নির্মাণের নতুন পদ্ধতি আর্বান মাইনিং
১২ নভেম্বর ২০২৪জার্মানির হাইডেলব্যার্গের এক ভুতুড়ে এলাকা সংস্কার করতে আর্বান মাইনিং পদ্ধতি ব্যবহার করা হচ্ছে৷ ঐ ভুতুড়ে এলাকায় একসময় মার্কিন সামরিক ঘাঁটি ছিল৷ প্রায় পাঁচ হাজার মানুষ সেখানে বাস করতেন৷
সেখানকার ৩০০টি ভবনের মধ্যে অনেকগুলো সংস্কার করা হবে৷ বাকিগুলো ভেঙে সেগুলোর উপকরণ রিসাইকেল কিংবা পুনর্ব্যবহার করা হবে৷
হাইডেলব্যার্গের ডেপুটি মেয়র ইয়ুর্গেন ওডসুক বলেন, ‘‘এখানে আসলেই অনেক সম্পদ আছে৷ আমরা সেগুলো কাজে লাগাতে চাই৷ নতুন এলাকা গড়ে তুলতে সেগুলো ব্যবহার করতে চাই৷''
প্রায় এক-তৃতীয়াংশ ভবন সংস্কার করা হবে৷ বাকিগুলো ভেঙে ফেলে সেই জায়গায় বিভিন্ন কাজে ব্যবহার করা যায় এমন ভবন নির্মাণ করা হবে৷
এই প্রকল্পের বিশেষ দিক হচ্ছে, ভেঙে ফেলা ভবনের উপকরণগুলো আবর্জনার স্তূপে না ফেলে সেগুলো পুনর্ব্যবহার কিংবা রিসাইকেল করা হবে৷
বর্তমানের নির্মাণ পদ্ধতিতে উন্নতি আনা প্রয়োজন৷ কারণ, বৈশ্বিক জ্বালানি-সংশ্লিষ্ট কার্বন নির্গমনের ১৩ শতাংশের জন্য দায়ী নির্মাণখাত৷
শুধু ভবন নির্মাণ নয়, ভবন ভাঙার পরও প্রায় সবকিছুই আবর্জনার স্তূপে ফেলা হয়৷ ইউরোপে মোট আবর্জনার এক-তৃতীয়াংশ আসে নির্মাণ খাত থেকে৷
গত ৫-১০ বছরে আর্বান মাইনিংয়ের বিষয়টি আলোচনায় এলেও বিষয়টি নতুন নয়৷
টেকসই বিষয় নিয়ে কাজ করা ডাচ সংস্থা মেটাবলিকের নিকো শুটেন জানান, ‘‘শিল্প বিপ্লবের আগ পর্যন্ত আর্বান মাইনিং সাধারণ বিষয় ছিল৷'' তিনি বলেন, ‘‘শিল্প বিপ্লবের সময় উৎপাদনের অনেক প্রক্রিয়া আবিষ্কৃত হওয়ায় কোনো কিছু তৈরি করতে খরচ কম হত৷ সে কারণে কম দামে নতুন পণ্য পাওয়া যেত৷ তাই পুনর্ব্যবহারের চল উঠে গিয়েছিল৷''
যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন শহর কর্তৃপক্ষ ভবন ভাঙার পরিবর্তে পুনর্নির্মাণ বাধ্যতামূলক করে আইন তৈরি করছে৷
কিন্তু আর্বান মাইনিংয়ের বিষয়টি সব জায়গায় একইরকম নয়৷ জাতিসংঘের টেকসই ভবন নির্মাণ কর্মসূচির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা উশা আইয়ার-রেনিগা বলেন, ‘‘আমরা যেভাবে সমস্যাটা দেখছি, আর যেভাবে সমাধানের চেষ্টা করছি, সেটা সব অঞ্চল ও দেশে একইরকম নয়৷''
যেমন গ্লোবাল সাউথে গ্লোবাল নর্থের মতো এত ফাঁকা বাড়ি, অফিস ও দোকান নেই৷ কিন্তু তারপরও সেখানে আর্বান মাইনিং বেশ প্রচলিত- যদিও সেখানকার মানুষ হয়ত এটাকে এই নামে ডাকে না৷
উশা আইয়ার-রেনিগা বলেন, ‘‘যেমন আপনি যদি অস্থায়ী বসতিগুলোর কথা ধরেন, দেখবেন, সেগুলো তৈরিতে যে উপকরণ ব্যবহার করা হয়েছে সেগুলো এই কাজে ব্যবহারের আগে আরও কয়েকবার অন্য কাজে ব্যবহার হয়েছে৷''
ভবন নির্মাণে পুরনো উপকরণের ব্যবহার যতই বাড়ুক না কেন, নতুন উপকরণ ব্যবহার কখনও বন্ধ হবে না৷
এটা শুধু বিদ্যমান ভবন পুনর্নিমাণের বিষয় নয়, আমরা কীভাবে ভবন বানাচ্ছি, তারও বিষয়৷
পুরনো উপকরণ দিয়ে ভবন নির্মাণকে উৎসাহিত করার বিষয়টি পরিবর্তন আনতে সহায়ক হবে- তবে আরও সময় লাগবে৷
ডেভ ব্রানেক/জেডএইচ