পাকিস্তানি সেনাদের ওপর ন্যাটোর বিমান হামলা
২৬ নভেম্বর ২০১১ন্যাটোর জঙ্গি হেলিকপ্টারগুলোর হামলায় পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর কমপক্ষে ২৩ জন সেনা নিহত হয়েছে৷ তবে একাধিক বার্তা সংস্থা নিহতের সংখ্যা আরও বেশি বলে জানিয়েছে৷ জানা গেছে, পাকিস্তানের উত্তর পশ্চিমাঞ্চলের একটি সামরিক চেকপোস্ট লক্ষ্য করে ন্যাটোর জঙ্গি হেলিকপ্টারগুলো ব্যাপক হামলা চালায়৷ সীমান্তবর্তী মোহমান্দ জেলার বাইজাইতে এই চেকপোস্টটি অবস্থিত৷ ওই জায়গাটিতে আল কায়েদা সন্ত্রাসীদের অভয়ারণ্য রয়েছে বলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনীর পক্ষ থেকে অনেক আগেই জানানো হয়েছিল৷ হামলার বিস্তারিত অবশ্য কোন পক্ষ থেকেই এখন পর্যন্ত জানানো হয়নি৷
এই ঘটনার পরপরই পাকিস্তান ন্যাটোর রসদ সরবরাহের রাস্তা বন্ধ করে দিয়েছে৷ এই পথ ধরে ন্যাটো নেতৃত্বাধীন আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা সহযোগিতা বাহিনী আইসাফের রসদ পাঠানো হয়৷ পাকিস্তানি প্রধানমন্ত্রী ইউসুফ রাজা গিলানি এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় পর্যায়ে এই ঘটনা ন্যাটো এবং যুক্তরাষ্ট্রকে জানানো হয়েছে৷ আফগানিস্তানে মার্কিন হামলা শুরুর পর গত এক দশকে এটাই সবচেয়ে ভয়াবহ হামলা পাকিস্তানি বাহিনীর ওপর৷ গত বেশ কিছুদিন ধরেই যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে পাকিস্তানের সম্পর্কে টানাপোড়েন চলছে৷
এদিকে এই ঘটনা নিয়ে তদন্তের কথা জানিয়েছে ন্যাটো৷ আফগানিস্তানে নিযুক্ত ন্যাটোর মার্কিন কমান্ডার জেনারেল জন অ্যালেন এই ঘটনায় হতাহতদের স্বজনদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানিয়েছেন৷ তিনি এই ঘটনার কারণ খুঁজে বের করার জন্য তদন্তের আশ্বাস দিয়েছেন৷ শনিবার আইসাফের পক্ষ থেকে দেওয়া এক বিবৃতিতে বলে হয়েছে, পাকিস্তানের সঙ্গে নিরাপত্তা সম্পর্ক ধরে রাখতে চায় আইসাফ৷
পাকিস্তানি সেনাদের ওপর ন্যাটোর এই হামলা সেদেশে আবারও মার্কিন বিরোধী মনোভাব চাঙ্গা করে তুললো৷ দেশটির তথ্য মন্ত্রী ফিরদাউস আশিক বলেন, ন্যাটো আমাদের সার্বভৌমত্ব লঙ্ঘন করেছে৷ পাকিস্তানি সমাজ এটা সহ্য করতে পারে না৷ উল্লেখ্য, গত বছরের সেপ্টেম্বর মাসেও ন্যাটোর হামলায় তিন পাকিস্তানি সেনা নিহত হয়৷ সেই সময় পাকিস্তান ন্যাটোর রসদ সরবরাহের পথ বন্ধ করে দেয়৷ ওই ঘটনার জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আনুষ্ঠানিক ক্ষমা চায় পাকিস্তানের কাছে৷ এরপর এগারো দিন পর সেই পথ খুলে দেয় পাকিস্তানি কর্তৃপক্ষ৷
প্রতিবেদন: রিয়াজুল ইসলাম
সম্পাদনা: সুপ্রিয় বন্দ্যোপাধ্যায়