নারী-শিশুসহ ৭ হাজারা হত্যা
১২ নভেম্বর ২০১৫৯ বছরের একটি মেয়েকেও শিরশ্ছেদ করে হত্যা করেছে তারা৷ একইভাবে হত্যা করেছে দুজন নারীসহ আরো ছয়জনকে৷ শনিবার ৭ জনেরই মৃতদেহ পাওয়া যায় আফগানিস্তানের জাবুল প্রদেশে৷ শিরশ্ছেদ করে হত্যা করা প্রতিটি মানুষ জাতিগত সংখ্যালঘু হাজারা সম্প্রদায়ের৷
বুধবার এই হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে বিশাল এক বিক্ষোভ মিছিল হয়েছে রাজধানী কাবুলে৷
আফগানিস্তানে এমন বিক্ষোভ মিছিল অতি বিরল ঘটনা৷ বিক্ষোভে এত মানুষের অংশগ্রহণ আরো বিরল৷ আরেকটি বিরল বিষয়, নিহতদের মরদেহবাহী কফিন নিয়ে রাজপথে বিক্ষোভ জানানো৷ কয়েক হাজার শিয়া মুসলমান হাজারা নারী-পুরুষের কান্না, আহাজারি আর ক্ষুব্ধ স্লোগানে ভারি বিষণ্ণ হয়ে পড়েছিল কাবুল৷
বুধবারের বিক্ষোভকে আফগানিস্তানে নতুন ইতিহাসের সূচনা হিসেবেও বর্ণনা করেছে অনেকে৷ তাঁরা মনে করেন, বিক্ষোভে বিশেষ করে নারীদের ব্যাপক উপস্থিতিকে খুব তাৎপর্যপূর্ণ৷
সাত শিয়াকে হত্যা করার এই ঘটনায় আফগানিস্তানে এখনো টিকে থাকা অন্যান্য সংখ্যালঘুরাও আতঙ্কিত৷ আফগান শিখদের ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন ভারতের লেখিকা মধু কিশওয়ার৷
৩০ লাখের মতো শিয়া হাজারা আছে আফগানিস্তানে৷ দীর্ঘদিন ধরেই তারা ব্যাপক নির্যাতন, নিপীড়নের শিকার৷
সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে সম্প্রতি তালেবান জঙ্গিরা আইএস-এর সঙ্গে যোগ দিয়ে দেশে আবার হত্যাযজ্ঞ শুরু করেছে৷
যে এলাকায় ৭টি লাশ পাওয়া গেছে সেই জাবুল প্রদেশে তালেবান জঙ্গিদের দুটি গ্রুপে সংঘাত চলছে৷ তাদের যে কোনো একটি গ্রুপ এ হত্যাকাণ্ডের জন্য দায়ী বলে ধারণা করা হচ্ছে৷
তবে বিক্ষোভকারীদের অভিযোগের আঙুল ইসলামিক স্টেটের দিকে৷ আইএস এবং জঙ্গিবাদ বিরোধী স্লোগান দিতে দিতেই কাবুলের প্রেসিডেন্ট ভবনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছিলেন বিক্ষোভকারীরা৷
প্রেসিডেন্ট ভবনের কাছে যাওয়ার আগেই পুলিশ মিছিলটি ছত্রভঙ্গ করে দেয়৷
তাতেও বিক্ষোভ থামেনি৷ বৃহস্পতিবারও বাল্খ প্রদেশ, হেরাত, নঙ্গরহাটসহ বেশ কিছু স্থানে বিক্ষোভ মিছিল হয়েছে৷ বিক্ষোভের আয়োজকরা জানিয়েছেন, নিহত সাতজনের লাশ জাবুলে ফিরিয়ে নেয়া হচ্ছে৷ সেখানেই তাঁদের দাফন হবে৷
সংকলন: আশীষ চক্রবর্ত্তী
সম্পাদনা: সঞ্জীব বর্মন