1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

পশ্চিমবঙ্গে বাম-কংগ্রেস জোটের সম্ভাবনা নির্বাচনে কতটা

৭ মার্চ ২০২০

পশ্চিমবঙ্গের আসন্ন পুরসভা নির্বাচনে একজোট হয়ে লড়তে চলেছে বামফ্রন্ট ও কংগ্রেস৷ তাতে কি কিছুটা বদলাবে এই রাজ্যের জনসমর্থনের সমীকরণ?

https://p.dw.com/p/3Z1Kh
ফাইল ছবিছবি: picture-alliance/AP Photo/B. Das

গত লোকসভা নির্বাচনে পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতি কার্যত দুটি শিবিরে বিভক্ত হয়ে পড়ে৷ একদিকে রয়েছে ক্ষমতাসীন তৃণমূল কংগ্রেস, অন্যদিকে বিজেপি৷ এর ফলে একসময় রাজ্য শাসন করা বাম ও কংগ্রেস হয়ে পড়েছে প্রান্তিক শক্তি৷ প্রতিটি নির্বাচনে এই দুই শিবিরের শক্তিক্ষয় হচ্ছে, কমছে জনসমর্থন৷ আগামী গ্রীষ্মে পশ্চিমবঙ্গে যে পুর নির্বাচন হতে চলেছে, তাতে দুই পক্ষ হাত মেলানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে৷

বাম ও কংগ্রেসের মতাদর্শগত অবস্থান ভিন্ন মেরুতে হলেও তারা রাজনৈতিক কৌশল হিসেবে কাছাকাছি আসার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, এমনটাই মত পর্যবেক্ষকদের৷ প্রশ্ন উঠছে, তৃণমূল ও বিজেপির আগ্রাসনে ক্রমশ কোণঠাসা হতে থাকায় এই দুই শিবিরের এটা কি আত্মরক্ষার কৌশল? নইলে বাম ও দক্ষিণপন্থি দুই শক্তি হাত মেলালো কীভাবে৷

সিপিএম ও কংগ্রেস অবশ্য বলছে, তাদের সিদ্ধান্তে নয়, এই জোট হয়েছে মানুষের দাবিতে৷ সিপিএম বিধায়ক তন্ময় ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘শুভবুদ্ধিসম্পন্ন মানুষ হাত মিলিয়েছে৷ তারাই এই জোট চায়৷ সে কারণে তৃণমূল ও বিজেপির বিভেদের রাজনীতির বিরুদ্ধে এটা মানুষের জোট৷’’ 

তন্ময় ভট্টাচার্য

কংগ্রেস বিধায়ক মনোজ চক্রবর্তী একই সুরে বলেন, ‘‘মানুষ তৃণমূলের অপশাসন ও বিজেপির মেরুকরণ থেকে মুক্তি চাইছে৷ তাদের দাবি মেনেই দুই দল কাছাকাছি এসেছে৷’’

পদক্ষেপ দেখে মনে হচ্ছে, মতাদর্শগত অবস্থানকে আজকের পরিস্থিতিতে খুব বেশি গুরুত্ব দিচ্ছেন না বাম ও কংগ্রেস নেতারা৷ তন্ময় বলেন, ‘‘কংগ্রেস আর্থিক নীতির প্রশ্নে অন্য পথে চললেও দেশের সামনে সংবিধান ও গণতন্ত্র রক্ষাই এখন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ৷ কংগ্রেসের ইতিহাস সংবিধান রক্ষার ইতিহাস৷’’

এই জোটের সাফল্যের ব্যাপারে প্রত্যাশিতভাবেই আশাবাদী দুই পক্ষ৷ মনোজের বক্তব্য, ‘‘বামেদের সঙ্গে আমাদের বোঝাপড়া অশুভ শক্তিকে রুখতে৷ দেশের গণতন্ত্র ও সংবিধানকে বাঁচাতে৷ অন্য ইস্যুতে আলাদা দৃষ্টিভঙ্গি থাকতেই পারে৷ আমরা পারব তৃণমূলকে উৎখাত করতে৷’’

তৃণমূল আর বিজেপি বোঝাপড়া করে চলছে, একই অভিযোগ দুই পক্ষের৷ তারা একমত, পশ্চিমবঙ্গে মূল লড়াই তৃণমূলের বিরুদ্ধে৷ তাহলে কি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দলকে সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে একটি শক্তি বলে তারা মানছে না? কংগ্রেস বিধায়কের জবাব, ‘‘তৃণমূল দ্বৈত ভূমিকা নিয়েছে৷ মুখে প্রতিবাদ করছে, কিন্তু বিজেপির সঙ্গে বোঝাপড়া রেখে চলছে৷ এটাই ক্রমশ প্রকাশ্য আসছে৷'' তন্ময়ের মন্তব্য, ‘‘সারদা, নারদের দুর্নীতির হাত থেকে বাঁচতে হবে তৃণমূলকে৷ তাই কেন্দ্রকে খুশি রাখতেই হবে৷ সবচেয়ে বড় বিপদ, ধর্মীয় মেরুকরণ৷ হিন্দু আর মুসলমানের ভোটকে দুই শিবিরে ভাগ করে দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে৷ এটা রুখতেই হবে৷’’ 

বিমলশঙ্কর নন্দে

পুরসভা নির্বাচনে জনতা কাকে ভোট দেবে, তা মূলত নির্ভর করে তৃণমূল স্তরে কাজ করা জনপ্রতিনিধিদের উপর৷ এখানে রাজনৈতিক লড়াই কম গুরুত্ব পায়, সামনে থাকে নাগরিক পরিসেবা৷ পর্যবেক্ষক বিমলশঙ্কর নন্দের মতে, ‘‘স্থানীয় ভিত্তিতে জনপ্রিয়তার সাহায্যে বাম ও কংগ্রেসের অনেক প্রার্থী জয়ী হতে পারেন৷ এর সঙ্গে জোটের অঙ্ক বা মতাদর্শের রাজনীতির বিশেষ সম্পর্ক নেই৷'' আসল পরীক্ষা হবে আগামী বছরের বিধানসভা ভোটে৷ তাঁর বক্তব্য, ‘‘পশ্চিমবঙ্গে লড়াই এখন তৃণমূল ও বিজেপির মধ্যেই৷ তৃণমূলের আছে ৪৫-৪৬ শতাংশ ভোট, বিজেপির ৪৩-৪৪ শতাংশ৷ বাম-কংগ্রেসের ভোট ৭-৮ শতাংশের মতো৷ এই পরিস্থিতি বিধানসভায় বদলে যাওয়ার কোনো সম্ভাবনা আমি দেখছি না৷’’

পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতিতে এখনো তৃণমূলের প্রাধান্য প্রশ্নাতীত৷ সাংগঠনিকভাবেই অনেক এগিয়ে মমতার দল৷ ভোটের ফলে জোট কোনো প্রভাব ফেলবে? অধ্যাপক নন্দ বলেন, ‘‘এই জোট তৃতীয় হবে, তাই নয়৷ অনেক পিছিয়ে তৃতীয় স্থানে থাকবে৷ মোট প্রাপ্ত ভোটের হার ৫ শতাংশেও নেমে যেতে পারে৷ জোটের সমর্থন বাড়লে বিরোধী ভোটের কাটাকাটিতে সুবিধা হবে তৃণমূলের৷ সেটা বিজেপির পক্ষে চিন্তার কারণ৷’’

২০১৯ সালে মে মাসের ছবিঘরটি দেখুন... 

ডয়চে ভেলের কলকাতা প্রতিনিধি পায়েল সামন্ত৷
পায়েল সামন্ত ডয়চে ভেলের কলকাতা প্রতিনিধি৷
স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

আরো সংবাদ দেখান