1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

পরমতসহিষ্ণু সমাজের প্রত্যাশা

১৪ এপ্রিল ২০২২

করোনা মহামারি কাল পেরিয়ে এবার দুই বছর পর বাংলা নববর্ষ বাইরে উৎসব আয়োজনের মধ্য দিয়ে পালিত হলো। রমনা বটমূলে ছায়ানটের বর্ষবরণ আর চারুকলার মঙ্গল শোভাযাত্রা- এই দুই প্রধান আয়োজনে হয়েছে এবারের বর্ষবরণ।

https://p.dw.com/p/49xGh
Bangladesch | Bengalische Neujahrfeierlichkeiten in Dhaka
ছবি: Sazzad Hossain/DW

আর এই বাংলা নববর্ষ ১৪২৯ সালের পহেলা বৈশাখে একটি পরমতসহিষ্ণু, অসাম্প্রদায়িক এবং গণতান্ত্রিক বাংলাদেশের প্রত্যাশা করেছেন সব শ্রেণি ও পেশার মানুষ। তাদের কথা বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িক অপশক্তি মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে চাইছে। গণতন্ত্র সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। সাধারণ মানুষ তেমন ভালো নেই। এই পরিস্থিতি কাটিয়ে এক সর্বজনীন এবং প্রগতিশীল বাংলাদেশের প্রত্যাশা করেন তারা।

তিতুমীর কলেজের ছাত্র মামুন সোহাগ বলেন,"বাংলা নববর্ষ একটি সর্বজনীন উৎসব। কিন্তু এই উৎসব নিয়েও আমরা সামাজিক যোগাযোগমধ্যমসহ নানা জায়গায় সমালোচনা ও কটূক্তি দেখতে পাই। এটা আমাদের আতঙ্কিত করে। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টের পাঁয়তারা দেখতে পাই। আমরা চাই এটা যেন না হয়। বাংলাদেশে আমরা সব ধর্ম  সব মানুষের মধ্যে সম্প্রীতির বন্ধন দেখতে চাই।”

একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত অংকন রোজারিও বলেন,"যেকোনো মূল্যে আমাদের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষা করতে হবে। বাংলা নববর্ষ অসাম্প্রদায়িক চেতনার উৎস। এটা আমাদের মনে রাখতে হবে।”

করোনার দুই বছর পর এবার বাইরে বাংলা নববর্ষ বরণ করা হলেও নিরাপত্তা ছিলো ব্যাপক। দপুর দুইটার মধ্যে সব অনুষ্ঠান শেষ করার নির্দেশনা ছিলো।  এটা অনেকেই ভালোভাবে নেননি। তাদের কথা বাংলা নববর্ষ উদযাপনে কিসের এত আতঙ্ক! সমাজে ভয় আর আতঙ্ক ঢুকে গেছে। একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক পিংকি ভৌমিক বলেন, "আমার মধ্যে এক ধরনের ভয় আর আতঙ্ক কাজ করে। আমি নিরাপত্তাহীনতা দেখছি। মানুষের মধ্যে এক ধরনের দূরত্ব তৈরি হচ্ছে। এই দূরত্ব দূর করতে হবে। বাংলা নববর্ষ সেই দূরত্ব দূর করতে পারে। এটা এমন একটা অনুষ্ঠান, উৎসব যেখানে ধর্মের কোনো প্রভাব নেই। নেই কোনো সাম্প্রদায়িকতা।”

দেশের সাধারণ মানুষ এখন নানা সংকটে আছে। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, দরিদ্র্য একটি অস্বস্তিকর পরিবেশ তৈরি করছে বলে মনে করেন পোশাক শ্রমিক নেতা সিরাজুল ইসলাম রনি। তিনি বলেন,"করোনার ধকল কাটিয়ে উঠলেও শ্রমিকরা ভালো নেই। কারণ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বেড়ে গেছে। আয় বাড়েনি। এই পহেলা বৈশাখ তাদের জন্য কোনো সুখবর বয়ে আনেনি। নতুন বছরে তারা যেন ভালো থাকেন এই প্রত্যাশা করি।”

সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স

বাংলাদেশের রাজনীতিতে এখন এক সংকট কাল চলছে। এই সংকট থেকে নতুন বছরে উত্তরণের আশা করেন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স। তিনি বলেন,"দেশে আইনের শাসন নেই, মানবাধিকার নেই, গণতন্ত্র নেই, মানুষের ভোটের অধিকার নেই। এগুলো ফিরিয়ে আনতে হবে। এগুলো ফিরিয়ে আনার পথে অনেক বাধা আছে। সেই বাধা আমাদের অতিক্রম করতে হবে।নতুন বছরে সেই বাধা অতিক্রম করে গণতন্ত্রের  জন্য আমাদের চেষ্টা অব্যাহত থাকবে।”

তিনি বলেন,"দেশের বাইরেও বাংলাদেশের মানবাধিকার ও গণতান্ত্রিক পরিস্থিতি নিয়ে কথা হচ্ছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বলছে। তারা র‌্যাবের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে।”

আর নৌ পরিবহন প্রতিমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ মাহমুদ চৌধুরী মনে করেন,"দেশ সঠিক পথেই এগিয়ে যাচ্ছে। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলার দিকে এগিয়ে যাচ্ছে দেশ। একটি অসম্প্রদায়িক বাংলাদেশের যে স্বপ্ন তা সফল হচ্ছে। বাংলা নববর্ষে সেই স্বপ্ন পুরণে আরো এগিয়ে যাব আমরা। যারা দেশে গণতন্ত্রহীনতা দেখতে পান, সমস্যা দেখতে পান সমস্যা আসলে তাদের মধ্যে। তারা নিজেদের সমস্যা এখন অন্যদের ওপর চাপিয়ে দিচ্ছেন।”

মানবাধিকার কর্মী নূর খান মনে করেন,"বাংলা নববর্ষের আদর্শিক ও সাংস্কৃতিক দিকে ভাটার টান লক্ষ্য করা যাচ্ছে। আমরা সাজসজ্জায় নজর দিচ্ছি। কিন্তু অসাম্প্রদায়িক এবং গণতান্ত্রিক বাংলাদেশের লক্ষ্য থেকে পিছিয়ে পড়ছি। সুশাসন, মানবাধিকার, ভোটাধিকার এগুলো কেতাবি শব্দে পরিণত হয়েছে। বাংলাদেশের স্বাধীনতার মূল লক্ষ্য ছিলো এগুলো।”

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য