নিজামীর বিরুদ্ধে রায়
২৪ মার্চ ২০১৪২০১০ সালের ২৯শে জুন মতিউর রহমান নিজামীকে আলাদা একটি মামলায় গ্রেপ্তার করার পর, একই বছরের ২রা আগস্ট তাঁকে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় আবারো গ্রেপ্তার দেখানো হয়৷ তাঁর বিরুদ্ধে একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের সময় হত্যা, লুট, ধর্ষণ, উস্কানি ও সহায়তা, পরিকল্পনা ও ষড়যন্ত্র এবং বুদ্ধিজীবী হত্যার মতো ১৬টি অভিযোগ রয়েছে৷ এ সব ঘটনায় অভিযোগ গঠনের মধ্য দিয়ে গত বছরের ২৮শে মে নিজামীর বিচার শুরু হয়৷ এই মামলায় আগে একবার যুক্তি-তর্ক শেষ হলেও বিচারক অবসরে যাওয়ায় নতুন করে আবারো যুক্তি-তর্কের সুযোগ দেয়া হয়৷
এই মামলার প্রসিকিউটর মোহাম্মদ আলি জানান, ‘‘তারা নিজামীর বিরুদ্ধে সব অভিযোগ প্রমাণে সক্ষম হয়েছেন৷ তাই তারা নিজামীর সর্বোচ্চ শাস্তি আশা করছেন৷'' অন্যদিকে নিজামীর আইনজীবী তাজুল ইসলাম দাবি করেন, ‘‘প্রসিকিউশন নিজামীর বিরুদ্ধে যে সব অভিযোগ এনেছে, তা ভিত্তিহীন ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিত৷ প্রতিহিংসার কারণে তাঁর বিরুদ্ধে এ সব অভিযোগ আনা হয়েছে৷ আশা করি, এ সব অভিযোগ থেকে তিনি খালাস পাবেন৷''
নিজামীর বাড়ি পাবনার সাথিয়া এলাকায়৷ মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আব্দুর রাজ্জাক জানান, নিজামীর বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ আনা হয়েছে তার মধ্যে অন্যতম হলো – একাত্তরের ডিসেম্বরে পাবনার বেড়া থানার বৃশালিকা গ্রাম ঘেরাও করে ৭০ জনকে গুলি করে হত্যা ও ৭২টি বাড়িতে আগুন দেয়া, ডেমরা ও বাউশগাড়ী গ্রামে ৪৫০ জনকে গুলি করে হত্যা, সাঁথিয়া উপজেলার করমচা গ্রামে মন্দিরের সামনে লাইনে দাঁড় করিয়ে গুলি করে হত্যা, ধর্ষণ ও লুটপাটের ঘটনা৷ এছাড়া বুদ্ধিজীবী হত্যাকাণ্ডের সঙ্গেও তিনি জড়িত ছিলেন৷
তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের আদেশে বলা হয়, ১৯৪৩ সালে পাবনার সাঁথিয়া উপজেলার মোহাম্মদপুর প্রামে জন্ম নেয়া নিজামী ১৯৬৩ সালে কামিল পাস করেন৷ জামায়াতের তখনকার ছাত্রসংগঠন ইসলামী ছাত্রসংঘের পূর্ব পাকিস্তান শাখার প্রধান হিসাবে একাত্তরে তিনি ছিলেন আলবদর বাহিনীরও প্রধান৷ আলবদর বাহিনী একাত্তরে বুদ্ধিজীবী হত্যায় নেতৃত্ব দেয়৷
নিজামীর বিরুদ্ধে রায়ের মধ্য দিয়ে একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলার দশম রায় হবে৷ এর আগের নয়টি মামলায় জামায়াতের সাবেক ও বর্তমান আটজন এবং বিএনপির দুই নেতাকে দণ্ড দিয়েছে ট্রাইব্যুনাল৷