1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

নারী অধিকার প্রতিষ্ঠার পথে এগোচ্ছে সৌদি আরব

৩০ সেপ্টেম্বর ২০১১

সৌদি আরবে নিঃশব্দে আসতে চলেছে এক অন্য ধরণের বিপ্লব৷ মহিলাদের ভোটাধিকারের কথা শোনা গেছে সম্প্রতি৷ তারপরেই রানি আমীরা জানালেন, এক মহিলাকে বেত্রাঘাতের আদেশ বাদশাহ বাতিল করেছেন৷

https://p.dw.com/p/12jDo
এক সৌদি নারী চালকছবি: picture-alliance/dpa

সৌদি বাদশাহ আবদুল্লাহ বেশ প্রগতিশীল মানুষ৷ আরব দুনিয়ার সবচেয়ে রক্ষণশীল দেশ সৌদি আরবে তিনি ধীরে ধীরে সংস্কার আনছেন৷ আর সে সংস্কার চোখে পড়ছে আন্তর্জাতিক মহলের৷ এই তো কিছুদিন আগেই নারীদের ভোটাধিকারের ফরমান জারি করলেন বাদশা আবদুল্লাহ৷ সে খবর আন্তর্জাতিক মিডিয়ায় বেশ গুরুত্ব দিয়ে প্রচার করা হল৷ নানারকমের প্রতিক্রিয়াও দেখা গেল৷ বাদশাহ প্রশংসা শোনা গেল এই উদ্যোগের জন্য৷ সরকারিভাবে সৌদি আরব জানিয়েছে, ২০১৫ সালে সৌদি নারীরা ভোটাধিকার পাবেন৷ এবার আবার বাদশাহ আরেকটি ভালো কাজ করে ফেলেছেন গতকাল৷ কাজটি হল, এক সৌদি নারীকে বেত্রাঘাতের আদেশ রদ করার৷

খবরটা জানাচ্ছে, সংবাদসংস্থা এপি৷ সৌদি আরবে অন্য অনেক কিছুর মতই মেয়েদের গাড়ি চালাবার অধিকার নেই৷ প্রশাসনের কড়া নির্দেশ, কোন নারীকে গাড়ি চালাতে দেখতে পেলে, পুলিশ তাঁকে আটক করবে এবং অধিকাংশ ক্ষেত্রেই দেখা যায়, মামলা আদালতে গেলে সেই নারীর শাস্তি হয় ১০ ঘা চাবুক৷ এই নির্মম মধ্যযুগীয় শাস্তির পরোয়া না করেই বহু নারী কিন্তু সৌদি আরবে গাড়ি চালাচ্ছেন আজকের আধুনিক সমাজে৷ তাঁদের মধ্যে কেউ কেউ ধরা পড়েও যান৷ তারপরে সেই শাস্তির পালা৷

Die ersten Kandidatinen für die saudische Handwerkskammer
সৌদি নারীরা ভোটের অধিকার পাচ্ছেছবি: AP

যেমন ধরা পড়েছিলেন সীমা নামের এক নারী৷ তারপর আদালতের বিচার এবং দশ ঘা চাবুক মারার শাস্তির ঘোষণা৷ কিন্তু সৌদি রানি আমীরা আল তোয়াইল বৃহস্পতিবার পিউ কাঁহা বা টুইটারে টুইট করে জানিয়েছেন, ‘সীমাকে বেত্রাঘাতের সিদ্ধান্ত বাতিল হয়েছে৷ আমাদের প্রিয় রাজাকে এর জন্য ধন্যবাদ৷ আমার দৃঢ় বিশ্বাস, সৌদি নারীরা এই ঘটনায় অত্যন্ত খুশি হবে৷'

যদিও বাদশাহর তরফ থেকে সরকারিভাবে কোন ঘোষণা এখনও শোনা যায়নি৷ আদৌ সীমা নামের সেই দুঃসাহসী গাড়ি চালিকার শরীরে বেতের আঘাত পড়বে নাকি পড়বে না, তা এখনও পর্যন্ত বোঝা যাচ্ছে না৷ তবে, টুইটারে খোদ রানির এই আশাব্যঞ্জক ঘোষণা একটা ইতিবাচক দিক তো নির্দেশ করছেই!

সৌদি আরবে এরকম গাড়ি চালিকা নারীদের অনেকেই সীমার মতই সেই শাস্তির অপেক্ষায় রয়েছেন৷ এ বছরের শেষের দিকে এরকম অন্তত আরও দু'জন নারীকে আদালতে হাজির করা হবে, যাদের বেত মারা হতে পারে৷ এরপরেও এমন বহু মামলা আদালতে আসবে৷ কারণ, এই নির্দেশ থাকলেও গাড়ি চালাতে আগ্রহী বহু নারী৷ তাঁরা দিব্যি চালিয়েও যাচ্ছেন প্রতিদিন৷

আর সেটাকেই একটা নিঃশব্দ বিপ্লবের সূচনা হিসেবে দেখছে সমাজ৷ যেমন, জেড্ডার নারী সাংবাদিক মাহা আকিল জানাচ্ছেন, নির্দেশ যেমনই থাকুক, দেখা যায়, প্রশাসন এবং পুলিশ কিন্তু এইসব নারী গাড়ি চালিকাদের দেখেও না দেখার ভান করে থাকে৷ তার মানে হল, মানুষ সাধারণভাবে এবং স্বতঃস্ফূর্তভাবে এই মধ্যযুগীয় বর্বরতার বিরুদ্ধে অবস্থান নিচ্ছে৷ মাহা আকিলের মতে, সেটা একটা মস্তবড় আশার কথা৷ একটা সত্যিকারের আশাবাদ৷

সংস্কার ভেঙে আধুনিক বিশ্বের সঙ্গে সমানতালে পা রাখার জন্য সৌদি আরবের মত রক্ষণশীল দেশের নারীরা আগ্রহী৷ সেই আগ্রহের প্রথম সম্মিলিত পদক্ষেপ যদি এইভাবেও আসে, তাই বা মন্দ কী! এটাকেও তো বলা যেতেই পারে, বিপ্লবের সূচনা৷ আর সে সূচনা যেহেতু নারীর হাত ধরে আসছে, তাই তাকে রমণীয় বলতেও দোষ নেই৷

প্রতিবেদন: সুপ্রিয় বন্দ্যোপাধ্যায়

সম্পাদনা: সঞ্জীব বর্মন