পরিবেশবান্ধব জলবায়ু সম্মেলন
জার্মানির বন শহরে চলছে দুই সপ্তাহব্যাপী জলবায়ু সম্মেলন৷ কার্বন নির্গমন কমানোর উপায় নিয়ে আলোচনা করার এই সম্মেলনকে যতটা সম্ভব পরিবেশবান্ধব করতে উদ্যোগ নেয়া হয়েছে৷
বিমান পরিবহণ
সম্মেলনে আসা ২০ হাজারের বেশি অংশগ্রহণকারীর অধিকাংশই বিমানে করে জার্মানির বনে এসেছেন৷ অথচ বিমান হচ্ছে কার্বন নির্গমনের একটি বড় উৎস৷ অর্থাৎ অংশগ্রহণকারীরা প্রত্যেকেই পরিবেশের ক্ষতি করে পরিবেশ বাঁচানোর আলোচনা করতে এসেছেন৷ কিন্তু বিমান ছাড়া তো আর বিকল্পও নেই৷ জার্মানি অবশ্য এই ক্ষতি পুষিয়ে দেয়ার ব্যবস্থা করেছে৷
অফসেট
এটি জলবায়ু সংক্রান্ত একটি ‘টার্ম’৷ কার্বন নির্গমনের ক্ষতি পুষিয়ে দেয়ার একটি উপায় এটি৷ বিমান পরিবহণসহ অংশগ্রহণকারীদের রাতে হোটেলে থাকা, লাইট, ইলেকট্রনিক যন্ত্রপাতি ব্যবহার, এসব নানা কারণে পরিবেশের যে ক্ষতি হবে তা পুষিয়ে দিতে জার্মানি ‘সার্টিফায়েড এমিশন রিডাকশন’ বা সিইআর ক্রেডিট কিনবে৷ আরও জানতে ক্লিক করুন উপরে (+) চিহ্নে৷
সিইআর ক্রেডিট
জার্মানির কেনা এই ক্রেডিট ছোট দ্বীপরাষ্ট্রগুলোতে জাতিসংঘের ‘ক্লিন ডেভেলপমেন্ট মেকানিজম’ বা সিডিএম-এর অধীনে যেসব প্রকল্প নিবন্ধিত আছে সেখানে ব্যবহৃত হবে৷ সিডিএম সম্পর্কে আরও জানতে ক্লিক করুন উপরে (+) চিহ্নে৷
কাগজের ব্যবহার
আগের যে কোনো সম্মেলনের চেয়ে এবার কাগজের ব্যবহার কমানোর চেষ্টা করা হচ্ছে৷ সম্মেলনের তথ্য সংক্রান্ত বেশিরভাগ কাগজপত্র প্রিন্ট না করে ইলেক্ট্রনিক উপায়ে ব্যবহারযোগ্য করা হয়েছে৷ তবে এরপরও কেউ প্রিন্ট চাইলে তাঁকে প্রিন্ট করে দেয়া হচ্ছে৷ তবে সেটা একই পাতার এপাশ-ওপাশ করে৷
রিসাইকেল
একেক রকমের ময়লা ফেলার জন্য একেক রকমের ‘ডাস্টবিন’ রাখা হয়েছে৷ সেখানে পাওয়া ময়লা এবং সম্মেলনের জন্য তৈরি করা ব্যানারগুলো রিসাইকেল করে ভবিষ্যতের জলবায়ু সম্মেলনের জন্য পুনরায় ব্যবহারযোগ্য পানির বোতল কিংবা ব্যাগ তৈরির কাজে লাগানোর পরিকল্পনা করা হচ্ছে৷
প্লাস্টিক বোতল
এটি ব্যবহৃত প্লাস্টিক বোতল ফেলার জায়গা৷ এ সব বোতল জমা দিয়ে পাওয়া অর্থ ‘নিউ ওয়ার্ল্ড প্রোগ্রাম’-কে দান করা হবে৷ এটি ‘কোকা কোলা ফাউন্ডেশন’ ও ‘গ্লোবাল ওয়াটার চ্যালেঞ্জ’-এর একটি যৌথ উদ্যোগ৷ পানি পানের জন্য প্রত্যেক অংশগ্রহণকারীকে বিনামূল্যে বার বার ব্যবহারযোগ্য পানির বোতল দেয়া হয়েছে৷
হাইড্রোজেন বাস
হাইড্রোজেন ফুয়েল সেল থেকে উৎপাদিত বিদ্যুৎ দিয়ে চলে এই বাস৷ এটা এখনও ব্যয়বহুল ও জটিল এক প্রক্রিয়া৷ তবে গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমন কমাতে জার্মান গবেষকরা এই প্রযুক্তিতে কার্যকর করার চেষ্টা করছে৷ জলবায়ু সম্মেলনে অংশগ্রহণকারীদের এক জোন থেকে আরেক জোনে নিয়ে যেতে এই বাস ব্যবহৃত হচ্ছে৷
ইলেকট্রিক গাড়ি
নবায়নযোগ্য জ্বালানি থেকে তৈরি বিদ্যুৎ দিয়ে চলছে এই বাস৷ কপ২৩-এ ব্যবহৃত ইলেকট্রিক গাড়িগুলো বেশিভাগই কোরিয়ায় তৈরি৷ ই-কারের জগতে জার্মান গাড়ি নির্মাতারা এখনও কোরিয়া, জাপান ও চীনাদের চেয়ে পিছিয়ে আছে৷
সাইকেল
পরিবেশবান্ধব এই বাহনেরও ব্যবস্থা রাখা হয়েছে৷ নেক্সটবাইক কোম্পানির প্রায় ছয়শটি সাইকেল কপ-এ ব্যবহৃত হচ্ছে৷ অংশগ্রহণকারীরা একটি অ্যাপ ডাউনলোড করলে সেখান থেকে একটি পিন পাচ্ছেন৷ সেই পিন দিয়ে যে কোনো সাইকেল খুলে নিয়ে যাতায়াত শুরু করতে পারছেন৷ সেবাটি অবশ্যই বিনামূল্যে৷
হাইব্রিড বাস
এটি আসলে পুরোপুরি পরিবেশবান্ধব নয়৷ নামই বলে দিচ্ছে যে, এতে ডিজেল ও বিদ্যুৎ দুই-ই ব্যবহৃত হয়৷ অংশগ্রহণকারীদের আনা নেয়ায় এই বাসেরও ব্যবস্থা করছে আয়োজক কর্তৃপক্ষ৷