পঞ্চায়েত ভোটের প্রচারে বোমা, গুলি চলছেই, নিহত তিন
৩ জুলাই ২০২৩গত তিনদিনে তিনজন রাজনৌতিক কর্মীর মৃত্যু হয়েছে। বাসন্তীতে একজন তৃণমূল কর্মী খুন হয়েছেন। হাড়োয়ায় বোমা ফেটে এক তৃণমূল কর্মীর মৃত্যু হয়েছে। অভিযোগ, বোমা বানাতে গিয়ে বিস্ফোরণ ঘটে। পুরুলিয়ার মানবাজারে একজন বিজেপি নেতার দেহ নদীর কাছে পড়ে থাকতে দেখা যায়। পরিবারের অভিযোগ, তাকে খুন করেছে তৃণমূল।
মুর্শিদাবাদের শামসেরগঞ্জে এক কংগ্রেস নেতা গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। সেই ঘটনায় জড়িত সন্দেহে তৃণমূলের একজন বুথ সভাপতিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
মুর্শিদাবাদের রানিনগরে বাম ও কংগ্রেসের প্রার্থীদের বাড়ি ভাঙচুর করা হয়। অভিযোগের আঙুল তৃণমূলের দিকে। অভিয়োগ অস্বীকার করেছে শাসক দল।
বীরভূমের দুবরাজপুর থেকে ১৫-১৬টি তাজা বোমা উদ্ধার করেছে পুলিশ। হুগলির চণ্ডীতলায় সিপিএম ও আইএসএফের মিছিলে হামলা করা হয়েছে। ভরতপুর থানায় আগ্নেয়াস্ত্র-সহ এক ব্যক্তিকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে।
হাড়োয়ার ঘটনা
হাড়োয়ায় সুতিপুকুর গ্রামে পুকুরের ধারে এক তৃণমূল কর্মী পরিতোষ মণ্ডলের ছিন্নভিন্ন দেহ পাওয়া যায়। স্থানীয় মানুষের দাবি, বোমা বাঁধতে গিয়ে বিস্ফোরণ হয়। তাতে পরিতোষের একটা হাত উড়ে যায়. দেহের বিভিন্ন জায়গায় বোমার টুকরো বিঁধে যায়। চারজন আহতও হয়েছেন। পুলিশ ময়না তদন্তের জন্য দেহ নিয়ে গেছে।
পরিবারের অভিযোগ, পরিতোষকে খুন করা হয়েছে এবং বিরোধীরারা এই কাজ করেছে।
বিজেপি কর্মীর দেহ
পুরুলিয়ার মানবাজারে বিজেপি নেতা বঙ্কিম হাঁসদার দেহ নদীর ধারে পড়ে থাকতে দেখা যায়। বিজেপি-র অভিযোগ, তৃণমূলের গুণ্ডারা তাকে খুন করেছে। নির্বাচনের আগে সন্ত্রাস তৈরির জন্য এই কাজ করা হয়েছে।
তৃণমূল অভিয়োগ অস্বীকার করে বলেছে, বিজেপি মিথ্যা কথা বলে বাজার গরম করার চেষ্টা করছে।
রাজ্যপাল বাসন্তীতে
সোমবার সকালে উত্তরবঙ্গ থেকে কলকাতা ফেরেন রাজ্যপাল। তিনি ট্রেনে ফিরেছেন। শিয়ালদহ স্টেশন থেকে তিনি ,সোজা চলে যান বাসন্তীতে, মৃত তৃণমূল কর্মীর বাড়িতে। এর আগে তিনি উত্তবঙ্গের দিনহাটায় নিহত বিজেপি কর্মীর বাড়িতে গিয়েছিলেন। তখন তৃণমূল অভিযোগ করেছিল, তাদের দলের কর্মী খুন হলে তো রাজ্যপাল সেখানে যান না।
তারপরই রাজ্যপাল সিদ্ধান্ত নেন, তিনি বাসন্তীতে মৃত তৃণমূল কর্মীর বাড়ি যাবেন। সেইমতো কলকাতা পৌঁছেই সোজা বাসন্তীতে মৃত জিয়ারুল মোল্লার পরিবারের সঙ্গে দেখা করেন। মোল্লার পরিবারও রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করতে চেয়েছিল। তারা জানিয়েছে, পুলিশের উপর তাদের আস্থা নেই, রাজ্যপালের উপর আছে।
বাসন্তীতে পৌঁছে রাজ্যপালের গাড়ি জিয়ারুলের বাড়ি পর্যন্ত যেতে পারেনি। কারণ, রাস্তা সরু। রাজ্যপাল হেঁটেই যান। যেখানে জিয়ারুলকে খুন করা হয়েছিল, সেই জায়গাও দেখেন। সাধারণ মানুষ রাজ্যপালের কাছে সহিংসতার অভিযোগ জানাতে থাকেন। রাজ্যপাল বলেন, কিছু হলেই রাজভবনের কন্ট্রোল রুমে জানাতে।
বিজেপি-র সহ সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেছেন, ''যার অশান্তি থামানোর কথা, তিনি বাড়িচ্ছেন। আর রাজ্যপাল গোটা রাজ্যে যাচ্ছেন, মানুষের পাশে দাঁড়াতে। দুয়ারে রাজ্যপালকে দেখছি আমরা।''
তৃণমূলের নেতা জয়প্রকাশ মজুমদার বলেছেন, ''রাজ্যপাল বিজেপি নেতার মতো আচরণ করছেন। তার উচিত রাজ্য সরকারকে সাহায্য করা। কিন্তু তিনি তৃণমূলের মধ্যে ভাঙন ধরাতে চাইছেন।''
জিএইচ/এসজি)পিটিআই, আনন্দবাজার, টিভি৯)