‘জার্মানি-বাংলাদেশ সহযোগিতা চুক্তি ভালোই কাজ করছে'
২৯ জুন ২০১৫শুক্রবার ডয়চে ভেলে কার্যালয়ের ঠিক পাশের জাতিসংঘ ভবনে হয়ে গেল জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক এক গুরুত্বপূর্ণ গোলটেবিল বৈঠক৷ আলোচনার বিষয় ছিল ‘লাইভলিহুড রেজিলিয়েন্স, রিসার্চ অ্যান্ড প্র্যাকটিস'৷ গবেষণা এবং গবেষণা থেকে পাওয়া তথ্য-উপাত্তের ব্যবহারিক প্রয়োগের দিকটিও স্বাভাবিকভাবেই গুরুত্ব পেয়েছে জাতিসংঘ বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ এবং মানব নিরাপত্তা ইনস্টিটিউট, জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক আন্তর্জাতিক সংস্থা আইসিসিসিএডি এবং মিউনিখ রে ফাউন্ডেশন আয়োজিত গোলটেবিল বৈঠকে৷ জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে কাজ কিংবা পড়াশোনা করছেন – এমন অনেকের অংশগ্রহণে জমে ওঠা আলোচনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বার্লিনস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসের কাউন্সেলর জনাব নাজমুল হুদা৷
অনুষ্ঠান শেষে কথা হয় আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সুপরিচিত বাংলাদেশের জলবায়ু বিশেষজ্ঞ সালিমুল হকের সঙ্গে৷ একটু আগে শেষ হওয়া প্রায় তিন ঘণ্টার আলোচনা সম্পর্কে ধারণা দিতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘‘যাঁরা জলবায়ু পরিবর্তনের শিকার হতে পারে, তাঁদেরকে কিভাবে সাহায্য-সহযোগিতা করা যায় মূলত এ নিয়েই আমরা আলোচনা করেছি৷ অনেক ক্ষেত্রেই চেষ্টা হচ্ছে, জনগণ করছে, সরকার করছে, তবু কাজটা কিভাবে আরও জোরদার করা যায় এ বিষয়টি নিয়ে আমরা আলোচনা করেছি৷''
বাংলাদেশে জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে কাজ করছে ‘জীবিকা' প্রকল্প৷ গোল টেবিল বৈঠকে জীবিকার প্রকল্প ব্যবস্থাপক হিসেবে বাংলাদেশে কাজ করার অভিজ্ঞতার কথা জানালেন সোনিয়া আয়েব-কার্লসন৷ জীবিকার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা সম্পর্কে সালিমুল হকের বক্তব্য, ‘‘বাংলাদেশের একদম সাধারণ মানুষ যাঁরা, বিশেষ করে যাঁরা উপকূলীয় অঞ্চলে বাস করেন, তাঁরা ঘূর্ণিঝড় ও অন্যান্য প্রাকৃতিক দুর্যোগের শিকার হচ্ছেন৷ জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে এমন ভোগান্তি ভবিষ্যতে আরো তীব্র হতে পারে৷ তাঁদেরকে আমরা জ্ঞান দিয়ে, আগাম সতর্ক করে কিংবা অন্যান্য সহযোগিতা দিয়ে প্রাকৃতিক দুর্যোগ, বিশেষ করে ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় সাহায্য করতে পারি৷’’ ‘‘আমরা এই বিষয়টি নিয়ে উপকূলীয় এলাকায় গবেষণা করেছি৷ গবেষণায় যা পেয়েছি তা জীবিকা-র প্রকল্পে কাজে লাগাবো৷ পুরো বিষয়টিকে আমরা বলছি, ‘রিসার্চ টু অ্যাকশন প্রোগ্রাম'৷ আমরা গবেষণাপর্ব শেষ করেছি, এবার শুরু হবে অ্যাকশন, অর্থাৎ মাঠ পর্যায়ের কাজ৷ আমাদের টিম আগামী মাসেই বাংলাদেশে যাবে৷''
জলবায়ু পরিবর্তন খাতে বাংলাদেশ-জার্মানির সহযোগিতা চুক্তির প্রসঙ্গ নিয়েও কথা হয়েছে সালিমুল হকের সঙ্গে৷ ২০১২ সালে স্বাক্ষরিত দ্বিপাক্ষিক এ চুক্তির অগ্রগতি এবং জলবায়ু পরিবর্তন ও এর ক্ষতি রোধে চুক্তির কার্যকারিতা সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘‘জার্মানি এবং বাংলাদেশের মধ্যে বিভিন্ন রকমের সহযোগিতামূলক কার্যক্রম আছে, কিন্তু পরিবেশ বিষয়ে সহযোগিতার ব্যাপারটি বেশ ভালোভাবেই হচ্ছে বলে আমি মনে করি৷ এক্ষেত্রে মূলত জার্মানির দু'টো সংস্থা কাজ করছে৷ একটা জিআইজেড, অন্যটি হলো কেফডাব্লিউ৷ জার্মান উন্নয়ন সংস্থা জিআইজেড টেকনিকেল অ্যাসিসটেন্স দিয়ে থাকে আর কেএফডাব্লিউ যেহেতু একটি ব্যাংক, তাই তারা ঋণ দেয়৷ জার্মান সরকার এ পর্যন্ত বাংলাদেশকে বেশ ভালো পরিমান ঋণ দিয়েছে৷ আমি মনে করি, এটা খুব ভালো লক্ষণ৷''