নেপালের তিন কন্যা
২১ মার্চ ২০১১দক্ষিণ এশিয়ার যে দেশটি পর্যটকদের জন্য তীর্থস্থান বলে উল্লেখ করা হয়, সেই দেশটিই নেপাল৷ দেশটির পূর্ব প্রান্তের তিন কন্যা লাকি, ডিকি এবং নিকি৷ তিন বোন৷ এই তিনজনকে বলা হয় পর্যটন ব্যবসার একটি সফল দৃষ্টান্ত সৃষ্টিকারী৷ ন্যাশনাল জিওগ্রাফি'র কাছ থেকে এই তিন বোন পেয়েছেন স্বীকৃতি৷ কারণ, তাঁরা নেপালে নারী পর্যটকদের জন্য বিশেষ একটি প্রতিষ্ঠান খুলেছেন৷ যে প্রতিষ্ঠানটি নারী পর্বতারোহীদের দিচ্ছে বিশেষ সহায়তা৷
অন্য অনেক স্থানের মতো নেপালেও অনেক পুরুষ পর্বতারোহীর কাছ থেকে সহায়তার বদলে নারীরা পেতেন অসহযোগিতা৷ হয়রানিরও অভিযোগ ছিল৷ ভারতে পড়ালেখা করা লাকি, ডিকি এবং নিকি এই সমস্যার কথা জানতেন৷ কিছু একটা করা দরকার- আর এই চিন্তা থেকেই এই তিন বোন চলে যান নেপালের অন্যতম সুন্দর স্থান পোখরায়৷
সেখানে গিয়ে তাঁরা প্রথমে একটি গেস্ট হাউজ ভাড়া নেন৷ যেখানে কেবল নারীরা থাকবেন- এমনটাই ছিল তাদের প্রথম উদ্দেশ্য৷ বেশ ভালোই চলছিল তাদের৷ এরই মাঝে তারা নারী গ্রাহকের কাছ থেকে অনুরোধ পেতে থাকলেন, নিরাপদ পর্বতারোহণের সুযোগ করে দিতে৷ কিন্তু এ কাজে কী তাঁরা ভালো করতে পারবেন? চিন্তা ভাবনা করে একটু ঝুঁকিই নিয়ে নিলেন তাঁরা৷ নানা সমস্যার মাঝে অন্যতম হলো সামাজিক সমস্যা৷ সমাজ কী তাদের এই কাজ মেনে নেবে?
নানা প্রশ্ন তিন কন্যার মনের মাঝে৷ পরে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নিলেন তাঁরা এই কাজ করবেন৷ এটা ব্যবসার নতুন একটি দিক৷ এই ঝুঁকি নেয়াটাই এখন তাঁদের সফলতার সোপান৷ ডিকি নিজে এ বিষয়ে প্রশিক্ষণও নিলেন৷ এগিয়ে যেতে থাকলো তাঁদের কাজ৷ ব্যবসা সম্প্রসারিত হতে শুরু করলো৷ সুনামও বাড়তে শুরু করেছে৷
এখন তাঁদের প্রতিষ্ঠানে পেশাদার পর্বতারোহী নারী সহায়তাকারী রয়েছেন৷ রয়েছেন এ কাজে বিভিন্ন রকম সহায়তা দেবার মানুষও৷ একশ জনের একটি দল তাঁদের৷ এক কথায় বিশাল এই প্রতিষ্ঠান৷ ফি বছর তাদের কাছে আসছে হাজারো নারী পর্যটক৷ আর তাঁদের চাহিদা পূরণও করছেন নেপালের এই তিন কন্যা৷
প্রতিবেদন: সাগর সরওয়ার
সম্পাদনা: জাহিদুল হক