নির্বাচনের আগে ভুয়া খবর রোধে লড়ছে ভারত
৩১ মার্চ ২০১৯গত সপ্তাহে ভারতের নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তারা ফেসবুক, টুইটার, হোয়াটসঅ্যাপ, গুগল ও টিকটক-এর মতো ইন্টারনেট অ্যাপ্লিকেশনের প্রতিনিধিদের সাথে দুদিনব্যাপী বৈঠক করেন৷
১১ এপ্রিল থেকে ১৯ মে পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হতে চলেছে ভারতের ষোড়শ লোকসভা নির্বাচন৷ নির্বাচনি প্রচারের নাম করে যাতে এই সমস্ত জনপ্রিয় অ্যাপের মাধ্যমে ভুয়া খবর না ছড়ায়, তা আলোচনা করার উদ্দেশ্যেই বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়েছে৷
ভারতের প্রধান নির্বাচন কমিশনার সুনিল অরোরা ডয়চে ভেলেকে জানান, ‘‘আমরা চাই যাতে জনপ্রিয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলিতে একটি নির্দিষ্ট আচরণবিধি রাখা হয়, যাতে করে এই অ্যাপগুলিকে ভুল খবর ছড়াতে ব্যবহার না করা যায়৷''
উল্লেখ্য, বর্তমানে ভারত বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম ‘অনলাইন মার্কেট', যেখানে মোট ৪৬ কোটি মানুষ ইন্টারনেট ব্যবহার করেন৷ ফলে অনলাইন যোগাযোগ মাধ্যমের গুরুত্ব ভোটের বাজারে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ৷ শুধু তাই নয়, ভারতে এর আগে সামাজিক মাধ্যমে করা পোস্টকে ঘিরে ঘটেছে একাধিক সহিংসতার ঘটনা৷
কীভাবে চিনবেন ভুয়া খবর?
‘‘কাজটি মোটেও সহজ নয়৷ ভোটের সময় বলে নয়, এই কাজ অনেক আগেই শুরু করা উচিত ছিল,'' বলে মনে করেন ভারতের তথ্যনির্ভর সংবাদ সংস্থা ‘অল্ট-নিউজ'-এর প্রতিষ্ঠাতা প্রতীক সিনহা৷
সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদন বলছে, ক্ষমতাসীন ভারতীয় জনতা পার্টির নিয়ন্ত্রণে বর্তমানে দুই থেকে তিন লক্ষ হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ রয়েছে৷ অন্যদিকে, কংগ্রেসের নিয়ন্ত্রণে থাকা গ্রুপের সংখ্যা ৮০,০০০ থেকে এক লক্ষ৷
হোয়াটসঅ্যাপকে দলীয় নিয়ন্ত্রণ থেকে মুক্ত করতে নতুন উপায় ভাবা হচ্ছে, যার সাহায্যে জানা যাবে গ্রুপে ছড়ানো ছবির আসল উৎস৷ এমনটাই জানালেন হোয়াটসঅ্যাপের ভারত অঞ্চলের প্রধান কর্মকর্তা অভিজিৎ বোস৷
ফেসবুকের প্রতিনিধি শিবনাথ ঠাকরাল ডয়চে ভেলেকে জানিয়েছেন যে, আগামী কয়েক মাস নির্বাচন কমিশনসহ একাধিক তথ্যনির্ভর সংবাদ সংস্থা ও গবেষক দলের সাথে সামঞ্জস্য রেখে কাজ করবেন তাঁরা, যাতে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে কোনো ভুয়া খবর ছড়ানো না যায়৷
অনলাইন মাধ্যমের আগমনে ভারতে বদলেছে রাজনৈতিক প্রচারের ধরন, বেড়েছে ভুয়া খবরের কোপ৷ কিন্তু ২০১৯ সালের নির্বাচনে ভুয়া খবর ঠেকাতে নতুন আচরণবিধির দাবি আদৌ সফল হবে কি না, তা নিয়ে এখনও নিশ্চিত নন জিগনেশ তিওয়ারি'র মতো অনেক ডিজিটাল অ্যানালিস্ট৷