নভেম্বরের শেষেই জার্মানিতে ‘ফ্রিডম ডে’?
১৯ অক্টোবর ২০২১করোনা মহামারি মোকাবিলার লক্ষ্যে ২০২০ সালের ২৮শে মার্চ জার্মান সংসদ গোটা দেশের জন্য জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছিল৷ ফেডারেল ও রাজ্য সরকারগুলির সেই বিশেষ ক্ষমতার মেয়াদ বেশ কয়েকবার বাড়ানো হয়েছে৷ দীর্ঘ প্রায় ১৯ মাস পর সেই মেয়াদ শেষ হচ্ছে৷ ২৫শে নভেম্বরের পর তার প্রয়োজনও ফুরিয়ে যাবে বলে মনে করছেন বিদায়ী সরকারের স্বাস্থ্যমন্ত্রী ইয়েন্স স্পান৷ তার মতে, জনসংখ্যার সিংহভাগ করোনা টিকা পেয়ে যাওয়ায় পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য আর জরুরি ক্ষমতার আর প্রয়োজন নেই৷ বদ্ধ জায়গায় মাস্ক পরা ও সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার মতো কিছু মৌলিক নিয়ম চালু রেখে বাকি সিদ্ধান্ত রাজ্য সরকার ও আঞ্চলিক প্রশাসনের উপর ছেড়ে দিলেই চলবে৷ তখন স্থানীয় অবস্থা অনুযায়ী প্রশাসন সিদ্ধান্ত নিতে পারবে৷
জার্মানির হাসপাতালগুলির সংগঠনও স্পানের প্রস্তাবের প্রতি সমর্থন জানিয়েছে৷ শীতের মাসগুলিতে করোনা সংক্রমণের হার বাড়ার পূর্বাভাস সত্ত্বেও বাড়তি চাপের আশঙ্কা করছে না এই সংগঠন৷ তবে রবার্ট কখ ইনস্টিটিউট করোনা টিকাপ্রাপ্তদের ঝুঁকি সম্পর্কে এখনো পুরোপুরি নিশ্চিত নয়৷ চিকিৎসকদের এক সংগঠনের প্রধান ঝুঁকি এড়াতে সারা দেশে কিছু ক্ষেত্রে শুধু করোনাটিকাপ্রাপ্ত ও করোনাজয়ীদের প্রবেশের অধিকারের পক্ষে সওয়াল করেছেন৷ সে ক্ষেত্রে মাস্ক পরা বা দূরত্ব বজায় রাখার প্রয়োজন থাকবে না৷ সামাজিক গণতন্ত্রী এসপিডি দলের স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ কার্ল লাউটারবাখ মনে করেন, সরকারের জরুরি ক্ষমতার মেয়াদ শেষ হলেও ঝুঁকি এড়াতে কিছু নিয়ম চালু থাকবে৷ কোনো রাজ্য সরকার মাস্ক পরার মতো নিয়ম প্রত্যাহারের বেপরোয়া সিদ্ধান্ত নেবে না৷
স্বাস্থ্যমন্ত্রী স্পানসহ একাধিক বিশেষজ্ঞ মহল এমন পরামর্শ দিলেও শেষ পর্যন্ত সংসদকেই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে হবে৷ সংসদ নির্বাচনের পর আগামী সপ্তাহে নতুন সদস্যরা প্রথমবার মিলিত হবেন এবং আনুষ্ঠানিকভাবে সংসদের কার্যক্রম শুরু করবেন৷ তবে বিদায়ী সরকার ও বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ মেনে নতুন সংসদও এই বিশেষ ক্ষমতার মেয়াদ বাড়াবে না বলে অনুমান করা হচ্ছে৷ বেশিরভাগ রাজনৈতিক দলও জরুরি অবস্থার মেয়াদ আরও বাড়ানোর প্রয়োজন দেখছে না৷ তবে ব্রিটেন বা ইউরোপের কয়েকটি দেশের মতো সব বিধিনিষেধ তুলে নিয়ে ‘ফ্রিডম ডে' ঘোষণা করার মতো পরিস্থিতি এখনো আসে নি বলে জার্মানিতে ঐকমত্য বজায় রয়েছে৷ শীতে বাড়তি সংক্রমণের ধাক্কা সামলে নিয়ে সম্ভবত আগামী বছর জার্মানি এমন সিদ্ধান্ত নিতে পারে বলে ধরে নেওয়া হচ্ছে৷ বিশেষ করে আরও বেশি মানুষকে করোনা টিকার আওতায় এনে এবং বিশেষ ঝুঁকিপূর্ণ মানুষকে বুস্টার ডোজ দিয়ে এমন পদক্ষেপ নেওয়া হতে পারে৷
এসবি/কেএম (ডিপিএ, রয়টার্স)