পরিবেশ সুরক্ষা
১৭ এপ্রিল ২০১২২০১২-১৩ সালে ভারত ৭.৬ শতাংশ প্রবৃদ্ধি আশা করছে৷ পরিবেশবিদরা মনে করছেন, পরিবেশ সুরক্ষার উপযুক্ত পদক্ষেপ না নিলে সার্বিকভাবে সেটা সম্ভব হবেনা৷ উচ্চ অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি পরিবেশের উপর প্রতিকূল প্রভাব ফেলে৷ কাজেই সরকারের উচিত গুরুত্বপূর্ণ পরিবেশ ইস্যুগুলির দিকে যথেষ্ট নজর দেয়া৷
গত দশকে ভারতের উল্লেখযোগ্য আর্থিক বিকাশের মাশুল দিতে হয়েছে পরিবেশকে৷ অভ্যন্তরীণ এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, দেশের মোট অর্থনৈতিক উৎপাদনের দরুন পরিবেশের আর্থিক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে ৩.৫ থেকে ৭.৫ শতাংশ৷ এই ক্ষতি হয়েছে বায়ুদূষণ, জলদূষণ, বর্জ্য পদার্থ নিঃসরণ এবং বনাঞ্চল ধ্বংস করার জন্য৷
সেন্টার ফর সায়েন্স অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টের নির্বাহী পরিচালক অনুমিতা রায় চৌধুরী ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘পরিবেশ ও উন্নয়নের মধ্যে যে একটা ঘনিষ্ঠ সম্বন্ধ আছে সেটা বুঝতে হবে৷ আমরা পরিবেশ বা জনস্বাস্থ্যের কথা বললে সেটাকে উন্নয়ন-বিরোধী বলে চিহ্নিত করা হয়৷ এটা একেবারেই ভুল ৷ পরিবেশ রক্ষার ধারাবাহিকতার ওপর কাজ করলে সেটা থেকেও আর্থিক বিকাশ সম্ভব৷''
‘‘সেজন্য আজ আমরা সবুজ অর্থনীতির কথা বলছি৷ পরিবেশ বাঁচলে জীবিকা বাঁচবে এবং তার উপর ভিত্তি করে আমাদের ‘গ্রিন' কর্মসংস্থান, নতুন অর্থনীতি, নতুন সুযোগ উঠে আসবে৷ যেমন এখন আমরা নবায়নযোগ্য এনার্জির কথা বলছি৷ মোটকথা, পরিবেশ সুরক্ষার মাধ্যমে অর্থনৈতিক বিকাশের এক নতুন দিগন্ত খুলে যাবে৷ এটা রাজনৈতিক নেতৃত্বকে বুঝতে হবে'' – এমনটাই বললেন সেন্টার ফর সায়েন্স অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টের নির্বাহী পরিচালক অনুমিতা রায় চৌধুরী৷
নদী বিশেষজ্ঞ কল্যাণ রুদ্রের মতে, বন, জলাশয় তথা পরিবেশ সুরক্ষায় সরকারের দীর্ঘমেয়াদী কোনো রোডম্যাপ নেই৷ কম বৃষ্টি কেন হচ্ছে, কেন বর্ষা তাড়াতাড়ি চলে যাচ্ছে, কেন ভূগর্ভস্থ জলস্তর নেমে যাচ্ছে – এই সব নিয়ে সরকারের মাথাব্যথা নেই৷ মার খাচ্ছে কৃষকরা৷ তাঁরা এর মোকাবিলা করতে পারছেনা৷ ফলে কৃষি উৎপাদন হ্রাস পাচ্ছে৷
পরিকল্পনা কমিশনের উপদেষ্টা দীপায়ন দে মনে করেন এর কারণ রাজনৈতিক সদিচ্ছার অভাব৷ নীতি নির্ধারকদের সচেতনতার অভাব৷ বরাদ্দ করা টাকা তাই খরচ করতে পারছে না পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়৷
প্রতিবেদন: অনিল চট্টোপাধ্যায়, নতুন দিল্লি
সম্পাদনা: সঞ্জীব বর্মন