‘নারী অধিকারের জন্য চাই নারী বিপ্লব’ : শিরিন এবাদি
৪ নভেম্বর ২০১১শিরিন এবাদি ইরানের নামজাদা লেখিকা, নারী অধিকারের প্রবক্তা এবং গোটা বিশ্বে একজন পরিচিত মানবতাবাদী৷ নোবেল বিজয়ী এই সম্মানিত নারীর বক্তব্য খুব পরিষ্কার৷ তিনি ১৯৭৯ সালের আরব বিপ্লবের উদাহরণ তুলে বলছেন, সে সময়ে শাহ'এর শাসনমুক্ত ইরানে দেখা গিয়েছিল, ইসলামি অনুশাসন জাঁকিয়ে বসেছিল সে দেশে৷ ফলে বিপ্লবের পরবর্তীতে দেখা গেছে মহিলারা অনেক বেশি সমস্যার শিকার হয়েছেন৷ তাঁদের ধর্মীয় গোঁড়ামির কুফল ভোগ করতে হয়েছে৷
মধ্যপ্রাচ্য এবং উত্তর আফ্রিকার একাধিক দেশে এখন বিপ্লব আর পট পরিবর্তনের হাওয়া৷ প্রথমে মিশর থেকে শুরু হওয়া সেই বিপ্লব এখনও বেশ কিছু দেশে তার প্রভাব খাটিয়ে চলেছে৷ শিরিন এবাদি সংবাদসংস্থা রয়টার্সকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, আরব বিশ্ব জুড়ে বিপ্লব সফল হয়েছে, একথা মেনে নিতে রাজি নন তিনি৷ তিনি বলেছেন, আরব দুনিয়ায় গণতন্ত্র যতক্ষণ পর্যন্ত পূর্ণাঙ্গ চেহারায় হাজির না হচ্ছে, ততক্ষণ একথা বলা যাবেনা৷ যাবেনা কেন, তার কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে এবাদির মন্তব্য, সমাজের অর্ধেক অংশ অর্থাৎ নারীজাতির জাগরণের দিকটিকেও দেখতে হবে খোলা চোখে৷
গণতন্ত্র এবং বিপ্লবের স্বরূপ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে এবাদি একাধিক উদাহরণ দিয়েছেন৷ বলেছেন, মিশর সহ যেসব দেশে বিপ্লব সাফল্য পেয়েছে এ পর্যন্ত, তাদের মধ্যে কিছু ক্ষেত্রে দেখা গেছে, ইসলামিক অনুশাসন বা ধর্মীয় গোঁড়ামি পূর্ণমাত্রায় ফিরে এসেছে বিপ্লবের পর৷ উদাহরণ দিয়ে এবাদি টিউনিশিয়ার প্রসঙ্গ টেনেছেন৷ যে দেশে বিপ্লব পরবর্তী শাসকরা নারী অধিকারকে অনেকাংশে খর্ব করে দিয়েছেন বলে তিনি মনে করেন৷ ফলে সেদেশের নারীরা এ বিষয়ে নিজেদের উদ্বেগ চেপে রাখেন নি৷
আরব বিশ্বের নারীদের জন্য এবাদির পরামর্শ খুব স্পষ্ট৷ মানবাধিকারবাদী এবং নারী অধিকারের পক্ষে সংগ্রামরত এই বিদূষী নারী তাই নারীদের নিজেদেরকে সোচ্চার হতে বলেছেন৷ বলেছেন, মেয়েরা যদি নিজেরাই নিজেদের অধিকারের জন্য আন্দোলনে না নামেন, তাহলে কখনোই সেই অধিকার তাঁদের হস্তগত হবে না৷ আরব দুনিয়ার এই অস্থির পরিস্থিতিতে বিশেষ করে নারীদের অগ্রগমনে শিরিন এবাদির মত চিন্তাশীল নারীর এই মন্তব্য গুরুত্বপূর্ণ যে তাতে সন্দেহ নেই৷
প্রতিবেদন: সুপ্রিয় বন্দ্যোপাধ্যায়
সম্পাদনা: আব্দুল্লাহ আল-ফারূক