ওয়াশিংটনের সঙ্গে সংঘাত
১৫ আগস্ট ২০১৮ওয়াশিংটন থেকে প্রবল চাপের মুখে পড়ে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রেচেপ তাইয়িপ এর্দোয়ান এবার পালটা পদক্ষেপ নিলেন৷ তিনি অ্যামেরিকায় তৈরি ইলেকট্রনিক পণ্য বর্জন করার ডাক দেবার পাশাপাশি সে দেশ থেকে গাড়ি, তামাক, মদসহ বেশ কয়েকটি পণ্যের আমদানির ক্ষেত্রে শুল্কের হার দ্বিগুণ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন৷
অ্যামেরিকায় তৈরি অ্যালকোহলযুক্ত পানীয়র ক্ষেত্রে ১৪০ গুণ শুল্ক বাড়ানো হয়েছে, গাড়ির ক্ষেত্রে তা ১২০ শতাংশ৷ প্লাস্টিক ও কয়লার ক্ষেত্রেও শাস্তিমূলক শুল্ক চাপিয়েছেন এর্দোয়ান৷ উল্লেখ্য, এর আগে মার্কিন প্রশাসন তুরস্ক থেকে ইস্পাত ও অ্যালুমিনিয়াম আমদানির ক্ষেত্রে বাড়তি শুল্ক চাপিয়েছিল৷
প্রেসিডেন্ট এর্দোয়ান ও তাঁর প্রশাসন সংকট কাটাতে এখনো নমনীয় হতে প্রস্তুত নন৷ জাতীয় ঐক্যের ডাক দিয়ে বরং তিনি সংঘাতের পথেই থাকছেন৷ বিদেশি পণ্যের উপর নির্ভরতা কমাতে দেশকে স্বয়ংসম্পূর্ণ করার উপর জোর দিয়েছেন তিনি৷ ন্যাটো সদস্য দেশ হওয়া সত্ত্বেও রাশিয়া ও চীনের সঙ্গে নতুন জোট গড়ার হুমকিও দিয়েছেন এর্দোয়ান৷
আর্থিক ও অর্থনৈতিক সংকটের জের ধরে তুর্কি লিরার বিনিময় মূল্য চলতি বছরে প্রায় ৪০ শতাংশ কমে গেছে৷ মঙ্গলবার লিরা আবার কিছুটা মাথা তুলে দাঁড়ালেও সমস্যা এখনো রয়ে গেছে৷ তুরস্কের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পদক্ষেপ সত্ত্বেও বাজারে অনিশ্চয়তা কাটছে না৷ অনেক বিশেষজ্ঞ সংকট কাটাতে কড়া আর্থিক নীতি ও কড়া হাতে সরকারি ব্যয় নিয়ন্ত্রণের পরামর্শ দিচ্ছেন৷
এদিকে ওয়াশিংটনে মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক মুখপাত্র বলেন, তুরস্কের অর্থনৈতিক দুরবস্থা মোটেই মার্কিন নিষেধাজ্ঞার কারণে শুরু হয়নি৷ অর্থনীতিবিদদের প্রশ্ন করলেও তাঁরা বলবেন, যে সাম্প্রতিক মার্কিন নীতি ও সেগুলি কার্যকর করার সঙ্গে তুরস্কের ঘটনাবলির সম্পর্ক নেই৷
এদিকে হোয়াইট হাউস জানিয়েছে, তুরস্কে আটক মার্কিন যাজক ব্রানসনসহ অন্যান্য মার্কিন নাগরিক ও দূতাবাস কর্মী এখনো মুক্তি না পাওয়ায় প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প অত্যন্ত হতাশ হয়েছেন৷ ব্রানসন মুক্তি না পেলে আরও কড়া অর্থনৈতিক চাপের ইঙ্গিত দিয়েছে মার্কিন প্রশাসন৷
গত সোমবার মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জন বোল্টন ওয়াশিংটনে তুরস্কের রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে মার্কিন যাজক ব্রানসনের বিষয়ে আলোচনা করেন৷ তুরস্কের সরকার এখনো পর্যন্ত সে দেশের বিচার ব্যবস্থায় হস্তক্ষেপ করতে অস্বীকার করছে৷
এসবি/এসিবি (রয়টার্স, ডিপিএ)