নাগর্নো-কারাবাখে আক্রান্ত গির্জা
৯ অক্টোবর ২০২০১২ দিন। যুদ্ধ থামার এখনো কোনো ইঙ্গিত নেই। বিতর্কিত নাগর্নো-কারাবাখ অঞ্চল নিয়ে আর্মেনিয়া এবং আজারবাইজানের লড়াই আরো তীব্র হয়েছে। বৃহস্পতিবার আর্মেনিয়া অভিযোগ করেছে, আজারবাইজানের সেনা নাগর্নো-কারাবাখের একটি প্রাচীন গির্জায় শেলিং করেছে। ঘটনায় কারো মৃত্যু না হলেও গির্জার খুবই ক্ষতি হয়েছে। আজারবাইজান অবশ্য গির্জায় কামান দাগার কথা স্বীকার করেনি। এ দিকে দুই দেশের যুদ্ধ নিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নের উপর চাপ বাড়ালো ব্রাসেলসে আটকে থাকা আর্মেনিয়ার জনতা।
বৃহস্পতিবার আর্মেনিয়া অভিযোগ করে, নাগর্নো-কারাবাখের একটি পবিত্র ক্যাথিড্রালে শেলিং করেছে আজারবাইজান। গির্জার ফাদার অ্যাসোসিয়েট প্রেসকে জানিয়েছেন, উনিশ শতকের ওই গির্জায় সে সময় বহু মানুষ ছিলেন। যুদ্ধ শুরু হওয়ার পরে অসংখ্য গৃহহীন মানুষ গির্জাটিতে আশ্রয় নিয়েছিলেন। তারই মধ্যে এক বার নয়, দুই বার তার উপর গোলাবর্ষণ করে আজারবাইজান। ঘটনায় কেউ হাতহত হননি। তবে গির্জার অনেকটা অংশ ভেঙে গিয়েছে। নষ্ট হয়েছে গির্জার ভিতরের কারুকাজ।
অন্য এক ঘটনায় অবশ্য নাগর্নো-কারাবাখে দুই রাশিয়ান সাংবাদিক আহত হয়েছেন। একজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে আর্মেনিয়ার তরফে জানানো হয়েছে। গত কয়েকদিনের মতো এ দিনও বহু সাধারণ মানুষ বাড়ি ছেড়ে পালিয়েছেন।
গির্জায় আক্রমণের ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছে আর্মেনিয়ার প্রশাসন। তাদের বক্তব্য, এর চেয়ে কাপুরুষোচিত কাজ আর কিছু হতে পারে না। তাদের অভিযোগ, ধর্মস্থানে আঘাত হানা রণনীতির বিরোধী। কিন্তু আজারবাইজান সে কাজও করল। আজারবাইজান অবশ্য এ কথা অস্বীকার করেছে। তাদের বক্তব্য, গির্জা তো দূরের কথা, এখনো পর্যন্ত সামরিক কাঠামো ছাড়া অন্য কোনো জায়গায় তারা আক্রমণ করেনি। বরং আর্মেনিয়া আজারবাইজানের বিভিন্ন শহরে সাধারণ মানুষের বাড়ি লক্ষ্য করে আক্রমণ শানাচ্ছে।
বাস্তব চিত্র অবশ্য অন্য কথা বলছে। নাগর্নো-কারাবাখ কার্যত ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। সাধারণ মানুষের বাড়ি ঘর গোলার আঘাতে লন্ডভন্ড হয়ে গিয়েছে। গির্জায় গোলার আঘাত স্পষ্ট। অন্য দিকে আর্মেনিয়াও আজারবাইজানের যে শহরগুলিতে আক্রমণ চালাচ্ছে, সেখানেও একই ভাবে আক্রান্ত হয়েছেন সাধারণ মানুষ।
সাধারণ মানুষের অভিযোগ, যুদ্ধ বন্ধে এখনো পর্যন্ত কোনও সদর্থক পদক্ষেপ নিতে পারেনি বিশ্বের গুরুত্বপূর্ণ দেশগুলি। ইউরোপীয় ইউনিয়ন যুদ্ধ বন্ধে ব্যর্থ বলে বৃহস্পতিবার ব্রাসেলসে বিক্ষোভ দেখিয়েছেন আর্মেনিয়ার নাগরিকরা। তাঁদের বক্তব্য, হাজার মানুষ আক্রান্ত হচ্ছেন, অথচ ইউরোপীয় ইউনিয়ন চুপ করে বসে আছে।
ইউরোপীয় ইউনিয়ন কিংবা আর্মেনিয়া-আজারবাইজানের প্রতিবেশী দেশগুলি চুপ করে বসে নেই। যুদ্ধ থামানোর আহ্বান তারা বারংবার করছে। কিন্তু এখনো পর্যন্ত সে কথায় কান দেয়নি কোনো পক্ষই।
এসজি/জিএইচ (রয়টার্স, এপি)