‘জীবনের নিরাপত্তা চাই'
২ মে ২০১৪‘মৌলিক অধিকার সুরক্ষা কমিটি'-র ব্যানারে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় রাজধানী ঢাকার তিনটি জায়গায় মোমবাতি জ্বালিয়ে মানববন্ধন করে এই দাবি জানান তাঁরা৷ মহাখালি, ধানমন্ডি সাতমসজিদ রোড এবং শাহবাগ এলাকায় এই মানববন্ধন ও প্রতিবাদ কর্মসূচির ডাক দেন শিরিন হক, ড. শাহদীন মালিক, অধ্যাপক সি আর আবারর, ব্যারিস্টার সারা হোসেন, ডা. জাফরউল্লাহ চৌধুরি, ড. বদিউল আলম মজুমদার, ড. শহীদুল আলম এবং ড. আসিফ নজরুলসহ সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা৷ তাঁদের আহ্বানে রাজধানীর সাধারণ মানুষও অংশ নেন এই প্রতিবাদ কর্মসূচিতে৷
আয়োজকদের একজন ড. বদিউল আলম মজুমদার ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘আমরা এখন আতঙ্কের মধ্যে আছি৷ কেউ বলতে পারে না, কে কখন অপহরণ বা গুমের শিকার হবেন৷ দেশ যেন এখন অপহরণ, গুম আর হত্যার জনপদে পরিণত হয়েছে৷ আর এর সঙ্গে আছে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর অপরাধ দমনের নামে ক্রসফায়ার৷''
তিনি বলেন, ‘‘নাগরিকদের জীবনের নিরাপত্তার দায়িত্ব রাষ্ট্র এবং সরকারের৷ এখানে ব্যর্থতার কোনো সুযোগ নেই৷ কিন্তু সরকার সেই দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হচ্ছে৷ তাই রাস্তায় নেমে নাগরিকদের নিরপত্তা চাওয়া ছাড়া আর কিছু করার নেই৷''
নাগরিকদের মৌলিক অধিকার সুরক্ষার জন্য সরকারকে জবাবদিহিতার আওতায় আনার কথা বলেন অরূপ রাহী৷ তিনি ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘ক্রসফায়ারের সব গল্পই এক৷ একই গল্প বার বার বলে ক্রসফায়ারের বিষয়টিকে অগ্রহণযোগ্য করে তোলা হয়েছে৷ অপরাধীর আইন অনুযায়ী বিচার হবে৷ কিন্তু আইনের বাইরে কারুর জীবন কেড়ে নেয়া যায় না৷ এটা আইনের শাসনের পরিপন্থি৷'' তিনি বলেন, ‘‘শুধু নারায়ণগঞ্জ নয়, সারা দেশে সাদা পোশাকে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযান বন্ধ করতে হবে৷ কাউকে আর আটক করে গোপন রাখা যাবে না৷ জানাতে হবে তাঁর পরিবারের সদস্যদের৷ এটা খুবই উদ্বেগজনক যে অপহরণ আর গুমের ঘটনার বড় একটি অংশ ঘটছে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের নামে৷''
ড. শাহদীন মালিক বলেন, ‘‘সংবিধান অনুযায়ী নাগরিকদের জীবনের নিরপত্তা দিতে হবে সরকারকে৷ আমরা অপহরণ, গুম আর দেখতে চাই না৷ আর অপহরণের পর লাশ উদ্ধার নয়, তাঁকে তাঁর পরিবারে কাছে ফিরিয়ে দিতে হবে৷'' তিনি বলেন, ‘‘এক অসহনীয় পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছে দেশ, একদিকে অপহরণ, গুম, হত্যা আর আরেক দিকে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর মানবাধিকার লঙ্ঘন৷ এ থেকে আমরা মুক্তি চাই৷''
মানববন্ধনে অংশ নেয়া সাধারণ মানুষ জানান যে, তাঁরা এখন অসহায় বোধ করছেন৷ কারণ নিরাপত্তার নিশ্চয়তা নেই৷ নিরাপত্তাহীনতা তাঁদের তাড়িয়ে বেড়ায়৷
নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা বলেন, ‘‘অপহরণ, গুম, হত্যা আর ক্রসফায়ারের সব ঘটনার জন্য স্বাধীন তদন্ত কমিশন করতে হবে৷ এর সঙ্গে জড়িতদের আনতে হবে আইনের আওতায়৷''