পরমাণু অস্ত্র ত্যাগ করতে চলেছেন কিম?
১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৮মঙ্গলবার ৩ দিনের পিয়ং ইয়ং সফরে যাচ্ছেন দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট মুন জে ইন৷ সেখানে উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উন-এর সঙ্গে বৈঠকে তিনি পরমাণু নিরস্ত্রীকরণ সংক্রান্ত আলোচনার ক্ষেত্রে অগ্রগতির চেষ্টা করতে চান৷ আনুষ্ঠানিকভাবে শীর্ষ বৈঠকের আলোচ্য বিষয় স্থির না হলেও পরমাণু অস্ত্রের ভবিষ্যৎই প্রধান বিষয় হতে চলেছে বলে ধরে নেওয়া হচ্ছে৷ উত্তর কোরিয়া এক ধাক্কায় সব পরমাণু অস্ত্র ধ্বংস করে ফেলবে, এমনটা কেউ আশা করছে না৷ তবে উত্তর কোরিয়া কিছু পরমাণু অস্ত্র ধ্বংস করলে তার বদলে অ্যামেরিকার কাছ থেকে কিছু আস্থাবর্ধক পদক্ষেপ আদায় করতে চান মুন জে ইন৷
উত্তর কোরিয়া সাড়ম্বরে দক্ষিণ কোরিয়ার প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানানোর আয়োজন করেছে৷ তবে প্রতীকী উষ্ণতার পাশাপাশি দুই নেতার উপর অগ্রগতির জন্য যথেষ্ট চাপ কাজ করবে৷ মুন জে ইন এর আগেও পরমাণু নিরস্ত্রীকরণের প্রশ্নে কিম জং উনের সুর নরম করতে সফল হয়েছিলেন৷ এবার সেই লক্ষ্যে সুস্পষ্ট পদক্ষেপের রূপরেখা স্থির করতে চান তিনি৷
উত্তর কোরিয়া পরমাণু অস্ত্র ত্যাগ করলে সেই পদক্ষেপকে বিশাল সাফল্য হিসেবে তুলে ধরতে বদ্ধপরিকর মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প৷ তিনি অক্টোবর মাসে হোয়াইট হাউসে কিম জং উনকে স্বাগত জানাতে প্রস্তুত৷ এর আগে সিঙ্গাপুরে প্রথম ঐতিহাসিক বৈঠকে দুই নেতার মধ্যে যথেষ্ট ব্যক্তিগত উষ্ণতা দেখা গেছে৷ কিন্তু তারপর থেকে অ্যামেরিকা ও উত্তর কোরিয়ার মধ্যে আলোচনায় তেমন কোনো অগ্রগতি ঘটেনি৷ ওয়াশিংটন উত্তর কোরিয়ার পরমাণু অস্ত্রভাণ্ডার পুরোপুরি ধ্বংস করার চূড়ান্ত প্রক্রিয়া দেখতে চায়৷ অন্যদিকে উত্তর কোরিয়া নীতিগতভাবে সেই লক্ষ্যে এগোনোর ইঙ্গিত দিলেও সবার আগে ওয়াশিংটনের মুখে কোরীয় যুদ্ধের আনুষ্ঠানিক অবসানের ঘোষণা শুনতে চায়৷
এ ক্ষেত্রে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আসন্ন ‘মিড টার্ম' সংসদীয় নির্বাচনও কিছুটা ভূমিকা পালন করছে৷ ঘরে-বাইরে কোণঠাসা ট্রাম্প নির্বাচনের আগেই পররাষ্ট্র নীতির ক্ষেত্রে বিশাল সাফল্য তুলে ধরতে চান৷ উত্তর কোরিয়া সেই বিষয়টি থেকে ফায়দা তোলার আশা করছে৷ কিন্তু শুধু হোয়াইট হাউসে কিম জং উনকে স্বাগত জানিয়ে সেই সাক্ষাতকে সাফল্য হিসেবে তুলে ধরতে পারবেন না ট্রাম্প৷ কিম সরাসরি পরমাণু অস্ত্র ত্যাগ করার ঘোষণা করলে তাতে কাজ হতে পারে৷
উত্তর কোরিয়ার করুণ অর্থনৈতিক পরিস্থিতির উন্নতি কিম জং উনের সামনে বড় চ্যালেঞ্জ৷ বর্তমানে একাধিক আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞার কারণে সে দেশের সঙ্গে বাণিজ্যের পথে নানা বাধা রয়েছে৷ তা সত্ত্বেও দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট এক উচ্চ পর্যায়ের বাণিজ্যিক প্রতিনিধিদল সঙ্গে নিয়ে পিয়ং ইয়ং যাত্রা করছেন৷ নিষেধাজ্ঞার কারণে এ যাত্রায় সহযোগিতা সম্ভব না হলেও পরমাণু অস্ত্র ত্যাগ করলে উত্তর কোরিয়ার ফায়দার মাত্রা তুলে ধরতে চায় দক্ষিণ কোরিয়া৷
এসবি/এসিবি (এএফপি, রয়টার্স)