1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ন্যানো প্রযুক্তির দিকে ঝুঁকছে বিশ্ব

১৪ জুলাই ২০১০

ক্ষুদ্র থেকে ক্ষুদ্রতর হচ্ছে এখন বিজ্ঞানের গবেষণার বিষয়৷ মাইক্রো থেকে এখন ন্যানো’র দিকে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির চোখ৷ গোটাবিশ্বকে যেমন নিয়ে আসা হচ্ছে আরো কাছাকাছি, তেমনি প্রযুক্তি আর পণ্যকেও করে তোলা হচ্ছে সূক্ষ্মতর৷

https://p.dw.com/p/OIUK
nano, technology, Science, Bangladesh, Germany, ন্যানো প্রযুক্তি

বর্তমানে বিজ্ঞানীরা বেশি মনোযোগ দিচ্ছেন ন্যানো প্রযুক্তির দিকে৷ কারণ ন্যানো প্রযুক্তির সফল প্রয়োগ চিকিৎসা বিজ্ঞান থেকে শুরু করে ইলেক্ট্রনিক পণ্যের ব্যবহার করবে সহজতর৷ দেহে কোন কাটা-ছেঁড়া না করেই সারানো যাবে ক্যান্সারের মতো মারাত্মক ব্যাধি৷ আস্তো একটা কম্পিউটার ভাঁজ করে পকেটে পুরে চলা যাবে৷ এতো বেশি সূক্ষ্ম ক্যামেরা দিয়ে ছবি উঠবে যা হয়তো চোখেই পড়বো না কারো৷ আর ন্যানো প্রযুক্তির প্রয়োগে খাদ্যশস্যকে করা যাবে আরো কয়েকগুণ পুষ্টিসমৃদ্ধ৷ হয়তো ন্যানোপুষ্টি সমৃদ্ধ এক কাপ খাবার খেলেই দিব্যি কেটে যাবে সারাটা দিন৷ বিজ্ঞানীরা এসব সম্ভাবনাকে বাস্তব রূপ দিতেই চালিয়ে যাচ্ছেন গবেষণা৷

জার্মানির কার্লসরুয়ে ন্যানো প্রযুক্তির বিভিন্ন দিক নিয়ে অনুষ্ঠিত হলো প্রথম আন্তর্জাতিক বৈজ্ঞানিক সম্মেলন৷ ধাতব পদার্থ বিজ্ঞানের যেসব উপাদান ন্যানো প্রযুক্তিতে কাজে লাগানো হচ্ছে সেসব বিষয় উঠে আসে এই সম্মেলনে৷ এছাড়া জ্বালানির চাহিদা মেটাতে ন্যানো প্রযুক্তি প্রয়োগের নানা দিক নিয়ে আলোচনা করেন বিজ্ঞানীরা৷ বিশেষ করে জলবায়ু পরিবর্তন রোধেই বিকল্প জ্বালানির সন্ধানে নেমেছে বিজ্ঞানীরা৷ ফলে এখন ন্যানো জ্বালানিকেই ভাবা হচ্ছে অন্যতম বিকল্প জ্বালানি হিসেবে৷

অঙ্কের হিসাবে এক মিটারের এক বিলিয়ন ভাগের এক ভাগ হচ্ছে এক ন্যানো মিটার৷ আরো সহজ করে বলতে হলে, একটি চুলের আশি হাজার ভাগের এক ভাগ হচ্ছে এক ন্যানো৷ ফলে এখন পর্যন্ত সবচেয়ে ক্ষুদ্রতম এককটিই ন্যানো৷ আর ন্যানো প্রযুক্তির প্রাথমিক ধারণা সম্পর্কে রেজাউল করিম বলেন, ন্যানো শব্দের অর্থ হচ্ছে খুবই ছোট৷ বিশ্বের উন্নত দেশগুলো ন্যানোটেকনোলজি নিয়ে খুবই কাজ করছে৷ বিশেষ করে আমেরিকা, জাপান, জার্মানি, ফ্রান্স এবং ইংল্যান্ড৷ ন্যানো টেকনোলজিতে ন্যানো ডিভাইসগুলো খুব ছোট হবে, কিন্তু ক্যাপাসিটি অনেক বেশি হবে৷ আর কর্মক্ষমতাও হবে অনেক বেশি৷ গতিও থাকবে অনেক, বিশেষ করে যদি ইলেক্ট্রনিক পণ্যের কথা বিবেচনা করা হয়৷

এই সম্মেলনে যোগ দেন তুরস্কের ইস্তানবুলে ন্যানো প্রযুক্তি নিয়ে গবেষণারত বাংলাদেশি বিজ্ঞানী রেজাউল করিম৷ ন্যানো প্রযুক্তি মানবজাতির জন্য কী ধরণের উপকারে আসবে, এ বিষয়ে করিম বলেন, চিকিৎসা বিজ্ঞানের কাজে ন্যানো প্রযুক্তি খুব বেশি ব্যবহার করা যাবে৷ ক্যান্সারের চিকিৎসার জন্য কাজে লাগবে৷ এছাড়া ন্যানো প্রযুক্তির প্রয়োগ করতে পারলে ওপেন হার্ট সার্জারি করা লাগবে না৷ হৃদপিণ্ডে ব্লক হলে সার্জারি করা হতো কিংবা রিং পরানোর ব্যবস্থা করা হতো৷ কিন্তু এখন আমরা যদি ধমনির ভেতর দিয়ে ন্যানো পার্টিকেল প্রবেশ করায় এবং বায়োসেন্সর দিয়ে বাইরে থেকে সেটা নিয়ন্ত্রণ করি তাহলেই আমরা এই ব্লকগুলো খুলতে পারি৷ ইলেক্ট্রনিক্সে ব্যবহার করা যাবে৷ যেমন উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, মোবাইল ফোন, আই পড কিংবা কম্পিউটারের কথা৷ এগুলোতে যদি আমরা ন্যানো সোলার সেল ব্যবহার করতে পারি তাহলে এগুলো আরো অনেক ছোট হয়ে যাবে৷

তবে বিজ্ঞানের বড় বড় আবিষ্কারগুলো যেমন আশীর্বাদ বয়ে এনেছে বিশ্বের জন্য, তেমনি ঘটেছে বিভিন্ন সময় নানা ধ্বংসাত্মক ঘটনা৷ ঘটেছে পারমাণবিক দুর্ঘটনা আবার আণবিক বোমার অপব্যবহার৷ করিমের মতে, তাই ন্যানো প্রযুক্তিও যেন মানব সমাজের জন্য এমন কোন ক্ষতির কারণ না হয় সেদিকে বিশেষভাবে খেয়াল রাখতে হবে৷

প্রতিবেদন: হোসাইন আব্দুল হাই

সম্পাদনা: আব্দুল্লাহ আল-ফারূক