নাগাসাকি’তে বোমা হামলার ৬৬ বছরপূর্তি
৯ আগস্ট ২০১১হিরোশিমায় লিটল বয়'এর বিভীষিকাময় আঘাতের প্রাথমিক ধাক্কা তখনও কাটিয়ে উঠতে পারেনি জাপানের মানুষ৷ গোট বিশ্ববাসী ক্ষণে ক্ষণে শিউরে উঠছে হিরোশিমায় আনবিক বোমা হামলার পাশবিকতার কথা মনে করে৷ এর মধ্যে পার হয়ে গেল আরও দুটি দিন৷ ৯ আগস্ট, ১৯৪৫৷ জাপানের অন্যতম বন্দর নগরী নাগাসাকি৷ এর আগেও বেশ কয়েকবার মিত্র বাহিনীর বিমান হামলার শিকার হয়েছে নগরীটি৷ সেদিনও বিমান হামলার সাইরেন শুনে আশ্রয় কেন্দ্রের দিকে ছুটে যায় হাজার হাজার জাপানি৷ কিন্তু চোখের সামনে যে দৃশ্য তারা দেখে, তার দুঃসহ স্মৃতি তাদের বয়ে নিয়ে যেতে হয় মৃত্যুর আগমুহূর্ত পর্যন্ত৷
মার্কিন বাহিনীর প্রাথমিক টার্গেট অবশ্য নাগাসাকি ছিল না৷ ছিল কোকুরা শহর৷ কিন্তু সেখানের আকাশ মেঘলা থাকায় ‘বকস্কার' নামে বি টোয়েন্টি নাইন বোমারু বিমানটি নাগাসাকিতেই আনবিক বোমাটি ফেলে৷ ভূমি থেকে প্রায় ২৯ হাজার ফুট ওপর থেকে ছেড়ে দেওয়া হয় প্রায় ১১ ফিট লম্বা বোমা ‘ফ্যাট ম্যান'৷ ২০ হাজার টন বিস্ফোরক ক্ষমতা সম্পন্ন ফ্যাট ম্যান কিছুক্ষণের মধ্যেই আঘাত হানে নাগাসাকির বুকে৷ আনবিক বোমার প্রচণ্ড আঘাতে ঝলসে যায় সব কিছু৷
সেই বোমা হামলায় বেঁচে যাওয়া একজন সাদাকো মোরিয়ামা জানান, তিনি দেখেছেন মানুষজনকে রাস্তায় দৌঁড়তে৷ তাদের শরীর থেকে মাংস খসে খসে পড়ছিল৷ পাহাড়ি এলাকা হওয়ায় হিরোশিমার চেয়ে কম ক্ষয়ক্ষতি হয়েছিল নাগাসাকিতে৷ ১৯৫৩ সালে মার্কিন কর্তৃপক্ষ হামলায় ৩৫ হাজার নিহতের কথা জানায়৷ তবে পরবর্তীতে নাগাসাকি কর্তৃপক্ষ নিহতের সংখ্যা ৮৭ হাজার বলে দাবি করে৷
সেই দিনটি আজও স্মরণ করে চলেছে জাপানের মানুষ৷ আনবিক বোমার বিপর্যয়ের স্মৃতি তাদের মনে আবারও জোরালো হয়ে উঠেছে সম্প্রতি ভূমিকম্প ও সুনামির পরে, হালের ফুকুশিমা পরমাণু কেন্দ্রে বিপর্যয়ের পর৷ তাই নাগাসাকির মেয়র তোমিশা তাউয়ে বললেন, পরমাণু জ্বালানি ছেড়ে পরিবেশ বান্ধব জ্বালানির দিকে এগুতে হবে৷ আনবিক বোমা হামলার শিকার মানুষগুলোর কথা স্মরণ করে তিনি আবারও উচ্চারণ করলেন ‘নো মোর হিবাকুশা'৷
প্রতিবেদন: রিয়াজুল ইসলাম
সম্পাদনা: দেবারতি গুহ