নতুন বছরে জার্মানিতে আরও কড়া লকডাউন?
৩ ডিসেম্বর ২০২০জার্মানির চলমান আংশিক লকডাউন আসন্ন বড়দিন ও নববর্ষ উৎসবের সময় কিছুটা শিথিল করা হলেও কড়াকড়ির মেয়াদ নতুন বছর পর্যন্ত বাড়ানো হলো৷ বুধবার ফেডারেল ও রাজ্য স্তরের শীর্ষ নেতাদের আলোচনার পর বর্তমান বিধিনিয়ম কমপক্ষে ১০ই জানুয়ারি পর্যন্ত চালু রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে৷ এই সময়কালে করোনা মহামারির পরিস্থিতির উন্নতি না হলে আরও কড়া সিদ্ধান্তেরও পূর্বাভাষ দিয়েছেন নেতারা৷
গত ২রা নভেম্বর থেকে জার্মানিতে যে ‘লকডাউন লাইট’ শুরু হয়েছে, তার ফলে দৈনিক সংক্রমণের হার আর না বাড়লেও ধারাবাহিকভাবে কমারও কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না৷ সর্বশেষ হিসেব অনুযায়ী দিনে ২২,০০০-এরও বেশি মানুষ করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন৷ ‘হটস্পট’ হিসেবে চিহ্নিত দেশের কিছু অংশে স্থানীয় পর্যায় আরও কড়া পদক্ষেপ নিতে হচ্ছে৷ বার্লিনের মতো বড় শহরের হাসপাতালের আইসিইউ প্রায় ভরে গেছে৷ রবার্ট কখ ইনস্টিটিউট মাত্র ২৪ ঘণ্টার মধ্যে করোনা ভাইরাসের কারণে ৪৮৭ জন মানুষের মৃত্যুর খবর দিয়েছে, জার্মানির জন্য যা এক রেকর্ড৷
জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল ও রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীরা পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার পূর্বশর্ত হিসেবে এক লক্ষ্যমাত্রা বেঁধে দিয়েছেন৷ টানা সাত দিন ধরে দৈনিক সংক্রমণের হার প্রতি এক লাখ মানুষের মধ্যে পঞ্চাশের কাছাকাছি নেমে এলে তবেই কড়াকড়ি শিথিল করতে চান তাঁরা৷ বর্তমানে সেই গড় হার প্রায় ১৩৫৷ আগামী ৪ঠা জানুয়ারি ম্যার্কেল ও মুখ্যমন্ত্রীরা পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে পরবর্তী পদক্ষেপ সম্পর্কে সিদ্ধান্ত নিতে চান৷
আসন্ন বড়দিন ও নববর্ষ উৎসবের সময়ে করোনা পরিস্থিতির আরও অবনতির আশঙ্কা করছে কর্তৃপক্ষ৷ সে সময়ে অসংখ্য মানুষ বিশাল দূরত্ব পাড়ি দিয়ে প্রিয়জনদের সঙ্গে দেখা করতে যাবেন৷ সর্বোচ্চ দশ জন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের সমাবেশের অনুমতির ফলে করোনা সংক্রমণের হার আরও বাড়বে বলে ধরে নেওয়া হচ্ছে৷ বাভেরিয়ার মুখ্যমন্ত্রী মার্কুস স্যোডার বলেছেন, পরিস্থিতির অবনতি ঘটলে লকডাউনের বিধিনিয়ম আরও কড়া করতে হবে৷ তাঁর মতে, এখনো এমন সময় আসে নি৷ অন্য এক মুখ্যমন্ত্রী স্কুল, কিন্ডারগার্টেন বন্ধ রাখা ও দোকানবাজারের সম. কমিয়ে দেবার মতো পদক্ষেপের ইঙ্গিত দিয়েছেন৷
চ্যান্সেলর ম্যার্কেল বুধবারের আলোচনায় করোনার টিকা কর্মসূচি সম্পর্কে সরকারের প্রস্তুতি নিয়ে বক্তব্য রাখেন৷ তাঁর মতে, সবকিছু ঠিকমতো চললে ডিসেম্বর মাসের শেষেই জনসাধারণকে টিকা দেবার কাজ শুরু হবে৷
উল্লেখ্য, ইউরোপীয় ইউনিয়ন এখনো প্রথম টিকার জরুরি অনুমোদনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয় নি৷ তবে চলতি মাসেই সেই অনুমোদনের আশা করা হচ্ছে৷ জার্মানি টিকা বিতরণের অবকাঠামো প্রস্তুত রাখার কাজ করছে৷
ম্যার্কেল ও মুখ্যমন্ত্রীদের মধ্যে ঐকমত্যের অভাবের কারণে জার্মানি আরও কড়া পদক্ষেপ নিতে পারছে না৷ ম্যার্কেল ও স্যোডারের মতো নেতারা শুরু থেকেই আরও কড়া বিধিনিয়মের পক্ষে সওয়াল করলেও কয়েকজন মুখ্যমন্ত্রীর আপত্তির কারণে সেটা সম্ভব হয় নি৷
এসবি/কেএম (ডিপিএ, রয়টার্স)