শিক্ষার মান
৩০ মে ২০১৬গত ১৫ বছরে এসএসসিতে পাসের হার কয়েক গুণ বেড়েছে৷ ২০০১ সালে পাসের হার ছিল ৩৫ দশমিক ২২ শতাংশ, ২০১৬ সালে তা বেড়ে হয়েছে ৮৮ দশমিক ২৯ শতাংশ৷ পরীক্ষায় সর্বোচ্চ গ্রেড ‘জিপিএ ৫' প্রাপ্তিও অবিশ্বাস্য হারে বেড়েছে৷ ২০০১ সালে সারা দেশে যেখানে মাত্র ৭৬ জন জিপিএ ৫ পেয়েছিল সেখানে এ বছর জিপিএ ৫ পেয়েছে মোট ১ লক্ষ ১০ হাজার শিক্ষার্থী৷
এসব পরিসংখ্যান কি শিক্ষার উন্নতির মাপকাঠি হতে পারে? এ নিয়ে ব্যাপক সংশয় রয়েছে৷ এবার অনেক জিপিএ ৫ প্রাপ্ত শিক্ষার্থীকে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে ভুল বাংলা এবং ইংরেজিতে স্ট্যাটাস দিয়ে আনন্দ প্রকাশ করতে দেখার পর সংশয়টা আরো বেড়ে যায়৷ প্রশ্ন জাগে, বাংলা বা ইংরেজিতে দু' লাইনই যারা ঠিকভাবে লিখতে পারেনা, তারা সর্বোচ্চ গ্রেড পায় কী করে? এমন স্ট্যাটাস লেখা জিপিএ ৫ প্রাপ্ত শিক্ষার্থী কি দেশে খুব কম আছে, নাকি এমন ‘কৃতী' ছাত্রই এখন বেশি? একটি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলের প্রতিবেদনে বেরিয়ে এসেছে প্রকৃত সত্য৷
টেলিভিশন চ্যানেলটির প্রতিবেদক গড়পড়তা জিপিএ ৫ প্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের মান যাচাইয়ের জন্য ১৩ জন শিক্ষার্থীর সঙ্গে কথা বলেছেন৷ ১৩ জনই জিপিএ ৫ প্রাপ্ত৷ তাদের প্রত্যেকের কাছে খুব সহজ কয়েকটি প্রশ্নের উত্তর জানতে চাওয়া হয়েছিল৷ যেমন, ‘‘জিপিএ-র পূর্ণাঙ্গ রূপ কী?'' জিপিএ ৫ পাওয়া শিক্ষার্থীরাই এর উত্তরে বলেছে, ‘‘জানিনা৷''
এসএসসি-র পূর্ণাঙ্গ রূপও বলতে পারেনি তারা৷ সাধারণ জ্ঞানেও তাদের ভয়বাহ খারাপ অবস্থা৷ ১৩ জনের একজনও বলতে পারেনি শহীদ মিনার কোথায় বা শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস, স্বাধীনতা দিবস, বিজয় দিবস কিংবা আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস কত তারিখে৷
বাংলাদেশের প্রেসিডেন্টের নামও তারা জানেনা৷ ‘মাউন্ট এভারেস্ট কোথায়?'- জানতে চাইলে বলে – ইংল্যান্ডে৷ ‘আমি জিপিএ পাঁচ পেয়েছি'- এই বাক্যটির ইংরেজি জানতে চাওয়া হয়েছিল৷ অনেকে জবাবই দেয়নি৷ একজন বলেছে, ‘‘আই অ্যাম জিপিএ ফাইভ৷''
এমন ছাত্র-ছাত্রীরা কীভাবে জিপিএ পায়? শিক্ষাবিদরা মনে করেন, বেশির ভাগ ছাত্র-ছাত্রীই যথাযথ যোগ্যতা দিয়ে ‘জিপিএ ৫' অর্জন করে না, দুর্বল শিক্ষা ব্যবস্থায় সর্বোচ্চ গ্রেডটা আসলে তাদের হাতে তুলে দেয়া হয়৷
এসিবি/এসবি
প্রিয় পাঠক, বর্তমান শিক্ষার মান নিয়ে কী আপনি সন্তুষ্ট? জানান নীচে মন্তব্যের ঘরে...