1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

নির্বাচন কমিশনারের পদত্যাগ, শুরু বিতর্ক

১১ মার্চ ২০২৪

শনিবার আচমকাই পদত্যাগ করেছেন ভারতের অন্যতম নির্বাচন কমিশনার অরুণ গোয়েল। কেন পদত্যাগ, তা নিয়ে চলছে বিতর্ক।

https://p.dw.com/p/4dNQ7
ভারতীয় নির্বাচন কমিশনের ফুল বেঞ্চ
সাংবাদিক সম্মেলনে ভারতের নির্বাচন কমিশনছবি: Subrata Goswami/DW

ভারতের নির্বাচন কমিশনে তিনজন ব্যক্তির একটি বেঞ্চ থাকে। এরমধ্যে একজন মুখ্য নির্বাচন কমিশনার এবং দুইজন নির্বাচন কমিশনার। জাতীয় নির্বাচনের মরসুমে একটি পদ আগেই খালি হয়েছিল। শনিবার অরুণ গোয়েল নির্বাচন কমিশনারের পদ থেকে ইস্তফা দেয়ায় বেঞ্চে কেবলমাত্র মুখ্য নির্বাচন কমিশনার রাজীব কুমারই থাকলেন।

অরুণ গোয়েলের নিয়োগ নিয়ে এর আগেই বিতর্ক হয়েছিল। ২০২২ সালের ডিসেম্বর মাসে অবসর নেওয়ার পর তাকে নির্বাচন কমিশনে নিয়োগ দেওয়া হয়। সেই নিয়োগকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টের সাংবিধানিক বেঞ্চে মামলা হয়। বিচারপতি সঞ্জীব খান্নার বেঞ্চ সেই মামলা শেষ পর্যন্ত খারিজ করে দেয়। কিন্তু গত শনিবার অরুণ গোয়েল আচমকা কেন ইস্তাফ দিলেন, তা নিয়ে নানা আলোচনা চলছে।

নির্বাচন কমিশনের একটি সূত্র জানাচ্ছে, কেন্দ্রীয় বাহিনীর মোতায়েন নিয়ে মুখ্য নির্বাচন কমিশনারের সঙ্গে মতভেদ হওয়ার কারণেই অরুণ ইস্তাফ দিয়েছেন। বিজেপির একটি সূত্র আবার ডয়চে ভেলেকে জানিয়েছে, আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে অরুণ প্রার্থী হতে পারেন। সে কারণেই এই ইস্তফা। ওই সূত্র দাবি করেছে, পাঞ্জাব ক্যাডার অরুণ গোয়েল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ঘনিষ্ঠ।

অরুণ অবশ্য সংবাদমাধ্যমের সামনে এবিষয়ে কোনো মন্তব্য করেননি। নির্বাচন কমিশনের তরফেও এবিষয়ে এখনো পর্যন্ত কোনো মন্তব্য করা হয়নি, কোনো বিবৃতিও দেওয়া হয়নি।

সরকারের একটি সূত্রের দাবি, চলতি সপ্তাহেই কেন্দ্রীয় সরকার দুই নতুন নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ করতে পারে। আর তা নিয়েই আশঙ্কা প্রকাশ করেছে কংগ্রেস। কংগ্রেসের মধ্যপ্রদেশের এক নেতা সুপ্রিম কোর্টে এবিষয়ে একটি মামলা রুজু করেছেন সোমবার। অভিযোগ, নরেন্দ্র মোদীর সরকার নিয়োগে হস্তক্ষেপ করতে পারে। আর সে ক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশনের নিরপেক্ষতা থাকবে না।

এদিকে জাতীয় নির্বাচনের পাশাপাশি এবছর ওড়িশা, অন্ধ্রপ্রদেশ, অরুণাচল প্রদেশ, সিকিমেও বিধানসভা ভোট আছে। কেবলমাত্র মুখ্যনির্বাচন কমিশনারের পক্ষে একাজ করা সম্ভব কি না, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।

এবারের নির্বাচনে আরো একটি প্রশ্ন সামনে এসেছে। সরকারি পদ ছেড়ে তড়িঘড়ি নির্বাচনে অংশ নেওয়া কতটা নৈতিক। লক্ষ্যণীয় বিষয় হলো, সম্প্রতি কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় পদে ইস্তফা দিয়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন। তিনি সম্ভবত তমলুক থেকে বিজেপির প্রার্থী হবেন। আবার শনিবার পশ্চিমবঙ্গের রায়গঞ্জ রেঞ্জের পুলিশ আইজি প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায় পদ থেকে ইস্তফা দেন, রোববারই তৃণমূল তাকে প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করেছে। নির্বাচন কমিশনারের পদ থেকে ইস্তফা দিয়ে অরুণ গোয়েলও যদি ভোটের প্রার্থী হন, তাহলে তা নিয়েও একই প্রশ্ন উঠবে।

এবিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি অশোক গঙ্গোপাধ্যায় ডয়চে ভেলেকে বলেছেন, ''ভারতীয় আইন অনুযায়ী পদে ইস্তফা দিয়ে যে কেউ নির্বাচনের পদপ্রার্থী হতে পারেন। কিন্তু মনে রাখা দরকার, তাদের একটি অতীত আছে। এবং সরাসরি কোনো রাজনৈতিক দলে যোগ দিলে নীতি এবং নৈতিকতার প্রশ্নটি সামনে আসে। সেই প্রশ্নটিকে কখনোই অস্বীকার করা যায় না।'' বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের বক্তব্য, যারা একাজ করছেন, তাদের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন ওঠাই স্বাভাবিক। 

এসজি/জিএইচ (পিটিআই)