ন্যাশনাল জিওগ্র্যাফিকের ‘আফগান মেয়ে' গ্রেপ্তার
২৭ অক্টোবর ২০১৬পেশাওয়ারে ভুয়া আইডি কার্ডের জন্য গ্রেপ্তার করা হয়েছে তাঁকে৷
ন্যাশনাল জিওগ্র্যাফিক ম্যাগাজিনের প্রচ্ছদে ছবি ছাপা হওয়ার পর থেকে শরবত গুলা সারা বিশ্বেই পরিচিত৷ কিশোরী শরবতের বিস্ফারিত সবুজ চোখে এমন কিছু একটা ছিল, যা ভোলার নয়৷
ম্যাককারি ১৭ বছর ধরে খোঁজখবর করার পর আবার শরবত গুলার খোঁজ পান ২০০২ সালে, আফগানিস্তানের এক প্রত্যন্ত গ্রামে৷ শরবত গুলা তখন এক রুটি তৈরি কারিগর, অর্থাৎ তন্দুরওয়ালার স্ত্রী ও তিন সন্তানের জননী৷
পরে শরবত গুলা তাঁর স্বামীর সঙ্গে পেশাওয়ারে যান৷ সেখানেই বুধবার সকালে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয় পাকিস্তানি আইডি কার্ড জাল করার দায়ে৷ পাকিস্তানের ফেডারেল ইনভেস্টিগেটিভ এজেন্সি ‘ফিয়া' নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে বাড়িতে ঢুকে খানাতল্লাসি করে ও দরকারি কাগজপত্র ছাড়া ২,৮০০ ডলার নিয়ে যায় বলে অভিযোগ করেছেন গুলার দেবর শাহশাদ খান৷ গুলাকে পেশাওয়ারের কারাগারে রাখা হয়েছে৷ শাহশাদ খান বলেন, ‘‘গুলা উদ্বাস্তু হতে পারেন না; তিনি বৈধভাবে পাকিস্তানে রয়েছেন, কেননা তিনি শাহশাদ খানের ভাই রহমত খানের বিবাহিত পত্নী৷'' রহমতের জন্ম পাকিস্তানে৷ তিনি পাঁচ বছর আগেই পরলোকগমন করেছেন৷
গুলা দৃশ্যত ২০১৪ সালের এপ্রিল মাসে পেশাওয়ারে পাকিস্তানি আইডি কার্ডের আবেদনপত্র দাখিল করেন ‘শরবত বিবি' নাম দিয়ে৷ হাজার হাজার আফগান উদ্বাস্তু এভাবে ন্যাশনাল ডাটাবেজ রেজিস্ট্রেশন অথরিটি বা ‘নাদ্রা'-কে ফাঁকি দিয়ে পাকিস্তানি আইডি কার্ড সংগ্রহ করেছে৷নাদ্রার ১৮ জন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে বিদেশিদের পাকিস্তানি আইডি কার্ড দেওয়ার অভিযোগের তদন্ত চলেছে৷
গুলার বিরুদ্ধে জাল পরিচয় পত্রের অভিযোগ প্রমাণিত হলে তাঁর ১৪ বছর অবধি কারাদণ্ড হতে পারে৷
গুলার গ্রেপ্তারের পর ম্যাককারি ইনস্টাগ্রামে লিখেছেন, ‘‘আমি সে (গুলা) ও তাঁর পরিবারকে আইনগত ও আর্থিক সাহায্য দেবার জন্য যাবতীয় কিছু করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ৷'' ম্যাককারি গুলার গ্রেপ্তারিকে ‘মানবাধিকারভঙ্গের একটি অসাধারণ ঘটনা' বলে অভিহিত করেছেন৷
১৯৭৯ সালে আফগানিস্তানে সোভিয়েত অনুপ্রবেশের পর থেকে লক্ষ লক্ষ আফগান পাকিস্তানে পলায়ন ও আশ্রয়লাভ করে৷ ইউএনএইচসিআর-এর পরিসংখ্যান অনুযায়ী, পাকিস্তানে রেজিস্ট্রিকৃত আফগান উদ্বাস্তুদের সংখ্যা ১৪ লাখ৷ এছাড়া দশ লাখ আফগান উদ্বাস্তু অবৈধভাবে সে দেশে রয়েছেন৷
এসি/এসিবি (রয়টার্স, এএফপি, এপি)