পাকিস্তানি প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগ
১৬ জানুয়ারি ২০১২আদালত অবমাননার অভিযোগ
তালেবানের সন্ত্রাস ও অর্থনৈতিক সংকটের সাথে সেনা অভ্যুত্থানের আশঙ্কার মধ্যে দিন পার করছে পাকিস্তানের বর্তমান সরকার৷ এর মধ্যেই সোমবার আদালত অবমাননার অভিযোগ উঠেছে স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী ইউসুফ রাজা গিলানির বিরুদ্ধে৷ আর এই অভিযোগের বিষয়ে নিজের অবস্থান তুলে ধরতে গিলানিকে বৃহস্পতিবার আদালতে হাজির হওয়ার নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট৷ আইনজ্ঞরা মনে করছেন, গিলানি যদি আদালত অবমাননার দায়ে দোষী সাব্যস্ত হন তাহলে ছয় মাস পর্যন্ত তাঁর কারাদণ্ড হতে পারে৷ এছাড়া তিনি প্রধানমন্ত্রী হিসেবে বহাল থাকার যোগ্যতা হারাবেন৷
আদালত অবমাননার অভিযোগের কারণ
ঘটনার শুরু বর্তমান প্রেসিডেন্ট আসিফ আলি জারদারির সেই নব্বইয়ের দশকের দুর্নীতি ও হত্যা মামলা থেকে৷ ঐ মামলা আমলে নিয়ে জারদারির বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ তদন্ত করার নির্দেশ দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট৷ কিন্তু প্রধানমন্ত্রী গিলানি সেই নির্দেশ অনুসারে প্রেসিডেন্টের দুর্নীতি তদন্তে কোন পদক্ষেপ নেননি৷ তাই এই সংকটের মুহূর্তে নতুন করে গিলানির সরকারের বিরুদ্ধে যোগ হলো এবার বিচারিক লড়াই৷ সুপ্রিম কোর্টের সাত সদস্যের বিচারক পরিষদ নির্দেশনামায় বলেন, ‘‘প্রথম দফায় কারণ দর্শাও নোটিস জারি করা ছাড়া আমাদের সামনে আর কোন বিকল্প ব্যবস্থা নেই৷ প্রধানমন্ত্রীকে আগামী ১৯শে জানুয়ারি সশরীরে আদালতে হাজির হতে হবে৷''
প্রেসিডেন্টকে বাঁচাতে গিয়ে ফেঁসে যাচ্ছেন গিলানি
দেশটির ক্ষমতায় থাকা পাকিস্তান জনতা দল – পিপিপি নেতৃত্বাধীন জোটের শরিক দলের এক সাংসদের মন্তব্য, ‘‘ঘটনা দেখে মনে হচ্ছে প্রেসিডেন্ট এবং সরকারকে বাঁচাতে যেন নিজেকেই ‘রাজনৈতিক বলি' হিসেবে উৎসর্গ করতে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী৷'' অবশ্য, সাবেক আইন মন্ত্রী খালিদ আনওয়ার বলছেন, বৃহস্পতিবার হয়তো আদালতে হাজির হবেন গিলানি৷ তবে অ্যাটর্নি জেনারেল এরপর যেন প্রধানমন্ত্রীকে আর সশরীরে আদালতে হাজির হতে না হয়, সেজন্য আবেদন জানাবেন৷ আর সেক্ষেত্রে আদালত তা অনুমোদন করবেন বলে আশা করা যায়৷
যাহোক, আদালতের নির্দেশের পাশাপাশি অপরাপর সংকটের হাত থেকে রক্ষা পেতে সংসদে আস্থা ভোটের বিষয়টি নিয়ে এগুচ্ছে ক্ষমতাসীন জোট৷ শরিক দলের এক সদস্যের তোলা আস্থা ভোটের প্রস্তাব নিয়ে সোমবার দেশটির সংসদে আলোচনা হয়েছে৷ আশা করা হচ্ছে শীঘ্রই আস্থা ভোটের মাধ্যমে গণতান্ত্রিক সরকারের গ্রহণযোগ্যতা প্রমাণের চেষ্টা করবে জারদারি-গিলানি সরকার৷
প্রতিবেদন: হোসাইন আব্দুল হাই
সম্পাদনা: সঞ্জীব বর্মন