ন্যাটো রাশিয়ার নিরাপত্তা নিয়ে চিন্তিত নয়: পুটিন
২ ফেব্রুয়ারি ২০২২ইউক্রেন ঘিরে যে সংকট তৈরি হয়েছে, তার সহজ সমাধান কঠিন। তবে রাশিয়া সবসময়ই আলোচনার মাধ্যমে সমাধান খোঁজার পক্ষপাতি। যদিও একইসঙ্গে একথাও সত্য যে, সমাধানসূত্রে পৌঁছানো কঠিন। প্রায় একমাস পর সাংবাদিকদের সামনে ইউক্রেন সংকট নিয়ে মুখ খুললেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুটিন। তার কথায়, ''ন্যাটো-সহ পশ্চিমা দেশগুলি রাশিয়ার নিরাপত্তার বিষয়টি নিয়ে আদৌ উৎসাহী নয়। ফলে তারা কেবলই রাশিয়ার উপর চাপ সৃষ্টি করার চেষ্টা করছে।'' পুটিনের বক্তব্য, একতরফা ইউক্রেন সমস্যার সমাধান হবে না। সবপক্ষকে সকলের নিরাপত্তা নিয়ে আগ্রহ দেখাতে হবে।
এদিন ন্যাটো এবং অ্যামেরিকার দেওয়া চিঠির প্রসঙ্গ উল্লেখ করেছেন পুটিন। জানিয়েছেন, চিঠির বয়ান খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ঠিক সময়ে উত্তরও দেওয়া হবে। কিন্তু চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে তার প্রাথমিক প্রতিক্রিয়া, চিঠিতে রাশিয়ার আশঙ্কার বিষয়গুলি ধরা হয়নি।
পশ্চিমা দেশগুলির অভিযোগ, পূর্ব ইউক্রেন সীমান্তে রাশিয়া প্রায় এক লাখ সেনা মোতায়েন করেছে। যুদ্ধের মহড়া চলছে। যে কোনোদিন তারা ইউক্রেন আক্রমণ করতে পারে। রাশিয়া অবশ্য বরাবরই বলে এসেছে, ইউক্রেন আক্রমণ করার জন্য ওই সেনা মোতায়েন করা হয়নি। নিজেদের আত্মরক্ষার্থে সেনা সাজিয়েছে রাশিয়া। তবে পূর্ব ইউক্রেনের বিতর্কিত অঞ্চলে রাশিয়া সেনা ঢুকিয়ে দিতে পারে, এ আশঙ্কা আছে। রাশিয়া আগ্রাসী হলে তার ফল ভালো হবে না বলে স্পষ্ট হুমকি দিয়ে রেখেছে ন্যাটো-সহ অধিকাংশ পশ্চিমা দেশ এবং অ্যামেরিকা। রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী এতদিন এর উত্তর দিচ্ছিলেন। এবার মুখ খুললেন প্রেসিডেন্ট।
পুটিন জানিয়েছেন, রাশিয়া বরাবরই শান্তিপূর্ণ আলোচনার পক্ষপাতী। তারা যুদ্ধের বিরোধী। সাম্প্রতিক বিষয়টি নিয়েও তারা আলোচনা করতে আগ্রহী। কিন্তু সেখানে রাশিয়ার স্বার্থের কথাও আলোচনায় রাখতে হবে। এ কথা বলেই পুটিন স্পষ্টই জানিয়ে দিয়েছেন, সাম্প্রতিক বিষয়টি নিয়ে সমাধানসূত্রে পৌঁছানো কঠিন।
ইউক্রেনকে ন্যাটোর সদস্য করা হবে কি না, এ নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই টালবাহানা চলছে। ২০০৮ সালে ন্যাটো জানিয়েছিল, ইউক্রেন ন্যাটোর সদস্য হতে পারে। কিন্তু গত ১৩ বছরে তা বাস্তবে করা সম্ভব হয়নি। বরাবরই রাশিয়া এর বিরোধিতা করে এসেছে। সাম্প্রতিক বিতর্কে রাশিয়া এই বিষয়টিকে বড় করে দেখছে। এবং ইউক্রেনকে ন্যাটোর সদস্য করলে তাদের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হবে হবে বলে স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে।
চলতি সপ্তাহেই পুটিনের সঙ্গে দেখা করেছেন হাঙ্গেরির প্রেসিডেন্ট। হাঙ্গেরি রাশিয়াকে সমর্থন করছে বলে ইঙ্গিত মিলেছে। তারপরেই এদিন সাংবাদিকদের সামনে মুখ খুললেন পুটিন। ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট মাক্রোঁকে আলোচনায় আহ্বানও জানিয়েছেন তিনি।
এসজি/জিএইচ (রয়টার্স, এএফপি, ডিপিএ)