নুসরাত হত্যায় ১৬ জনের মৃত্যুদণ্ড
২৪ অক্টোবর ২০১৯হত্যাকাণ্ডের সাত মাসের মাথায় ফেনীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মামুনুর রশীদ বৃহস্পতিবার এ রায় দেন৷
অধ্যক্ষ এস এম সিরাজ-উদ-দ্দৌলা, নুর উদ্দিন, শাহাদাত হোসেন শামীম, কাউন্সিলর মাকসুদ আলম ওরফে মোকসুদ আলম, সাইফুর রহমান, মো. জোবায়ের, জাবেদ হোসেন ওরফে সাখাওয়াত হোসেন জাবেদ, হাফেজ আব্দুল কাদের, মো. আফসার উদ্দিন, কামরুন নাহার মনি, উম্মে সুলতানা পপি, আব্দুর রহিম শরীফ, ইফতেখার উদ্দিন রানা, ইমরান হোসেন ওরফে মামুন, মো. শামীম, মাদ্রাসার গভর্নিং বডির সহসভাপতি রুহুল আমিন ও মহিউদ্দিন শাকিলের সর্বোচ্চ সাজার রায় দিয়েছে আদালত৷
মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ-উদ-দৌলা ছিলেন এই হত্যাকাণ্ডের হুমুকদাতা৷ প্রতিষ্ঠানটির গভর্নিং বডির সহসভাপতি স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা রুহুল আমীন এবং সোনাগাজীর পৌর কাউন্সিলর ও আওয়ামী লীগ নেতা মাকসুদ আলম এই হত্যাকাণ্ড বাস্তবায়নে আর্থিক সহযোগিতাসহ বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করেছিলেন৷ আর কামরুন নাহার মনি, উম্মে সুলতানা পপি ও জাবেদ হোসেন ছিলেন নুসরাতের সহপাঠী৷
তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় বাদীপক্ষের কৌঁসুলি এম শাহজাহান সাজু এই রায়কে দৃষ্টান্তমূলক হিসেবে অভিহিত করেছেন৷ ৬২ কার্যদিবস শুনানির পর এই রায় ঘোষণা করায় বাংলাদেশের ইতিহাসে এটিকে নজিরবিহীন বলেছেন তিনি৷
নুসরাতের পরিবারের সদস্যরারও রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করে দ্রুত আসামিদের সাজা কার্যকরের দাবি জানিয়েছেন৷ নুসরাতের ভাই মাহমুদুল হাসান নোমান দ্রুত বিচার নিশ্চিত করায় প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন৷ আর আসামিপক্ষের আইনজীবীরা বলেছেন, এই রায়ে তারা সন্তুষ্ট নন, উচ্চ আদালতে যাবেন৷
সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল (ডিগ্রি) মাদ্রাসা থেকে এবার আলিম পরীক্ষা দিচ্ছিলেন নুসরাত৷ ওই মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ-উদ দৌলার বিরুদ্ধে যৌন নিপীড়নের অভিযোগ তুলেছিলেন তিনি৷ ওই ঘটনায় নুসরাতের মা মামলা করার পর গত ২৭ মার্চ গ্রেপ্তার হন অধ্যক্ষ সিরাজ৷
সিরাজ গ্রেপ্তার হওয়ার পর তার পক্ষে নামেন স্থানীয় প্রভাবশালীরা৷ তার মুক্তি দাবিতে মানববন্ধনও করেন মাদ্রাসার কিছু শিক্ষার্থী৷ মামলা তুলে নিতে ক্রমাগত হুমকি দেওয়া হচ্ছিল বলে নুসরাতের পরিবারের অভিযোগ৷
এর মধ্যেই ৬ এপ্রিল পরীক্ষা শুরুর আগে পরীক্ষা কেন্দ্রের সাইক্লোন শেল্টারের ছাদে নুসরাতকে কৌশলে ডেকে নিয়ে তার গায়ে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়৷ অগ্নিদগ্ধ নুসরাতকে ঢাকায় এনে বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হলেও টানা পাঁচ দিন যন্ত্রণা সহ্য করে ১০ এপ্রিল মারা যান তিনি৷
নুসরাতের গায়ে আগুন দেওয়ার দুদিন পর তার ভাই মাহমুদুল হাসান নোমান আটজনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও কয়েকজনকে আসামি করে হত্যাচেষ্টার মামলা করেন৷ নুসরাতের মৃত্যুর পর এটি হত্যা মামলায় পরিণত হয়৷
এসআই/কেএম (বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম)