1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান
দুর্নীতিভারত

নিয়োগ-দুর্নীতি: এজেন্টের মাধ্যমে টাকা তোলা হত

২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৩

যত দিন যাচ্ছে, ততই এসএসসি ও টেট কেলেঙ্কারি নিয়ে নতুন নতুন চাঞ্চল্যকর তথ্য সামনে আসছে।

https://p.dw.com/p/4NvMX
ছবি: Subrata Goswami/DW

যেমন সামনে এসেছে গোপাল দলপতি ও তার স্ত্রী হৈমন্তীর কাহিনি।  সামনে এসেছে, কীভাবে এজেন্ট লাগিয়ে চাকরিপ্রার্থীদের ধরে পয়সা তুলত কুন্তল ও তাপস মন্ডল। মামা-ভাগনে গ্রামের প্রায় একশজন চাকরি পাওয়ার জন্য এই ফাঁদে পা দিয়ে লাখ লাখ টাকা কুন্তলদের দিয়েছিল বলে অভিযোগ।

গোপাল দলপতি ও হৈমন্তীর কাহিনি

নিয়োগ দুর্নীতি কেলেঙ্কারিতে এখন গোপাল ও হৈমন্তীকে নিয়ে খুব হইচই হচ্ছে। সম্প্রতি আদালত থেকে বের হওয়ার সময় অভিযুক্ত কুন্তল ঘোষ জানিয়েছেন, গোপাল দলপতি ও তার স্ত্রী হৈমন্তী গঙ্গোপাধ্য়ায়ের কাছে সব টাকা আছে। তারা সব জানে।,  হৈমন্তীরর কাছে সব টাকা থাকত। যা জানে সব হৈমন্তী জানে।

কুন্তল বলেছে, গোপাল দলপতিকে সে ১৫ কোটি টাকা দিয়েছিল মন্ত্রীকে দেওয়ার জন্য। এবিপি আনন্দে একটি সাক্ষাৎকারে গোপাল দলপতি স্বীকার করেছেন, কুন্তল তার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে কখনো ৩০ হাজার, কখনো ৭০ হাজার, কখনো এক লাখ টাকা দিয়েছে। কুন্তল তাকে বলেছিল, চাকরিপ্রার্থীপিছু সাত থেকে আট লাখ টাকা অগ্রিম দিতে হবে। কিন্তু প্রার্থীরা তা দিতে রাজি হয়নি। তাই তিনিও কোনো টাকা কুন্তলকে দেননি।

হৈমন্তী হলো গোপাল দলপতির দ্বিতীয় স্ত্রী। হৈমন্তীর কথাতে গোপাল তার নামবদল করে আরমান গঙ্গোপাধ্যায় করে বলে টিভি৯-এর রিপোর্ট জানাচ্ছে।  তারা মিলে হৈমন্তী অ্যাগ্রো প্রাইভেট লিমিটেড নামে কোম্পানি গঠন করেছিলেন।  মুম্বইয়ের নরিম্যান পয়েন্টে তাদের অফিস ছিল। নরিম্যান পয়েন্ট হলো মুম্বইয়ের সবচেয়ে দামী জায়গাগুলির মধ্যে একটি।  শুদু তাই নয়, তাদের আরো পাঁচটি কোম্পানি ছিল বলে অভিয়োগ।

এর আগে চিটফান্ড নিয়ে একটি অভিযোগের ভিত্তিতে তাদের প্রেপ্তার করা হয়। গোপাল এক বছর তিহারে বন্দিও ছিল।

সূত্র জানাচ্ছে, তদন্ত করে যে তথ্য সিবিআইয়ের হাতে এসেছে তা হলো, গোপাল দলপতি ও তাপস মন্ডল একসঙ্গে কাজ করত। গোপাল ছিল কুন্তল ও তাপসের মধ্যে যোগাযোগরক্ষাকারী। পরে তাদের মধ্যে গোলমাল হওয়ায় তারা আলাদাভাবে এজেন্ট নিয়োগ করে।

গোপাল সিবিআইকে জানিয়েছে, তার স্ত্রী কয়েকবছর আগে তাকে ছেড়ে চলে গেছে। সে কোথায় তা তিনি জানেন না।

এজেন্টের মাধ্যমে

আনন্দবাজার জানাচ্ছে, ইডি সূত্রের খবর, কুন্তল নিজে টাকা তোলার জন্য এজেন্টদের নিয়োগ করত। তার ২২ জন এজেন্টের সন্ধান পাওয়া গেছে।

এজেন্টরা ইডিকে জানিয়েছে, তারা কোটি কোটি টাকা তুলে কুন্তলকে দিয়েছে। হুগলির এক এজেন্ট ৬২ জনের কাছ থেকে তিন কোটি চার লাখ টাকা তুলে কুন্তলের কাছে জমা দেন। বিভিন্ন এজেন্টকে জেরা করে এখনো পর্যন্ত আট কোটি টাকার হিসাব পেয়েছে ইডি।

আর ইডির জেরায় তাপস জানিয়েছেন, তিনি কুন্তলকে ১৯ কোটি দুই লাখ ১০ হাজার টাকা দিয়েছেন।

এক গ্রাম থেকে

বাগদায় মামা ভাগনে গ্রাম থেকে প্রায় একশজন চাকরি পাওয়ার জন্য তাপস মন্ডলকে টাকা দিয়েছিল বলে অভিযোগ। তারমধ্যে অরিন্দম মন্ডল দাবি করেছেন, তিনি তার পরিবারের পাঁচজনের চাকরির জন্য তাপসকে ৪৪ লাখ টাকা দিয়েছিলেন। এর মধ্যে দুই জনের চাকরি হয়েছিল। বাকি তিনজনের হয়নি। যাদের হয়েছিল, তারাও আদালতের রায়ে চাকরি হারিয়েছেন।

চতুর্থ শ্রেণি, প্রাথমিক ও উচ্চ প্রাথমিকে শিক্ষকের চাকরির রেট ছিল ১২ লাখ টাকা। চতুর্থ শ্রেণির জন্য একটু কম। তার মধ্যে মোটা অঙ্কের টাকা অগ্রিম দিতে হত।

অরবিন্দের দাবি, তিনি ও মামা ভাগনে গ্রামের প্রায় একশজন নিজেদের জমি বিক্রি করে টাকা দিয়েছিলেন তাপস মন্ডলকে। পাঁচজনের জন্য যদি ৪৪ লাখ টাকা দিতে হয়, তাহলে একশজনের কাছ থেকে কোটি কোটি টাকা তুলেছিল তাপসরা।

জিএইচ/এসজি(টিভি৯, আনন্দবাজার)