1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

পরিবেশ বাঁচিয়ে মাছের চাহিদা মেটাতে অভিনব উদ্যোগ

১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৮

আমরা জানি, বাঙালি মাছ খেতে ভালোবাসে৷ কিন্তু গোটা বিশ্বেই মাছের চাহিদা বেড়ে চলেছে৷ একদিকে মাছের উৎপাদন বৃদ্ধি ও স্বাদের উন্নতি, অন্যদিকে চাষের প্রক্রিয়াকে আরো পরিবেশবান্ধব করে তোলার চেষ্টা করছেন বিজ্ঞানীরা৷

https://p.dw.com/p/357mH
Bangladesch Hilsa Fisch
ছবি: Imago/UIG

বাজারে অনেক মাছ এখন মৎস খামার থেকেই আসে৷ কিন্তু স্বাস্থ্যবান ও সুস্বাদু মাছ চাষ করা কত কঠিন? পরিবেশের উপরেই বা মাছ চাষের প্রভাব কী?

ফ্রান্সের ব্রেস্ট শহরের কাছে এক পরীক্ষামূলক মাছ চাষের কেন্দ্র এক ইউরোপীয় প্রকল্পে অংশ নিচ্ছে৷ গোটা ইইউ জুড়ে মৎসশিল্পের গবেষকদের মধ্যে যোগাযোগ স্থাপন করছে সেই প্রকল্প৷ মাছের জিন গবেষক মার্ক ভঁদেপুট এ বিষয়ে বলেন, ‘‘মাছ চাষের ক্ষেত্রে বিপুল প্রবৃদ্ধি দেখা যাচ্ছে৷ গত ২০ বছরে বিশ্বজুড়ে বছরে প্রায় ৮ শতাংশ প্রবৃদ্ধি ঘটেছে৷ গত ১২ মাসে এমনকি গরুর মাংস উৎপাদনকেও ছাড়িয়ে গেছে৷''

গোটা বিশ্বে মাছের চাহিদাও বেড়ে চলেছে, যদিও সামুদ্রিক সম্পদ কমে চলেছে৷ অতএব আরো মাছ উৎপাদন করতে টেকসই পদ্ধতির প্রয়োজন পড়ছে৷ মার্ক বলেন, ‘‘যে কোনো অন্য উৎপাদন প্রক্রিয়ার মতো মাছ চাষের জন্যও সম্পদের প্রয়োজন হয়, বিশেষ করে মাছের তেল ও ময়দা লাগে৷ সে কারণে কড়া সমালোচনা হচ্ছে৷ এই প্রক্রিয়ায় যথেষ্ট বর্জ্য পদার্থও সৃষ্টি হয়৷'' 

মাছ পুষ্টিবিদ ও জিন বিশেষজ্ঞরা মাছদের খাদ্যে মাছের তেল ও ময়দার বিকল্পহিসেবে উদ্ভিদ দিতে পেরেছেন৷ ট্রাউট গোত্রীয় একদল মাছকে সম্পূর্ণ নিরামিষ খোরাক দেওয়া হচ্ছে৷ মাছের জিন বিশেষজ্ঞ এডভিশ কিয়ে বলেন, ‘‘আমরা আইসোজিনিক লাইনেজ সৃষ্টি করেছি৷ প্রত্যেক বংশের মধ্যে সব প্রাণী আসলে যমজ৷ জিনগত দৃষ্টিভঙ্গি থেকে দেখলে তারা হুবহু এক৷ ফলে আরো দক্ষতার সঙ্গে আমরা গবেষণা করতে পারছি৷''

মাছেরা কীভাবে পুষ্টি গ্রহণ করে, চর্বির পরিমাণ ও গঠনের উপরেও তার কী প্রভাব পড়ে, তাদের বিভিন্ন রকমের খোরাক দিয়ে গবেষকরা তা জানতে পারছেন৷ এডভিকে বলেন, ‘‘আমরা সুস্বাদু মাছ উৎপাদন করতে চাই এবং সম্পদের ব্যবহার কমাতে চাই৷ এমন চাষের প্রণালীতে মাছেরা বেড়ে উঠবে, যা পরিবেশের যতটা কম সম্ভব ক্ষতি করবে৷''

নেদারল্যান্ডসের ভাখেনিঙেন বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষকরা ফ্রান্সের আইসোজেনিক মাছ ব্যবহার করে জৈব রাসায়নিক প্রক্রিয়ার গবেষণা করছেন৷ মাছের পুষ্টিবিদ ইয়োহান শ্রামা বলেন, এই গবেষণায় শুধু মাছকে খাওয়ানোর পদ্ধতি নয়, পরিবেশবান্ধব উপায়ে তা করার চেষ্টা চলছে৷ পারিপার্শ্বিক ও মাছের জন্যও তা জরুরি৷ উৎপাদন বাড়ানোই মূল লক্ষ্য নয়, মাছ কীভাবে বিভিন্ন ধরনের পুষ্টি গ্রহণ করতে পারে, তা জানা জরুরি৷''

ওলন্দাজ গবেষকরা সারাদিন পানির মধ্যে রাসায়নিক পরিবর্তনের দিকে লক্ষ্য রাখেন৷ তারপর ব্যাকটেরিয়ার ফিল্টারের মধ্য দিয়ে গলিয়ে বর্জ্য দূর করে তাতে অক্সিজেন যোগ করা হয়৷ মৎস গবেষক এপ এডিংস বলেন, ‘‘আমরা এই তথ্য ব্যবহার করে পানি শোধনাগার ডিজাইন করতে পারি৷ কারণ, মাছ ঠিক কত পরিমাণ পুষ্টি কাজে লাগাচ্ছে না, তা আমরা জানি৷ সেই পুষ্টির কতটা অংশ শুদ্ধিকরণ প্রণালীর সাহায্যে সরিয়ে ফেলে পানি বার বার ব্যবহার করা যায়, সেটাও আমরা জানি৷ এই ধরনের পানি শোধনাগার পানির ব্যবহার উল্লেখযোগ্য মাত্রায় কমিয়ে আনতে পারে৷ প্রচলিত প্রণালীর তুলনায় অনেক পানি সাশ্রয় ঘটে৷''

বিশেষজ্ঞদের ধারণা, তাঁদের গবেষণা মাছের চাষকে আরো পরিবেশবান্ধব করে তুলবে৷ সেইসঙ্গে মাছও আরো সুস্বাদু ও সস্তা হয়ে উঠবে৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য