জার্মানির নিখোঁজ অভিবাসীরা
২৮ ডিসেম্বর ২০১৭বৃহস্পতিবার জার্মান রেডক্রস (ডিআরকে) জানায় যে, ২০১৭ সালে তাদের কাছে নিখোঁজ অভিবাসীদের খোঁজে ২,৭০০টি তল্লাশি এসেছে – নিখোঁজ ব্যক্তিরা জার্মানিতে এসেছেন কিনা, সে বিষয়ে তাদের আত্মীয়স্বজন খোঁজখবর চেয়েছেন৷ যাদের খোঁজখবর চাওয়া হয়েছে, তাদের মধ্যে ১,০০০ জন অভিভাবকহীন অপ্রাপ্তবয়স্ক৷ লক্ষণীয় যে, ২০১৭ সালে জার্মানিতে অনেক কম অভিবাসী আসা সত্ত্বেও এই সংখ্যা এত বেশি, বলে ডিআরকে মন্তব্য করেছে৷
ইউরোপে নিখোঁজ
- ২০১৬ সালে ডিআরকে-র কাছে নিখোঁজ অভিবাসীদের সম্পর্কে প্রায় ২,৮০০ তল্লাশি আসে;
- ২০১৫ সালের উদ্বাস্তু সংকটের সময় ইউরোপে প্রায় ১,০০০ অপ্রাপ্তবয়স্ক অভিবাসী নিখোঁজ হয়, বলে ইউরোপোল জানিয়েছে;
- ইউরোপগামী অপ্রাপ্তবয়স্কদের প্রায় ৭৫ শতাংশ দাস শ্রম, যৌন অপব্যবহার, শিশু বিবাহ বা অন্য কোনো ধরনের শোষণের শিকার হয়, বলে জাতিসংঘের বিবৃতিতে প্রকাশ৷
ভাগ্য অজ্ঞাত
জার্মান রেডক্রসের প্রেসিডেন্ট গ্যার্ডা হাসেলফেল্ড বলেছেন:
- ‘‘সবচেয়ে ভীতিকর হলো সেই সব অভিভাবকহীন অপ্রাপ্তবয়স্ক উদ্বাস্তুদের সংখ্যা, যারা তাদের নিজের পরিবারকে খুঁজছে, অথবা তাদের পরিবার ঐ সব শিশু-কিশোরের খোঁজ করছে;''
- ‘‘একজন আত্মীয় বেঁচে আছে কিনা, অথবা তার ভাগ্যে কী ঘটেছে, সেটা না জানার চেয়ে একটি পরিবারের পক্ষে বড় শাস্তি আর কিছু হতে পারে না;''
- ‘‘যেহেতু অভিবাসনের বিভিন্ন যাত্রাপথে মৃতদের শনাক্ত করা সবসময় সম্ভব হয় না, (নিখোঁজদের) অনেকের ভাগ্য সম্ভবত অজ্ঞাতই থেকে যাবে৷''
নিখোঁজ হবার কারণ কী?
- একজন অভিবাসীর নিখোঁজ হওয়ার পিছনে নানা কারণ থাকতে পারে – মৃত্যু, অপহরণ বা দাস হিসেবে বিক্রয়ও তার মধ্যে পড়ে৷ কিন্তু কখনো-সখনো একজন অভিবাসী একাধিক দেশের কর্তৃপক্ষের কাছে রাজনৈতিক আশ্রয়ের আবেদন করে, যার ফলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ঠিক কোথায় আছে, তা জানা বা বলা সমস্যাকর হয়ে ওঠে৷
নিখোঁজ অপ্রাপ্তবয়স্কদের ভাগ্যে কী ঘটতে পারে?
- ইউরোপ জুড়ে আইন-শৃঙ্খলা কর্তৃপক্ষ সাবধান করে দিয়েছেন যে, যে সব অপ্রাপ্তবয়স্ক একা যাত্রা করছে, তাদের অপরাধী সংগঠনগুলির হাতে গিয়ে পড়ার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি৷ অনেক ক্ষেত্রে একা পলায়নপর অপ্রাপ্তবয়স্কদের যৌন অপব্যবহার ও বিনা পারিশ্রমিকে শ্রমদানে বাধ্য করা হয়েছে৷
ইউরোপে নিখোঁজ অভিবাসীদের সংখ্যা বাড়ছে কেন?
- ২০১৫ সালে লক্ষ লক্ষ অভিবাসী ইউরোপে এসে পৌঁছান; তাদের মধ্যে অনেকেই মধ্যপ্রাচ্য, আফ্রিকা বা এশিয়ায় যুদ্ধের হাত থেকে পালিয়েছিলেন৷ এই পরিমাণ মানুষ যখন এতো দূর থেকে বিভিন্ন দেশের সীমান্ত পার হয়ে যাত্রা করছেন, তখন এমনিতেই অভিবাসন কর্তৃপক্ষ কে তাদের সীমান্ত পার হয়ে দেশে ঢুকল বা বেরল, তার সঠিক হিসাব রাখতে পারেনি৷ অপরদিকে অপরাধী সংগঠনগুলি এই পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে অভিবাসীদের যৌন ব্যবসায় বা দাস শ্রমিক হিসেবে নিযুক্ত করে৷
জার্মান রেডক্রসের পরবর্তী পদক্ষেপ?
- ডিআরকে নিখোঁজ ব্যক্তিদের খোঁজ করার চেষ্টা করবে – এবং সফল না হলে, যে সব কর্তৃপক্ষ আন্তর্জাতিক নেটওয়ার্ক ও ডাটাবেস ব্যবহার করতে পারেন, তাদের কাছে এই সব তল্লাশি পাঠানো হবে৷ কোনো ব্যক্তিকে খুঁজে পাওয়া গেলে, পরিবারের সঙ্গে তার পুনর্মিলনের কোনো বৈধ পন্থা আছে কিনা, তা বিবেচনা করে দেখা হতে পারে৷
এসি/জেডএইচ (ডিপিএ, কেএনএ)