‘‘নেমে আসুন, নামিয়ে দিন’’
২০ এপ্রিল ২০১৫ওনচিতা সাদমান টুইটারে লিখেছেন, ‘‘কাপুরুষরাই কেবল সহিংসতাকে সমর্থন করে৷''
সরদার এম আলী রনি একটি ভিডিও প্রতিবেদন শেয়ার করে লিখেছেন, পহেলা বৈশাখে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে যে নারী নিগ্রহের ঘটনা ঘটেছে তাতে বিক্ষোভে ফেটে পড়েছে বাংলাদেশ৷
ছাত্র ইউনিয়নের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি লিটন নন্দী ঘটনার যে বর্ণনা দিয়েছেন ডেইলি স্টারে সেটা প্রকাশিত হয়েছে৷ রনি সেটা শেয়ার করেছেন টুইটারে৷
গোপী শাহ ডেইলি স্টারের প্রতিবেদনটি রিটুইট করে লিখেছেন, ‘‘পহেলা বৈশাখে নিগ্রহের শিকার নারী৷ সভ্য সমাজে এটা প্রত্যাশিত নয়৷''
ঢাকা ট্রিবিউন প্রশাসনের অবহেলা নিয়ে একটি বিশেষ প্রতিবেদন করেছে৷
সাজিদুল ইসলাম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এই ঘটনায় প্রগতিশীল শিক্ষার্থীদের প্রতিবাদ কর্মসূচির বিষয়টি শেয়ার করেছেন৷
মতিউর রহমান লিখেছেন, বাংলাদেশের একসময়ের অহংকার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ঘটে যাওয়া এই ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সুনাম ক্ষুন্ন হয়েছে৷
তানিয়া রশীদ পুলিশের অবহেলার বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন৷
শাবহানাজ রশীদ দিয়া সামাজিক মাধ্যমে প্রতিবাদ বিক্ষোভের কথাটি লিখেছেন টুইটারে৷
আব্দুল্লাহ আল নাহিয়ান অপরাধীদের কঠোর শাস্তি দাবি করেছেন৷
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি অভিনু কিবরিয়া ইসলাম বর্তমানে জার্মানিতে আছেন৷ তিনি লিখেছেন, ‘‘ছাত্র ইউনিয়নের নেতৃত্বে সাধারণ শিক্ষার্থীরা দেখিয়ে দিলো তাদের শক্তি৷ প্রখর রোদে ঘণ্টাব্যাপী অপরাজেয় বাংলা থেকে কার্জন হল পর্যন্ত মানবপ্রাচীর করে তারা জানান দিলো আগামীর বার্তা৷ হাজার মাইল দূর থেকেও, আমি যেন তাদের সাথেই আছি! নিপীড়ক ঘৃণ্য জানোয়ারদের উদ্দেশে বার্তা পরিষ্কার,
‘থাকবে না কেউ ঘরে বসে
ফুটবেই ফুল জুঁই শাখে,
দেখবো তোদের মুরোদ কতো
আসছে বছর বৈশাখে৷'
তাহরিমা খান তন্বী ফেসবুক পাতায় জানিয়েছেন নিজের অভিজ্ঞতা৷ লিখেছেন, ‘‘মেয়েদের গায়ে হাত দেয়া, প্রয়োজনে-অপ্রয়োজনে উত্যক্ত করা, এই ঘটনাগুলোর সম্মুখীন যখন নিজে হয়েছি সবসময়েই প্রতিবাদ করেছি৷ কতবড় বোকা ছিলাম!! সেই সামান্য বকাঝকায় এইসব নরপশুদের কিছুই হয় না৷ আমার কাছ থেকে বকা খেয়ে গেছে আরেক মেয়ের গায়ে হাত দিতে৷ যদি সাথে সাথে ধোলাই দিয়ে ১০ দিনের জন্য রোদের মধ্যে সামনে একটা লেখা দিয়ে ‘আমি একজন নারী উত্যক্তকারী … আমি সুযোগ পেলেই মেয়েদের গায়ে হাত দেই' দাঁড় করায় রাখতে পারতাম, আর ওই দশদিন যারাই যেত ওই …বাচ্চার সামনে দিয়ে একটা করে জুতার বারি দিয়ে যেত, তাইলে ওই …বাচ্চা আর এই কাজ করার সাহস পাইত না৷''
তোহা ফারুক লিখেছেন, ‘‘যৌন নিপীড়নের নানা তথ্য একে একে বেরিয়ে আসছে৷ ঘটনা অস্বীকার করা প্রক্টর এখন কি বলবেন? অস্বীকারের ঘটনা অস্বীকার করবেন? ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা কি করবেন? দীর্ঘমেয়াদী আন্দোলনের বিকল্প আছে কি? ঘটনার বিচারের দাবিকে সামনে রেখে আমি আপাতত ব্যর্থ ও মিথ্যাবাদী প্রক্টরকে পদচ্যুত করার দাবি করছি৷ অবশ্যই প্রশাসনের কাছে না৷ তাহারা তো প্রহসন হয়ে আছেন৷ শিক্ষার্থীদের কাছে এ দাবি - নেমে আসুন, নামিয়ে দিন৷''
সাংবাদিক মৌমিতা জান্নাত লিখেছেন, ‘‘বিবেকের তাড়নায় মানববন্ধন, প্রতিবাদ-সমাবেশ সবই করছে৷ কিন্তু আমি জানি লাভ নেই কিছু৷ কিন্তু ক্ষতি অনেক সুদূর প্রসারী৷ আমাদের ঐতিহ্যবাহী উৎসবের এই প্রবল উত্থানকে যারা মানতে পারে না তারা এর গায়ে কালি লেপন করার সুযোগ পেয়ে গেছে৷ রক্ষণশীল বাবা-মায়েরা এই ঘটনার দোহাই পেড়ে তার কন্যা সন্তানটিকে আগামী নববর্ষে ঘরে আটকে রাখবেন৷ সবচেয়ে বেশি সুযোগ নেবে রাষ্ট্র৷ এবার যেমন ছিলো সাড়ে পাঁচটার মধ্যে অনুষ্ঠান শেষ করার নির্দেশ, এরপর হয়তো দুপুর বারোটার মধ্যে সব আনন্দানুষ্ঠান বন্ধ করার আদেশ আসবে৷ মেয়েদের যাওয়ার জায়গার সীমারেখাও টেনে দেওয়া হবে৷ আমাদের করার কিছুই থাকবে না৷''
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষিকা গীতিআরা নাসরিন লিখেছেন, ‘‘মরিচের গুঁড়ো নয়, সেফটিপিন বা কাঁটাকম্পাস নয়, ব্লেড নয়... হাতে শুধু রাখুন ক্যামেরা/ক্যামেরা ওয়ালা সেলফোন, যাতে নির্যাতিত হবার সময় ফটাফট কিছু সেলফি তুলে রাখতে পারেন, নতুবা আপনার নিপীড়নের প্রমাণ কী?''
ইলোরা জামান ফেসবুক পাতায় লিখেছেন, ‘‘কোটি কোটি মানুষ দেখেছে ভিডিও ফুটেজ৷ প্রত্যক্ষদর্শীরা শতাব্দীর জঘন্যতম অসভ্যতা দেখে চুপ থাকতে পারেনি৷ প্রতিবাদ করেছে সাথে সাথে এবং জনসভা করে খুলে বলেছে কি হয়েছে৷ তাদের একজন লিটন নন্দী – যার হাত ভেঙেছে প্রতিবাদ করতে গিয়ে৷''
তিনি আরো লিখেছেন, ‘‘পুলিশের যুগ্ম কমিশনার মনিরুল সাহেব বয়ান দিয়েছেন, বিবস্ত্রের কোনো ঘটনা ঘটেনি৷ যৌন নির্যাতনের ঘটনা ঘটেনি৷ নির্যাতিতা অভিযোগ দায়ের করেনি৷ কিভাবে ভাবেন যে, একজন নারী ওরকম পরিস্থিতিতে স্বাভাবিক থাকতে পারবে? কেন আপনি ধর্ষক নির্যাতনকারীদের বাঁচাতে চাইছেন? কিসের স্বার্থে? যেই জনগণের ট্যাক্সের টাকায় লালিত হয়ে হাসিমুখে এসব অসুস্থ কথা বলছেন সেই জনগণের সাথে এত মস্করা করেন কিভাবে? সরকারের কাছে আবেদন করে লাভ নেই জেনেও করছি, অবিলম্বে এই যুগ্ম কমিশনারকে ক্লোজ করা হোক৷''
সংকলন: অমৃতা পারভেজ
সম্পাদনা: জাহিদুল হক