1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

নরওয়ের গ্রামে সুখ এনেছে বড় কাঁকড়া

২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২১

নরওয়ের উত্তরে প্রত্যন্ত অঞ্চলে বাস করা মানুষের জীবনে উন্নতি নিয়ে এসেছে কিং ক্র্যাব বা বড় কাঁকড়া৷ আয়ের উৎস না থাকায় একসময় গ্রাম বিক্রির বিজ্ঞাপন দিয়েছিলেন ব্যুগোয়নেসের বাসিন্দারা৷ কিন্তু এখন তারা সুখে আছেন৷

https://p.dw.com/p/3pmQo
ছবি: Imago/OceanPhoto

জার্মানির ডিয়র্ক হাইজভাগার প্রায় ১২ বছর ধরে নরওয়ের উত্তরে বাস করছেন৷ তিনি আর্কটিক সাগর পছন্দ করেন৷ রাশিয়া সীমান্তের কাছে দর্শনীয় স্থান দেখাতে পর্যটকদের নিয়ে যান তিনি৷  

কিং ক্র্যাব বা বড় কাঁকড়া দর্শনীয় বস্তুগুলির মধ্যে একটি৷ ট্যুর শুরুর একদিন আগে তিনি সাগরের ১৮০ মিটার গভীরে কাঁকড়া ধরার ফাঁদ পাতেন৷

পরের দিন সেই ফাঁদে অনেক কাঁকড়া ধরা পড়ে৷ সারা বিশ্বেই এটি এক মজাদার খাবার৷ কিন্তু পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর৷ খরগোশের মতোই এদের সংখ্যা দ্রুত বাড়ে৷

নরওয়ের উত্তরে আর্থিক সংকটে থাকা এলাকায় এসব কিং ক্র্যাব সুখের বার্তা নিয়ে এসেছে৷ যেমন ব্যুগোয়নেসের মতো প্রত্যন্ত এলাকায় অবস্থিত জেলেদের গ্রামে৷

১৯৮৯ সালে গ্রামবাসীরা তাদের গ্রাম বিক্রির জন্য বিজ্ঞাপন দিয়েছিলেন৷ কারণ আয়ের উৎস না থাকায় তরুণরা গ্রাম ছেড়ে চলে যাচ্ছিলেন৷

এখন পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে৷ সেখানে এখন থাকার হোটেল আর ছোট একটি রেস্তোরাঁও আছে৷

কিং ক্র্যাব বদলে দিলো নরওয়ের গ্রাম

জেলে লেইফ ইঙ্গেলে প্রথম ব্যুগোয়নেসের পানিতে বড় কাঁকড়ার দেখা পেয়েছিলেন৷ গত শতকের পঞ্চাশের দশকে সোভিয়েত গবেষকরা ব্যারেন্টস সাগরে কাঁকড়া ছেড়েছিলেন৷ কিন্তু নিজের জালে কিং ক্র্যাব পাওয়ার আগে বিষয়টি জানতেন না ইঙ্গেলে৷ তিনি বলেন, ‘‘প্রথম ধরা পড়া একেকটি কাঁকড়ার ওজন ছিল ১০-১২ কেজি৷ আমরা খুব অবাক হয়েছিলাম৷ কিন্তু কাঁকড়াগুলি না থাকলে শহরে আজ কোনো মাছ প্রক্রিয়াজাতের ব্যবস্থা থাকতনা৷ দুই-তিনটা ছাড়া জেলে নৌকাও থাকত না৷ আজ এখানে ১৫-১৬টা নৌকা আছে৷’’

কাঁকড়াগুলির উপস্থিতি জেলেদের জন্য সুখবর হলেও নরওয়ের পরিবেশবিদ ও বিজ্ঞানীদের জন্য সেটা চিন্তার বিষয়৷ কারণ কাঁকড়াগুলি প্রায় সবকিছু খেয়ে ফেলে, যা আশেপাশের ইকোসিস্টেমের জন্য হুমকি৷ ইদানিং ব্যুগোয়নেস থেকে আরও দক্ষিণেও এদের দেখা পাওয়া যাচ্ছে৷

নরওয়েজিয়ান ইনস্টিটিউট অফ মেরিন রিসার্চের ইয়ান সুন্ডেট বলেন, ‘‘আমরা গবেষণা করে দেখেছি যে, কাঁকড়াগুলি ১৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রার পানিতেও মানিয়ে নিতে পারে৷ তার মানে তারা ভূমধ্যসাগরেও থাকতে পারবে! যেখানেই এই কাঁকড়া যায় সেখানেই সাগরের প্রাণিজগতকে ধ্বংস করে৷ ঝিনুক, তারামাছের মতো কিছু প্রজাতি একেবারে হারিয়ে গেছে৷’’

কিং ক্র্যাব, যা মনস্টার ক্র্যাব নামেও পরিচিত, তাদের প্রাকৃতিক কোনো শত্রু নেই৷ এদের সংখ্যা নিয়ন্ত্রণে রাখতে নরওয়ের মৎস্যসম্পদ কর্তৃপক্ষ উদ্যোগ নিয়েছে৷

ডিয়র্ক হাইজভাগার তার অতিথিদের অল্প সময়ের মধ্যে যে খাবার দিতে পারছেন সেটা সাধারণত ইউরোপ, এশিয়ার অভিজাত রেস্টুরেন্টগুলোতে পাওয়া যায়৷ বছরে প্রায় দুই হাজার টন কিং ক্র্যাব রপ্তানি করে নরওয়ে৷

পর্যটক কিংবা স্থানীয় মানুষ, সবাই কাঁকড়া পছন্দ করেন৷ কর্তৃপক্ষকে ভারসাম্য বজায় রাখতে হচ্ছে, কারণ ঐ অঞ্চলে ব্যবসা টিকিয়ে রাখতে তারা কাঁকড়ার সংখ্যা ধরে রাখতে চায়৷ পাশাপাশি সর্বগ্রাসী কাঁকড়া যেন ছড়িয়ে পড়তে না পারে সেদিকেও খেয়াল রাখতে হচ্ছে৷

নরওয়ের উত্তরের বাসিন্দারা আশা করছেন, কাঁকড়ার লাভজনক ব্যবসা যেন অনেকদিন টিকে থাকে৷ ইতিমধ্যে তারা কাঁকড়ার একটি মনুমেন্ট তৈরি করেছেন৷

গুনার ক্যোনে/জেডএইচ

২০১৯ সালের মার্চের ছবিঘরটি দেখুন...

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

আরো সংবাদ দেখান