পরমাণু জ্বালানি খাত থেকে সরে আসার ঘোষণা সিমেন্সের
১৮ সেপ্টেম্বর ২০১১সিমেন্স এর নতুন সিদ্ধান্ত জার্মানির ভাবমূর্তিকে আরও উজ্জ্বল করে তুলবে বলে মনে করা হচ্ছে৷
সাক্ষাৎকারে সিমেন্সের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা পেটার ল্যোশার জানিয়েছেন, পরমাণু বিদ্যুৎ উৎপাদন এবং অর্থায়নের সঙ্গে সিমেন্স আর জড়িত থাকবে না৷ এবং এই ধরণের কার্যক্রম তারা বন্ধ করে দিচ্ছেন৷ ল্যোশার বলেন, ‘‘আমাদের জন্য এই অধ্যায় শেষ৷ এখন থেকে আমরা প্রচলিত বিদ্যুৎ উৎপাদন প্রক্রিয়ায় যন্ত্রপাতি সরবরাহ করবো, যেমন বাষ্পচালিত টারবাইন৷ এর অর্থ, আমরা পরমাণু শক্তির পাশাপাশি গ্যাস এবং কয়লা থেকেও বিদ্যুৎ উৎপাদন করা যায় শুধু এমন জায়গাগুলোতে প্রযুক্তি সরবরাহ করবো৷'' জার্মানির এই কর্মকর্তা আরও জানিয়েছেন, যে তাদের এই সিদ্ধান্ত এসেছে জার্মান সরকারের সাম্প্রতিক সিদ্ধান্তের সমর্থনে৷ ল্যোশার বলেন, ‘‘এর মাধ্যমে আমরা জার্মানির সামাজিক এবং রাজনৈতিক নেতৃত্বের প্রতি সমর্থন জানালাম৷''
উল্লেখ্য, জার্মানির সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে আগামী ২০২২ সালের মধ্যে পরমাণু বিদ্যুৎ শক্তি পরিত্যাগ করার৷ জাপানের ফুকুশিমা কেন্দ্রে বিপর্যয়ের পর গোটা জার্মানিতেই পরমাণু শক্তির বিরুদ্ধে ব্যাপক জনমত গড়ে ওঠে৷ প্রবল জনমতের চাপে এই সিদ্ধান্ত নিতে এক প্রকার বাধ্য হয়েছে চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেলের সরকার৷ উল্লেখ্য, উন্নত দেশগুলোর মধ্যে জার্মানিই প্রথম পরমাণু বিদ্যুৎ পরিত্যাগের সিদ্ধান্ত নিলো৷
এর আগেও সাবেক চ্যান্সেলর গেরহার্ড শ্রোয়েডারের আমলে পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্র বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল৷ তবে ম্যার্কেলের সরকার সেই সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসে৷ এবার জাপানের পরমাণু কেন্দ্রের বিপর্যয় থেকে শিক্ষা নিয়েছে জার্মানির সরকার৷ তাই পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোর নির্মাতা কোম্পানিগুলোর বিরোধিতা সত্ত্বেও এই পথ থেকে সরে আসার সিদ্ধান্ত নেন চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল৷ এছাড়া ২০২০ সালের মধ্যে নবায়নযোগ্য জ্বালানি ব্যবহারের হার শতকরা ১৭ ভাগ থেকে বাড়িয়ে ৩৫ ভাগ করার লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছে তাঁর সরকার৷ যদিও সমালোচকরা বলছেন, এইসব সিদ্ধান্ত তিনি নিয়েছেন মূলত হারিয়ে যাওয়া জনসমর্থন ফিরিয়ে আনার জন্য৷ তবে আন্তর্জাতিক মহল এবং পরিবেশবাদীদের কাছে জার্মান সরকার ভূয়সী প্রশংসা পেয়েছে৷
এদিকে সিমেন্স এর সঙ্গে রাশিয়ার আরেক বড় কোম্পানি রোসাটম এর একটি যৌথ উদ্যোগের কথা শোনা যাচ্ছিল বেশ কিছুদিন ধরে৷ তবে সিমেন্স এর প্রধান কর্মকর্তা পেটার ল্যোশের জানালেন, দুই পক্ষই একসঙ্গে কাজ করতে আগ্রহী তবে সেটি হবে অন্য ক্ষেত্রে৷
প্রতিবেদন: রিয়াজুল ইসলাম
সম্পাদনা: জাহিদুল হক