অধিকার হারাচ্ছে শিশুরা
২৮ ফেব্রুয়ারি ২০১২জাতিসংঘের শিশু কল্যাণ বিষয়ক সংস্থা ইউনিসেফ জানিয়েছে, নগরায়ণের কারণে শহরে বসবাসরত কয়েকশত মিলিয়ন শিশু অত্যাবশ্যকীয় সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে৷
জাতিসংঘের প্রতিবেদন অনুযায়ী, আগামী কয়েক বছরের মধ্যে জন্ম নেওয়া শিশুদের একটি বড় অংশ নগর এবং শহরে বেড়ে উঠবে৷ প্রত্যন্ত অঞ্চলের তুলনায় শহরই হবে শিশুদের ঠিকানা৷ কিন্তু সমস্যা হচ্ছে, নগরগুলো সরকারের সাধ্যের তুলনায় দ্রুত গতিতে বেড়ে উঠছে৷ আর প্রতি তিনজন নগরবাসীর একজন আবার থাকেন বস্তিতে৷
দ্রুত গতির এই নগরায়ণের ফলে মানুষের নিত্য প্রয়োজনীয় সুযোগ সুবিধা নিশ্চিত করা যাচ্ছে না৷ পরিকাঠামোগত সুবিধা দিতে ব্যর্থ হচ্ছে সরকার৷ ফলে গরিব মানুষদের জীবন আরো কঠিন হয়ে পড়ছে৷ সামান্য পানির আশায় তাদেরকে খরচ করতে হচ্ছে বাড়তি অর্থ৷
ইউনিসেফ মনে করে, নগর পরিকল্পনার সময় এখন শিশুদের প্রতি আরো বেশি গুরুত্ব দিতে হবে৷ বিশেষ করে শিশুদের স্কুলে পাঠানোর ব্যাপারে গুরুত্ব আরোপ করতে হবে৷ শিশুদেরকে যাতে অল্প বয়সেই জোর করে কাজে না পাঠানো হয় সেদিকেও গুরুত্ব প্রদানের আহ্বান জানিয়েছে ইউনিসেফ৷ সংস্থাটির নির্বাহী পরিচালক অ্যান্থনি লেক এই বিষয়ে বলেছেন, কয়েকশত মিলিয়ন শিশু এখন শহরের বস্তিতে বসবাস করছে৷ সেখানে অনেকেই নিত্য প্রয়োজনীয় সাধারণ সুযোগসুবিধাও পাচ্ছে না৷
এদিকে, জাতিসংঘের শিশু অধিকার সনদের ২০ বছর পূর্তি হলেও এখন পর্যন্ত শিশুদের পক্ষে এই অধিকারের দাবি জানানো কঠিনই রয়ে গেছে৷ তবে নতুন এক চুক্তিতে দেখা যাচ্ছে, শিশুরা এখন সরাসরি জাতিসংঘে তাদের অধিকারের বিষয়ে জানাতে পারবে৷ মঙ্গলবার সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় এসংক্রান্ত একটি চুক্তি স্বাক্ষর হতে যাচ্ছে, যেখানে এককভাবে যেকেউ অধিকারের দাবি জানাতে পারবে৷
জার্মানির পরিবারমন্ত্রী ক্রিস্টিনা শ্রোয়েডার এই বিষয়ে বলেন, জাতিসংঘের শিশু অধিকার বিষয়ক নীতিতে এককভাবে কারো অধিকারের দাবি জানানোর সুযোগ নেই৷ নতুন প্রটোকলে এই সমস্যাটির সুরাহা হচ্ছে বলে মনে করেন ক্রিস্টিনা৷ তিনি বলেন, এখন এই সমস্যাটি দূর করা হচ্ছে৷
বলাবাহুল্য, জার্মানি ২০০৯ সাল থেকে শিশুদের এককভাবে অধিকারের দাবি জানানোর পক্ষে কাজ করে আসছে৷ খুব দ্রুত এই বিষয়টি জাতিসংঘের সনদের অর্ন্তভুক্ত হওয়ায় সন্তুষ্ট জার্মান মন্ত্রী৷
প্রতিবেদন: আরাফাতুল ইসলাম
সম্পাদনা: আব্দুল্লাহ আল-ফারূক