ন্যাটোর চেয়ে ইইউ প্রতিরক্ষায় বিনিয়োগ দরকার জার্মানির
১২ অক্টোবর ২০১৭জার্মানির প্রতিরক্ষা শিল্পের দু'শোর মতো ঊধ্বর্তন কর্মকর্তার সঙ্গে পরিচালিত এক জরিপে দেখা গেছে যে, তারা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে আর নিজেদের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মিত্র মনে করছে না৷ আর বার্লিনের ন্যাটোর চেয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নের দিকে বেশি মনোযোগী হওয়া উচিত বলেও মনে করেন তাঁরা৷
ব্রাসেলসভিত্তিক থিংক ট্যাংক ‘‘ফ্রেন্ডস অব ইউরোপ'' সম্প্রতি একটি বইসহ জরিপের ফলাফল প্রকাশ করেছে৷ এতে উল্লেখ করা হয়েছে যে, জার্মানিকে দেশটির মিত্ররা প্রতিরক্ষা এবং প্রতিরক্ষা উন্নয়নে উদ্যোগের ইস্যুতে এক ‘ফ্রি রাইডার' হিসেবে বিবেচনা করে, যার অর্থ হচ্ছে, সুবিধা নিলেও এখাতে বিনিয়োগে অনীহা রয়েছে দেশটির৷
লেখক পল টেইলর মনে করেন, গত কয়েক বছরে বিশ্বে যে পরিবর্তন ঘটেছে, তার সঙ্গে জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেলকেও খাপ খাওয়াতে হবে৷ বিশেষ করে, দু'টি ঘটনার কথা উল্লেখ করেন তিনি, যা জার্মানির প্রতিরক্ষার সঙ্গেও সম্পৃক্ত হতে পারে৷ প্রথম ঘটনাটি ঘটে ২০১৪ সালে৷ সে বছর ক্রাইমিয়া দখল করে নেয় রাশিয়া৷ আর ২০১৫ সালে শরণার্থীদের স্রোত নামে ইউরোপের দিকে৷ টেইলর বলেন, ‘‘আপাত দৃষ্টিতে জার্মানিকে ইউরোপের মাঝখানে দেশটির ন্যাটো মিত্র এবং ইইউ সঙ্গী দ্বারা বেষ্টিত মনে হলেও ঘটনা দু'টি দেশটির উপর প্রভাব ফেলেছে৷''
তিনি মনে করেন, জার্মানির প্রকৃত সীমান্ত যাই হোক, কার্যত পুরো শেঙেন অঞ্চলের সুরক্ষায় দেশটির দায়িত্ব রয়েছে যা ম্যার্কেল দেরিতে হলেও অনুধাবন করছেন৷ কিন্তু সমস্যা হচ্ছে, গত কয়েকবছরে জার্মানির সামরিক বাহিনীর বাজেট কমিয়ে কমিয়ে সেটিকে দুর্বল করে ফেলেছেন তিনি৷
অবশ্য একটি দুর্বল বাহিনীকে সবল করতে যে বাজেট প্রয়োজন, তা জার্মানির জন্য কোন সমস্যা নয় বলে মনে করেন টেইলর৷ তাঁর মতে, এখানে মানসিকতাটা গুরুত্বপূর্ণ৷ তিনি বলেন, ‘‘অতীত ইতিহাসের ছায়ার কারণে জার্মানদের জন্য কাজটা কঠিন৷''
উল্লেখ্য, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের উপর আর আস্থা রাখা যাচ্ছে না বলে কয়েক মাস আগে স্বীকার করেছেন জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল৷ ফলে পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে জার্মানি প্রতিরক্ষা খাতের উন্নয়নে নতুন উদ্যোগ নেবে বলেই ধারণা করছেন বিশেষজ্ঞরা৷
প্রতিবেদন: টেরি শুৎস/এআই