পশ্চিমবঙ্গে এখন শুধু পাল্টাপাল্টির রাজনীতি
২৫ ডিসেম্বর ২০২০দিন কয়েক আগের কথা। বোলপুরে এসে শান্তিনিকেতন দেখে অমিত শাহ মধ্যাহ্নভোজ সারেন বাসুদেব দাস বাউলের বাড়িতে। সেখানে বাসুদেব দাস তাঁকে শোনান, 'তোমায় হৃদমাঝারে রাখব ছেড়ে দেব না'। এর পাল্টা বোলপুরের ডাকবাংলো মাঠে বাংলা সংস্কৃতি মঞ্চেও বাউল গান হলো। সেখানে গাওয়া হলো, 'বারে বারে আর আসা হবে না'। এটা হলো তৃণমূলের পাল্টা।
পশ্চিমবঙ্গে এখন চলছে এই পাল্টাপাল্টির রাজনীতি। আজ তৃণমূল যা করছে, কাল বিজেপি সেটাই করছে। আবার বিজেপি যা করছে, তার পাল্টা করছে তৃণমূল। পাল্টাপাল্টির অঙ্গ হিসাবে বাসুদেব বাউলকে নিয়েও টানাটানি চলছে। অমিত শাহ তাঁর বাড়িতে খেয়ে যাওয়ার পর বীরভূমের তৃণমূল নেতা অনুব্রত মণ্ডল তাঁর মেয়েকে উচ্চ শিক্ষার ব্যবস্থা করবেন বলে জানিয়েছেন। অমিত শাহ বোলপুরে রোড শো করেছিলেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও করবেন আগামী ২৯ ডিসেম্বর। সেখানেও বাসুদেব বাউলের থাকার কথা। অর্থাৎ, সেই পাল্টাপাল্টির রাজনীতি।
একই ঘটনা ঘটছে নন্দীগ্রাম দিবস নিয়েও। প্রতিবছর আন্দোলনে মৃতদের স্মরণে ৭ জানুয়ারি নন্দীগ্রাম দিবস পালন করে তৃণমূল। কিন্তু মমতা গত কয়েক বছর ওই দিন নন্দীগ্রাম যাননি। শুভেন্দু অধিকারী যেতেন। এ বার মমতা যাবেন। সেখানে প্রচুর লোক আনতে চাইছে তৃণমূল। যাতে অমিত শাহর সভার থেকে বড় সভা করা যায়। আর ৭ জানুয়ারি মমতা সভা করে চলে যাওয়ার পরের দিন নন্দীগ্রামে হবে বিজেপি-র সভা। সেখানে প্রধান বক্তা শুভেন্দু অধিকারী। এখানে তৃণমূলের পাল্টা দিচ্ছে বিজেপি।
পাল্টাপাল্টির রাজনীতির মধ্যে জড়িয়ে যাচ্ছেন রবীন্দ্রনাথও। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও অমিত শাহের ভাষণে এখন হামেশাই উঠে আসছে রবীন্দ্রনাথের কথা। তাঁর কবিতা বা গানের লাইন। বিশ্বভারতীর শতবর্ষ অনুষ্ঠানে মোদী বলেছিলেন, 'রবীন্দ্রনাথের বড়দা সত্যেন্দ্রনাথ' গুজরাটে ছিলেন। তারপরই তৃণমূলের পাল্টা, রবীন্দ্রনাথের মেজদাকে কী করে সারাক্ষণ বড়দা বলে গেলেন প্রধানমন্ত্রী?
বিজেপি-র প্রশ্ন, মমতা কেন শতবর্ষের অনুষ্ঠানে যোগ দিলেন না? মুখ্যমন্ত্রী বলছেন, তিনি আমন্ত্রণই পাননি। বাবুল সুপ্রিয় পাল্টা হুমকি দিয়েছেন, আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি দিয়েছিলেন উপাচার্য।
পাল্টাপাল্টির রাজনীতি এখন এমনই স্তরে যে, এরকমও রব উঠছে, মোদী চাওয়ালা তো মমতা দুধওয়ালা। কারণ, কলেজে পড়ার সময় মমতাও হরিণঘাটার দুধ বিক্রি করেছেন।