পশ্চিমবঙ্গে পরিবেশ বান্ধব আবাসন
১৪ ডিসেম্বর ২০১০শুধু ইকো ফ্রেন্ডলি বা পরিবেশ বান্ধব বাড়ি নয়, ওঁরা বলছেন ইকো রেসপন্সিভ বিল্ডিং৷ যে বাড়ি পরিবেশের আলো-হাওয়ায় সাড়া দেয়৷ পশ্চিমবঙ্গে বিকল্প শক্তি উদ্যোগের প্রাণ পুরুষ যিনি, সেই শক্তিপদ গনচৌধুরী জানালেন, সেই নকশা তৈরির সময় থেকেই একটি বাড়িকে পরিবেশমুখী করে তোলা যায়৷ যেমন বাড়ি তৈরি করতে যে সিমেন্ট, লোহা, ইঁট ইত্যাদি লাগে, এই সব নির্মাণসামগ্রী উৎপাদন করতেও শক্তি খরচ হয়৷ কাজেই বাড়ির প্ল্যান করার সময় যদি এমনভাবে নকশা করা যায় যাতে এই সব সামগ্রীর ব্যবহার কিছুটা কমিয়ে আনা যায় তাহলেও শক্তি সাশ্রয় হয় এবং পরোক্ষে দূষণ কম হয়৷
এইসব লো কার্বন নির্মাণসামগ্রী ব্যবহারের পাশাপাশি বাড়িতে প্রাকৃতিক আলো-হাওয়া খেলার সুযোগ করে দেওয়াও খুব জরুরি৷ যেমন বাড়িতে জানালা যদি একটু বেশি থাকে, তাহলে যথেষ্ট আলো আসতে পারে৷ সেক্ষেত্রে দিনের বেলায় আলো জ্বালানোর দরকার প্রায় হয়ই না৷ হাওয়ার ক্ষেত্রেও একই পরামর্শ দেওয়া যায়৷
এই সঙ্গে দৈনন্দিন জীবনে কীভাবে শক্তি সাশ্রয় করা যায়, তারও উপায় বাতলে দিলেন শক্তিপদ গনচৌধুরী৷ যেমন ঘরের আলোর ক্ষেত্রে প্রথাগত বৈদ্যুতিক বাল্বের বদলে সিএফএল ব্যবহার করা, বা আরও বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী এলইডি ব্যবহার করা যায়৷ ছাদে সোলার প্যানেল লাগানো যায়৷ তাতে একদিকে ছাদ ঠান্ডা থেকে যেমন পাখা বা এয়ার কন্ডিশনারের ওপর চাপ কমাবে, তেমন বিদ্যুতও তৈরি করে নেওয়া যাবে যা ঘরোয়া কাজে যেমন জল গরম করার জন্য ব্যবহার করা যাবে৷
ডয়চে ভেলের তরফ থেকে শক্তিপদ গনচৌধুরীর কাছে জানতে চাওয়া হয়, যে কেউ যদি নিজের বাড়িকে গ্রিন বিল্ডিং করে তুলতে চায় তাহলে কার কাছে পরামর্শ এবং সাহায্য চাওয়া যায়৷ শ্রী গনচৌধুরী জানালেন যে ২০ জনের মত স্থপতি এবং বাস্তুকারকে তাঁরা প্রশিক্ষণ দিয়েছেন যাঁরা গ্রিন বিল্ডিং তৈরির পরামর্শ দিতে পারবেন৷ সামান্য পারিশ্রমিকে এরা এই পরামর্শ যোগাবেন, নতুন বাড়ি তৈরির ক্ষেত্রে তো বটেই, এমনকী পুরনো বাড়ি-র শক্তি সঞ্চয় এবং সাশ্রয়ের পরামর্শও দেবেন ওরা৷
কাজেই দরকার কেবল আমার-আপনার পরিবেশ সচেতনতা৷ দূষণ নিয়ন্ত্রণের ভার রয়েছে আমাদের হাতেই৷
প্রতিবেদন: শীর্ষ বন্দ্যোপাধ্যায়
সম্পাদনা: আব্দুল্লাহ আল-ফারূক