নয়াপল্টনেই সমাবেশ চায় বিএনপি, বিকল্প চায় পুলিশ
২৬ অক্টোবর ২০২৩বৃহস্পতিবার পল্টন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে উদ্দেশ্য করে দেয়া চিঠিতে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভি জানিয়েছেন নয়াপল্টনেই তারা সমাবেশ করতে চান৷ তিনি উল্লেখ করেন, ২৮ অক্টোবরের সমাবেশ বিএনপির প্রধান কার্যালয়ের সামনে আয়োজনের সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে৷ অন্য কোনো ভেন্যুতে যাওয়া সম্ভব না৷
এর আগে বিএনপির কাছে পাঠানো চিঠিতে পল্টন থানা নিরাপত্তাজনিত কারণে নয়াপল্টনে সমাবেশের অনুমতি না দেয়া গেলে বিকল্প দুইটি স্থানের নাম জানতে চেয়েছে ৷
এছাড়াও চিঠিতে সমাবেশ বিষয়ে আরো ছয়টি তথ্য জানতে চেয়েছে তারা৷ সেগুলো হলো: সমাবেশে লোকসমাগম কখন শুরু হবে এবং কখন শেষ হবে, কী পরিমাণ লোকসমাগম হবে, সমাবেশটি নয়াপল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে ঠিক কোন কোন স্থান পর্যন্ত বিস্তৃত হবে, সমাবেশে বক্তব্য প্রচারের জন্য কোন কোন স্থানে মাইক স্থাপন করা হবে, অন্য কোনো রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরা এতে অংশগ্রহণ করবেন কি না এবং সমাবেশে অভ্যন্তরীণ শৃঙ্খলা রক্ষার জন্য নিজস্ব স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগ করা হবে কি না, হলে তার সংখ্যা কত?
জবাবে বিএনপি জানায়, তাদের সমাবেশ দুপুর ২টায় শুরু হবে এবং মাগরিবের আজানের আগে শেষ হবে, এতে এক থেকে সোয়া এক লাখ লোক হতে পারে৷ সমাবেশটি পশ্চিমে বিজয়নগর মোড় ও পূর্বে ফকিরাপুল মোড় পর্যন্ত বিস্তৃত হতে পারে৷ কর্মসূচির জন্য পশ্চিমে বিজয়নগর মোড় ও পূর্বে ফকিরাপুল মোড় পর্যন্ত কিছুদূর অন্তর অন্তর মাইক লাগানো হবে, এতে বিএনপির নেতাকর্মী ছাড়া অন্য কোনো রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরা অংশগ্রহণ করবেন না৷ সমাবেশের অভ্যন্তরীণ শৃঙ্খলা রক্ষার জন্য দলের নিজস্ব স্বেচ্ছাসেবকcরা দায়িত্ব পালন করবেন, যার সংখ্যা হবে ৫০০৷
হামলা হলে কর্মীরা বসে থাকবে না: ওবায়দুল কাদের
বৃহস্পতিবার বঙ্গবন্ধু টানেলের উদ্বোধন উপলক্ষে রাজধানীর বনানী সেতু ভবনে সংবাদ সম্মেলনে গণমাধ্যমকর্মীদের প্রশ্নের জবাবে তিনি ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘‘তারা (বিএনপি) প্রতিশোধ নেবে, প্রতিরোধ করবে, তার মানে তারা ভায়োলেন্সে যাবে৷ দ্য অ্যানসার অব ভায়োলেন্স ইজ নট সাইলেন্স৷ দ্য অ্যানসার অব ভায়োলেন্স ইজ ভায়োলেন্স৷ মুক্তিযুদ্ধ, একাত্তরের চেতনা তারা ধারণ করে না৷ তারা সাতচল্লিশের চেতনা ধারণ করে৷ দ্বিজাতি তত্ত্বের যে কনসেপ্ট, সেটা তারা ধারণ করে৷''
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘‘আমরা শান্তি সমাবেশ করব এবং এ পর্যন্ত আমরা অনেকগুলো শান্তি সমাবেশ ঢাকার বাইরে করেছি, এই নগরীতে সবচেয়ে বেশি করেছি৷ বিএনপিও সমাবেশ করেছে, বিক্ষোভ করেছে৷ তবে আমাদের প্রতিটি শান্তি সমাবেশ শান্তি সমাবেশই ছিল৷ আমরা কখনো বিএনপির কোনো সভা-সমাবেশের ওপর আওয়ামী লীগ কোনো প্রকার হামলা বা কোনো প্রকার আক্রমণ আমরা কখনো করিনি৷ এখন যদি তারা গায়ে পড়ে আমাদের ওপর আক্রমণ করতে আসে, তখন আমরা চুপচাপ বসে থাকব? আমাদের কর্মীরা কি তখন শান্ত থাকবে? শান্তি সমাবেশে যদি হামলা হয়, তাহলে কী হবে? কর্মীরা বসে থাকবে না৷ পাল্টা হামলা অবশ্যই করবে৷ আমরা তাদের সভাস্থলে গিয়ে তাদের হামলা করতে যাব না, এ পর্যন্ত আমরা এটা করিনি এবং এটা আমরা করব না৷''
বিএনপির সমাবেশের দিনই আওয়ামী লীগের সমাবেশ দেওয়ার বিষয়ে গণমাধ্যমকর্মীরা জানতে চাইলে ক্ষমতাসীন দলের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘‘২০১৪ সাল, ২০১৫ সালে তারা যেটা করেছে, তারা আন্দোলনের নামে সন্ত্রাস করতে চায়, তারা যদি সন্ত্রাস করতে আসে, আমরা সরকারে আছি, সরকারি দল হিসেবে জনগণের জানমাল রক্ষার দায়িত্ব আমাদের আছে৷ সেজন্য আমরা অবস্থান নেই৷ আমরা তাদের ওপর আক্রমণ করি না৷''
২৮ অক্টোবর ঘিরে মানুষের মধ্যে আতঙ্ক আছে উল্লেখ করে তা নিয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘‘আতঙ্ক এ দেশে সব সময় থাকে... রাজনীতিতে আতঙ্ক-ভয়ভীতি থাকবেই৷ এর মধ্যেই তো বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে৷ এর মধ্যেই তো বাংলাদেশে সবকিছু হয়ে যাচ্ছে৷''
এমকে/কেএম (দ্য ডেইলি স্টার)