নেতানিয়াহুর ইস্তফার দাবিতে বিক্ষোভ
১৫ জুলাই ২০২০জেরুসালেমে প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাড়ির সামনে জড়ো হলেন হাজার হাজার বিক্ষোভকারী। তাঁদের দাবি, প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুকে ইস্তফা দিতে হবে। কারণ, তাঁর বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে। তাঁর বিচার চলছে। এই অবস্থায় তিনি ক্ষমতায় থাকতে পারেন না।
বিক্ষোভকারীদের হাতে ধরা পোস্টারে লেখা ছিল, 'নেতানিয়াহুর দুর্নীতি আমাদের অসুস্থ করে', 'ক্রাইম মিনিস্টার', 'আমরা তিতিবিরক্ত হয়ে গেছি', 'অভিযুক্ত রাজনীতিবিদ কখনওই দেশের প্রধান থাকতে পারেন না' ইত্যাদি।
সরকারের নির্দেশ ছিল করোনার সময় সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে হবে। কিন্তু সেই নির্দেশের তোয়াক্কা না করেই হাজার হাজার মানুষ বিক্ষোভ দেখিয়েছেন। তেল আভিভ থেকে এসেছিলেন লরেন্ট সিগে। তাঁর দাবি, বিশ্বের সব চেয়ে মারাত্মক ভাইরাস হলো দুর্নীতি, করোনা নয়।
ফরাসি বিপ্লবের ২৩১ তম বার্ষিকী উপলক্ষে এই বিক্ষোভের ডাক দেওয়া হয়। পুলিশ জানিয়েছে, প্রচুর সংখ্যায় নিরাপত্তা কর্মী মোতায়েন করা হয়েছিল। পরের দিকে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পুলিশের ছোটখাট সংঘর্ষ হয়েছে। বিক্ষোভকারীরা সেন্ট্রাল জেরুসেলামের দিকেও যান এবং রেল অবরোধ করেন। এর আগে শনিবারও নেতানিয়াহুর আর্থিক নীতির প্রতিবাদে বিক্ষোভ হয়েছে।
ইসরায়েলে এখন করোনার প্রকোপ বাড়ছে। স্বাস্থ্যমন্ত্রক ঘোষণা করেছে, গত ২৪ ঘণ্টায় এক হাজার ৪০০ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। ৯০ লাখ মানুষের দেশে ইতিমধ্যে ৪১ হাজার ২০০ জনের করোনা হয়েছে। মারা গেছেন ৩৬৮ জন। বিক্ষোভকারীরা সেই করোনার বিপদ সত্ত্বেও নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে রাস্তায় নেমেছেন।
নেতানিয়াহু এক দশেকরও বেশি সময় ধরে প্রধানমন্ত্রী। কিন্তু সম্প্রতি তাঁর জনপ্রিয়তা অনেকটাই কমেছে। দুর্নীতির অভিযোগ তো আছেই, অর্থনীতি সামলাতে না পারা সহ বিভিন্ন অভিযোগ উঠছে তাঁর বিরুদ্ধে। দেশে বেকারের সংখ্যা ২০ শতাংশ ছাড়িয়েছে। সমালোচকদের দাবি, তিনি সাধারণ মানুষের থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছেন।
আগামী ১৯ জুলাই জেরুসালেমের জেলা আদালতে তাঁর বিরুদ্ধে দুর্নীতির মামলার শুনানি হবে। তাঁর বিরুদ্ধে ঘুষ নেওয়া, জালিয়াতি, আস্থাভঙ্গের অভিযোগ আছে। তাঁর ধনী বন্ধুদের কাছ থেকে বিলাসবহুল উপহার নেওয়া, নিজের প্রচারের জন্য বড় মিডিয়া গোষ্ঠীকে সুবিধা পাইয়ে দেওয়ার অভিযোগও আছে। নেতানিয়াহুর দাবি, তিনি কোনো অন্যায় করেননি। তাই তিনি ইস্তফা দেবেন না।
এক বছর ধরে রাজনৈতিক অস্থিরতা চলার পর গত মে মাসে নেতানিয়াহু নতুন জোট সরকার গঠন করেছেন। ইসরায়েলের আইন অনুসারে একমাত্র আদালত শাস্তি দিলেই প্রধানমন্ত্রী পদত্যাগ করতে বাধ্য। আর নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে মামলা কয়েক বছর ধরে চলতে পারে বলে বিশেষজ্ঞদের ধারণা।
জিএইচ/এসজি(এএফপি, রয়টার্স)