়েই কেবল তা করা যাবে৷
মানবাধিকারকর্মী ও আইনজীবীরা দীর্ঘদিন ধরে সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক এই ঔপনিবেশিক আইনটি সংশোধনের দাবি জানিয়ে আসছিলেন৷ এছাড়া সাক্ষ্য আইনের বিভিন্ন ধারা সংশোধন ও নতুন ধারা যুক্ত করে মামলার বিচারে ডিজিটাল তথ্য-প্রমাণ উপস্থাপনেরও সুযোগ তৈরি করা হয়েছে৷
এতে বলা হয়েছে, কেউ যাতে ভুয়া বা জাল সাক্ষ্যপ্রমাণ ডিজিটাল মাধ্যমে হাজির করতে না পারে, আদালত যদি মনে করে যে কোথাও আপত্তিজনক কিছু আছে অথবা কেউ যদি আপত্তি তোলে, তাহলে ওই সাক্ষ্য-প্রমাণের ফরেনসিক পরীক্ষা করা যাবে৷
এনএস/জেডএইচ (বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম)